শুভঙ্কর মেঘ
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫২ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:০৪ পিএম
মেহু,
তখন আমি ঢুলুঢুলু চোখে আকাশের দিকে একদৃষ্টিতে তাকানোর পর কল্পনায় দেখেছিলাম এক দুই তিন, একঝাঁক তারা। বহুদিন হলো আমার লেখা চিঠি তোমায় পাঠানো হয় না। হয়তো সেই চিঠি তুমি পড়বেও না। ভীষণ ব্যস্ত কি না!
তোমার শহরের পরিচিত গলি, সেখানে নেই কেউ দাঁড়িয়ে তোমার প্রতীক্ষায়। দেখেছো কি কোনো দিন? যেখানে তুমি চাইলেই হয়ে যেত দেখা একদিন। তবে আমাদের আর নিভৃতে দেখা হবে না কোনো দিন। একটা ইটের মতো জীবন নিয়ে বেঁচে আছি। জীবন্ত গুগল ম্যাপ হয়ে শহরে প্রায়ই ঘুরে বেড়াই ইতস্তত বিক্ষিপ্ত মনে। এই ছোট্ট চিঠিতে তোমায় যা যা বলব ভেবেছিলাম, লিখতে বসে তার কিছুই আমার মনে নেই। আর বললেই বা কী আসে যায়! তুমি তা পড়বেও না। যা বলব ভেবেছি, কে শুনবে, কার এত দায়? জানো, এই শহর অনেক নির্দয় আমার প্রতি। সেবার বৃন্দাবন বাজারে তোমায় প্রথম ও শেষবার স্পর্শ করা। সেই পরিপূর্ণতার পর তুমি বরাবরই আমাকে দূরে ঠেলে সরিয়েছো। এক বহিরাগতের মতো আমাকে বারবার এড়িয়েছো। কারণ তখনও তোমার এক প্রেমিক রয়েছে, যাকে তুমি ভালোবেসে কথা দিয়েছিলে। সেই কথার মূল্য কতটা বিশাল, যেখানে অনুভূতি উপেক্ষার শক্তি প্রবল থাকে। হয়তো তুমি সেই প্রেমিককেই শুধু ভালোবাসো, যা আমার কাছে স্বীকার কর না। অথচ তোমায় নিয়ে আমার কত একপাক্ষিক পরিকল্পনা। সেগুলো পরিপূর্ণ করার মধ্যেই আমার সুখ।
জমানো শব্দের সুতোয় ওড়াব ঘুড়ি আকাশে। যখন বৃষ্টি থামবে মেঘ নেবে বিদায়, আসবে আদি অনিত্য সূর্য তোমার জীবনে এগারো মাস জুড়ে। আর আমি! যার অস্তিত্ব নেই, থাকবার কথাও নয়। সারা রাত জেগে তোমার অপেক্ষা করলে কী আর হবে? রাতজাগা মানুষের হিসাব কেউ রাখে না। তোমার ঘুম ভাঙাব না ভেবে মরেছি, আবার দেখা হলে চিনে নিও! ভালো তো বাসি তোমাকে সেই কবে থেকেই। সেই একপাক্ষিক ভালোবাসা বুকে নিয়ে চিঠি লেখা, যা তুমি কোনো দিন পড়বে না। আর কটা দিন বাকি এ জীবনে। তুমি আমায় বিদায় জানাবে। আমি সেই একই জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকব।
তোমার জীবনে এখন যে প্রেম, তার কাঁধে ভর দিয়ে সুখী থেকো। আমি দূর থেকে সময়ে অসময়ে চিঠি লিখব। মেহু, তোমার নামের সন্ধান করে।