× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আলো-আঁধারের তিস্তা

নভেল চৌধুরী

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:২৯ পিএম

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৮ পিএম

আলো-আঁধারের তিস্তা

কবি সৈয়দ শামসুল হক তার আত্মপরিচয় কবিতায় দেশে তেরোশো নদীর কথা বলেছেন। দেশে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা বড় নদী। এরপরই আলোচিত নদীর নাম তিস্তা। ভারতের সিকিম রাজ্যে জন্ম নেওয়া তিস্তা নদী নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর হয়ে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে মিশেছে। এ নদীকে ঘিরে উত্তরের লাখ লাখ মানুষের জীবনরেখা দীর্ঘ হয়েছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে এ নদী। 

শরতের পর থেকে তিস্তা সাজে ভিন্নরূপে। নদীর বুকে চর পড়তে শুরু করে। শরতের কাশফুলে ছেয়ে যায় নদীর পাড়গুলো। প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনায় মুখর থাকে তিস্তার পাড়। উত্তরের দোতরা-একতারা কিংবা বাঁশির চিরচেনা সুর শোনা যায় না তিস্তার পাড়ে। শীত পড়তেই তিস্তা নদীর বুকে ধু ধু বালুচর পড়ে। শীত মাড়িয়ে চরবাসীর ঘাম-শ্রমে সাদা বালুর চরকে সবুজ হয়ে ওঠে। গঙ্গাচড়ার শেখ হাসিনা সেতুতে দাঁড়ালে শীতকালীন পুরো তিস্তা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। দৃষ্টিসীমায় সবুজ আর সবুজ- যেন সবুজের গালিচায় ভরা তিস্তা নদী। উজানের ঢল না থাকায় নদীর একপার্শ্ব দিয়ে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ বইতে থাকে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোট নদী কবিতার মতো হয়ে যায় আমাদের তিস্তা। এখানে শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুকে হাঁটু জল থাকে। হেঁটে পার হয় ঘোড়াগাড়ি, গরুর পাল, চরবাসী। তিস্তার হাঁটু কিংবা এক বুক পানিতে বড়শি দিয়ে কিংবা জাল টেনে মাছ ধরার দৃশ্য যে কারও মন কাড়ে। নদীর বুকে অস্তমিত নজরকাড়া সূর্য দেখা যায়- যেন নদী জীবন ও জীবিকার পাশাপাশি তুলনারহিত সৌন্দর্য বিলায়। 

বর্ষায় তিস্তা যেন আরেক রূপ পায়। উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তায় হু হু করে ঢুকে পড়ে পানি। পলি জমে ভরাট হওয়া তিস্তার বুক সবটুকু পানি নিতে পারে না। দ্রুত পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। চরবাসীর কাছে প্রতি বছরই বন্যা ও ভাঙনের দুর্যোগ নিয়ে আসে তিস্তা। ফসলি জমি, গাছপালা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ স্বপ্ন হারায় চরবাসী। ভাওয়াইয়া গানেও উঠে আসে তিস্তার আগ্রাসী রূপের বর্ণনা। সর্বস্বহারা গায়কের কণ্ঠে সুর তোলেÑ ও পাগলা নদী রে/ ওরে তিস্তা নদী/ চোখের জল মোর সার করিলু, ভাঙ্গিয়া ঘরবাড়ি। রাক্ষুসী তিস্তায় সর্বস্ব হারিয়ে আবার শুষ্ক মৌসুমে নতুন করে ঘর বাঁধে গ্রামবাসী। তিস্তার প্রতি ভালোবাসার মানুষদের কণ্ঠে এখন একটাই সুর- হামরা না চাই দালানকোঠা/ হামরা তোর না চাই রংমহল/ ফিরাইয়া দেন হামাক তোরা/ তিস্তা নদীর জল। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা