রম্য
জোবায়ের রাজু
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৪৩ পিএম
প্রতিবারের মতো এবারও আমার বন্ধু মানিক ঈদে অসাধারণ একটি পাঞ্জাবি কিনেছে দেখে আমার চোখ ছানাবড়া। সেই সঙ্গে আমি অবাকও এই কারণে যে, মানিকের পারিবারিক অবস্থা যেখানে উন্নত না, সেখানে অত দামি পাঞ্জাবি কেনার সামর্থ্য সে কীভাবে পায়! চার বছর ধরে সে চোখ ধাঁধানো পাঞ্জাবি কিনে আসছে।
এসব দামি দামি পাঞ্জাবি আমরা সাধারণত বিয়েতে বরের গায়ে দেখি, সেখানে মানিক ঈদে সে ধরনের পাঞ্জাবি কেনার বাহাদুরি দেখাচ্ছে। চার বছর ধরে সে একই নিয়ম পালন করে আসছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, প্রতিবার সে যে এত দামি পাঞ্জাবি কিনে তা ঈদের দিন থেকে শুরু করে টানা দু-চার দিন তাকে পরতে দেখা যায়। পরে নাকি সে এগুলোকে আলমারিতে তুলে রাখে। পরের বছরও একই অবস্থা। একই নিয়মে দামি পাঞ্জাবি কেনা, তারপর ঈদ শেষে আলমারিতে তুলে রাখা। তারপর তাকে সে পাঞ্জাবি পরতে দেখা যায় না।
এবারের চাঁদরাতের সন্ধ্যায় মানিককে দেখলাম বাজারে বিয়ের মালামাল পাওয়া যায় এমন একটি দোকান থেকে বের হতে। হাতে বিশাল এক শপিং ব্যাগ। জিজ্ঞেস করলাম, দোস্ত, এ দোকানে কেন? কার বিয়ে? হাতে কী দেখি? খেয়াল করলাম মানিক আমাকে শপিং ব্যাগটি দেখাতে চাচ্ছে না এবং আড়াল করার বৃথা চেষ্টাও চালাচ্ছে। ঘটনা কী?
ছোঁ মেরে শপিং ব্যাগটি আনতেই দেখি সেখানে ভাঁজ করা একটি বিয়ের শেরওয়ানি। আমি বললাম, কিরে, শেরওয়ানি কেন? বিয়ে কার? কিছুক্ষণ নীরব ভূমিকা পালন করে মানিক বলল, ইয়ে মানে, বিয়ে না দোস্ত। ঈদে পরার জন্য প্রতিবার এখান থেকে বিয়ের শেরওয়ানি তিন-চার দিনের জন্য ভাড়া করে নিয়ে যাই।
মানিকের কথা শুনে হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম। সে প্রতিবার ভাড়া করা শেরওয়ানিকে ঈদের পাঞ্জাবি বলে চালিয়ে দেয়!