মো. নাহিদুল হক রাব্বি
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:১৭ পিএম
ছবি : আবির হাসান
শীতকাল এলেই স্কুলজীবনের শীতের সময়ের কথা বেশি মনে পড়ে! ডিসেম্বরে ফাইনাল পরীক্ষার পর একটা বড় ছুটি। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার চিন্তা নেই। বিকালবেলা কোচিং নেই। জীবনের এই সময়ে আমি সবচেয়ে ভালো কিছু মুহূর্ত পার করছিলাম।
শৈশবে শীতকালের সবচেয়ে ভালো দিকটা ছিল সন্ধ্যার পরই ব্যাডমিন্টন খেলা! রাস্তায় সাদা রং দিয়ে কোর্ট কাটা। লাইটিং করা। এরপর ৮টা-১০টা পর্যন্ত চলত খেলা। এরপর বাসায় এসে গরম গরম ভাত খেয়ে কম্বলের নিচে চলে যাওয়া!
রাতগুলো ছিল গল্পের বইয়ের পাতায়। লেপের নিচে মুড়ি দিয়ে কত যে গল্পের বই শেষ করেছিলাম তার হিসাব নেই! রবিনসন ক্রুসো বইটা ৫-৬ বার শেষ করেছিলাম। কাকাবাবু, মিসির আলি এমন কত বই পড়তে পড়তে রাত পার হয়ে যেত। সেবার ক্লাস এইটের পরীক্ষার পর ৩০টির মতো গল্পের বই শেষ করেছিলাম। লাইট জ্বালিয়ে পড়লে আব্বা বকা দিতেন তাই লেপের নিচে মোবাইলের টর্চের আলো দিয়ে পড়তাম!
গভীর রাতে শহরটা অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি নিরিবিলি থাকত। চারদিকে সুনসান নীরবতা। হুট করেই নাম না জানা একটা পাখি ডাক দিয়ে উঠত। তখন মনে হতো অন্ততকাল এই পরিবেশে জীবন পার করে দেওয়া যাবে!
যেহেতু শহরে বড় হয়েছিলাম, তাই শীতের সৌন্দর্যটা আমার কাছে একটু অন্যরকম থাকত। নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করার সেরা সময় ছিল শীতকাল।
লাইফে তখনও সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না! পরীক্ষার চাপ ছিল না। সেই সন্ধ্যা, সেই রাতগুলায় কোনো চিন্তা ছিল না। নিজের মতো থাকত সেই সময়টা।
এখন সেই সময়ের বন্ধুগুলোও হারিয়ে গেছে অনেকে। এখন আর সেই ছুটিও আসে না। গল্পের বইও পড়া হয় না। জীবনের সেই শীতকালটা চুরি হয়ে গেছে!