মো. কামরুল ইসলাম
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫১ পিএম
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম
প্রায় ৭০০ বছরের পুরোনো এক গম্বুজবিশিষ্ট গোয়ালদী শাহি মসজিদ। প্রবা ফটো
প্রায় ৭০০ বছরের পুরোনো এক গম্বুজবিশিষ্ট গোয়ালদী শাহি মসজিদের অবস্থান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায়। ঢাকা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরত্বে বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁ জাদুঘর) উত্তর পশ্চিম দিকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এ দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি। গোয়ালদী শাহি মসজিদে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাঁটানো (বাংলা ও ইংরেজিতে লিখিত) বোর্ড থেকে জানা যায়, আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে মোল্লা হিজবার আকবর ১৫ শাবান ৯২৫ হিজরি ইংরেজি ১২ আগস্ট ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে সোনারগাঁয়ের গোয়ালদী গ্রামে এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
গোয়ালদী গ্রামে মসজিদটি নির্মিত বলে এর নাম দেওয়া হয় ‘গোয়ালদী হোসেন শাহী মসজিদ’। সোনারগাঁওয়ে যে সব মুসলিম স্থাপত্য রয়েছে, তার মধ্যে প্রাচীন আরবীয় শিল্পরীতিতে নির্মিত এই মসজিদটি সবচেয়ে আকর্ষণীয়। নির্মাণের পর দীর্ঘদিন এটি ইবাদতের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এক সময় পরিত্যক্ত হয়ে যায়। কয়েকশ বছর পরিত্যক্ত থাকার পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ১৯৭৫ সালে ধ্বংসস্তূপ থেকে সংস্কারের মাধ্যমে পুরোনো আদলে বর্তমান মসজিদটি নির্মাণ করে এর নাম দেন গোয়ালদী শাহি মসজিদ।
মসজিদ সম্পর্কে জেমস ওয়াইজ এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে এবং স্যার কালিংহাম ১৮৭৯ সালে সার্ভে অব ইন্ডিয়া রিপোর্টের বর্ণনা অনুযায়ী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটি নতুনভাবে নির্মাণ করে। এখন মসজিদটির প্রকৃত রূপ অনেকটাই বদলে গেছে। মসজিদের গায়ে যেসব মূল্যবান পাথরের ফলক ছিল সেগুলো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্তির আগেই চুরি হয়ে গেছে। মসজিদটি সর্বশেষ ১৯৭৫ সালে সংস্কার হলেও এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ৪৭ বছর, কিন্তু আর সংস্কার না হওয়ায় মসজিদের একটি মিনার মূল অংশ থেকে হেলে পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা মসজিদটি যেকোনো সময় ধসে পড়বে। মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন এ মসজিদের বাইরে ও ভেতরের দেয়ালে ফুল লতাপাতার অলংকরণ খচিত পোড়ামাটির ফলকগুলোও খসে পড়ছে। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে ৭০৩ বছরের পুরোনো এ প্রত্নতাত্ত্বিক মসজিদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।