রাতুল মুন্সী
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:০৫ পিএম
অলকানন্দা,
আমার বিমূর্ত মনে তোমাকে পাওয়ার মাতাল বর্ণমালার গাঁথুনি দিয়ে তোমার হ্দয়ে কতটুকু জায়গা করে নিতে পারব, তা আমার অজানা। তোমাকে দেখার অসুখ ভর করেছে আমায়। আপন করে পাওয়ার নেশায় ব্যাকুল দেহের শিরা-উপশিরা।
তোমার শরীরের ঘ্রাণ বয়ে বেড়ানো বসন্তের বাতাসে আমি কাতর। যতবার দম ছেড়ে দম নিই, তোমায় আলিঙ্গনের নেশা ভর করে। তোমার অনুপস্থিতিতে হ্দয়ে কম্পন বেড়ে যায়। এদিক সেদিক বয়ে বেড়ানো বেহায়া বাতাসে তোমার ঘ্রাণ খুঁজি, গায়ে মাখব বলে। ক্লান্ত হই বারবার। আবারও খুঁজি একপলক দেখব বলে। তোমার নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে আমি মোটেও বিচলিত নই। তোমায় পাব বলে যে অদম্য ইচ্ছাশক্তি লালন করছি, তা আমার ঈশ্বরও জানেন। বোবা ডাকবাক্সটাও জানে। শুধু তোমারি তা অজানা।
একদিন দেখবে, তোমার শহরের সব ডাকপিয়ন তোমার চলার পথ অবরোধ করে বসেছে, ডাকবাক্সে জমে থাকা চিরকুটের উত্তর পাওয়ার আশায়। তোমার অজান্তে কত চিরকুট জমা পড়ে আছে ডাকবাক্সে, তা জানবে আসছে নববর্ষের হালখাতায়। তোমাকে পেয়ে সব যাতনার যোগ-বিয়োগ করে আর একটা নতুন খাতা খুলব। সেখানে শুধু তুমি আর তুমি। আমাদের গল্প। তোমার ঈশ্বরের মতো তোমার নিষ্ঠুর হ্দয়ের কপাট আমি খুলবই।
তোমার শহরে থাকা বসন্তের কোকিলদের নিয়ে ভালোবাসি বলতে বলতে আমার যদি মৃত্যু হয়, তাহলে ভুল করে হলেও দেখতে এসো নিথর দেহ। লাশের খবর জানতে আসা শহরের রাতজাগা কাকদের আর্তনাদে তোমার ঘুম ভাঙুক। শহরের ক্ষুধার্ত যত চিল-শুকুন সব হুমড়ি খেয়ে পড়ুক লাশের ওপর। তোমার নিষ্ঠুরতার গল্প ছড়িয়ে পড়ুক শহরের আকাশে বাতাসে। তবু তোমাকে না পেয়ে আমার অতৃপ্ত আত্মা বলবে, তোমায় ভালোবাসি সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে।
তুমি কেমন আছো খুব জানতে ইচ্ছে করে। আমায় কি ভুলে গেছো? চুলে যত্ন করে বেণি করার সময় আয়নায় কি আমায় খোঁজো? ভুল করে হলেও কালো টিপটা কপালে দিও! আর সেই টিপে আমার অতৃপ্ত আত্মার পুনর্বাসন চাই।
পরিশেষে তোমাকে চাই, তোমার অবাধ্য চুলের বিনুনিটা চাই, পরিচিত শরীরের ঘ্রাণটা চাই। বসন্তের বাতাসের সঙ্গে পাখিদের গান শুনতে শুনতে ধুলোমাখা রাস্তা ভুল করে চলে এসো একদিন আমার আঙিনায়। তোমায় অপেক্ষায়, পথের পানে চেয়ে আছি।
ভালোবাসি প্রিয়।