× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ

রাতুল মুন্সী

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫৪ পিএম

আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নামে একটা দেশের জন্ম হয়েছিল ১৯৭১ সালে অগ্নিঝরা মার্চে। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, মাঝখানে প্রায় দুই যুগ বাংলাদেশ বা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিটা মানুষের দিন কেটেছে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে। এই সংগ্রাম কখনও ভাষার জন্য, কখনও সংস্কৃতির জন্য, কখনও আবার নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য।

আমরা বাঙালি, আমাদের ভাষা বাংলা, এই চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে। পরবর্তী সময়ে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানসহ ১৯৭০ সালে সর্বোচ্চ আসন পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ। এত কিছুর পরও যখন আমরা ক্ষমতায় বসতে পারলাম না, তখন আর বুঝতে বাকি রইল না একটা যুদ্ধ বাধবে যেকোনো সময়। 

নিজের দেশকে শোষকদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। তাদের নেশা রক্তের, ক্ষমতার। এই নেশাকে প্রতিহত করতে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। হয়তো অনেক মায়ের বুক খালি হবে। অনেক রক্ত দিতে হবে। রক্ত ছাড়া দীর্ঘদিন শোষণ করে আসা নরপিশাচদের প্রতিহত করা সম্ভব নয়। একটু একটু করে শক্তি সঞ্চয় করা শুরু হলো। অফিস আদালতে কানাকানি হতো। পশ্চিম পাকিস্তানে সামরিক-বেসামরিক অফিসে চাকরি করা অনেকেই দেশে ফিরে আসতে লাগল।

১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গণ-আন্দোলনের ফলে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন আইয়ুব খান। দায়িত্ব গ্রহণ করলেন সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া খান। ক্ষমতায় এসেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন। চলছে ক্ষমতার লড়াই। এর মধ্যে নির্বাচনের এক মাস আগে ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে সাইক্লোন ব্যাপকভাবে আঘাত হানে। হতাহতের তালিকা অনেক লম্বা হয়। সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার, জরুরি ত্রাণসেবা দিতে দায়িত্বে থাকা পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারের ভূমিকা ছিল শূণ্যের কোটায়। শুধু তা-ই নয়, ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর থেকেই চাকরিসহ নাগরিকের নানা ধরনের অধিকার থেকে ঠকিয়ে আসছিল পশ্চিম পাকিস্তানে ক্ষমতায় থাকা রাঘব বোয়ালরা। 

সবার ধারণা ছিল দীর্ঘদিনের রাগ-ক্ষোভের অবসান হলো ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়লাভ করার মধ্য দিয়ে। জয়লাভ হলো ঠিকই, তবে শুরু হলো নানা ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা বুঝিয়ে না দিয়ে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করলেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া। পূর্ব বাংলায় শুরু হয়ে গেল অসহযোগ আন্দোলন। তখন কেউ আর পূর্ব পাকিস্তান বলছে না, সবার মুখে মুখে বাংলাদেশ। আমার দেশ। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত এক ছাত্র সমাবেশে তৎকালীন ডাকসুর সহসভাপতি আ স ম আবদুর রব বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন। অসহযোগ আন্দোলন চলছে। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে উন্মাদনা। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত প্রায় ১০ লাখ মানুষের সামনে বঙ্গবন্ধু জানিয়ে দিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই ভাষণ বাংলার আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল সাত কোটি মানুষের ঘরে ঘরে। যার যা কিছু আছে তা-ই নিয়ে সবাই প্রস্তুত হতে শুরু করল। 

স্লোগান ওঠে জয় বাংলা। সাহস, শক্তি আরো বেড়ে যায়। আমি বাঙালি, আমার দেশ বাংলাদেশ। তবুও পাকিস্তানি বাহিনীর ষড়যন্ত্র থেমে থাকে না। চলেছে মামলা, গ্রেপ্তারসহ নানা রকম হয়রানি। ঢাকায় অবস্থান করছিলেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। তিনি যখন দেখলেন কোনোভাবেই বাঙালিদের দাবায়া রাখা যাচ্ছে না, তখন গোপন বৈঠক করে বঙ্গবন্ধুসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের অনুমতি দিয়ে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করলেন। ২৫ মার্চ রাত যখন গভীর, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তখন ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় একটি দেশের মানচিত্র। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা