ইসলামি চিন্তা
শাহীন হাসনাত
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:১০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
হজরত আলী (যাইনুল
আবিদিন) ইবনে হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইসলামের
অন্যতম সৌন্দর্য হলোÑ কোনো ব্যক্তির অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।’Ñ জামে তিরমিজি
: ২৩১৮
অর্থাৎ যে কাজে
আখেরাতে অথবা দুনিয়ার কোনো বৈধ ফায়দা রয়েছে তা করবে। কিন্তু যে কথা-কাজে দুনিয়া-আখেরাতের
কোনো ফায়দা নেই তা করবে না। আর যে কথা-কাজে একদম কোনো ফায়দা নেই, উপরন্তু ক্ষতি রয়েছে
তা অবশ্যই পরিহার করবে, যাতে দুনিয়া-আখেরাতের কোনো লোকসান না হয়।
একজন মুমিন-মুসলমানকে
সব সময় মনে রাখতে হবে, সব ধরনের গোনাহে দুনিয়া-আখেরাতের ক্ষতি রয়েছে। গোনাহ দ্বারা
মানুষের মনের প্রশান্তি উড়ে যায়। মানুষ অস্বস্তি ও অস্থিরতার মাঝে থাকে। আর আখেরাতের
কবর ও দোজখের শাস্তি তো রয়েছেই।
এ কারণে ইসলামি
চিন্তাবিদরা বলেছেন, অনর্থক কথা-কাজ থেকে বাঁচা অতি জরুরি। কারণ, আমাদের জীবন অত্যন্ত
দামি। তাই নবী করিম (সা.) আমাদের জন্য এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করেছেন। আমরা যদি
সামান্য সময়ও চিন্তা করি, তাহলে বুঝে আসবে যে, জীবনের মুহূর্তগুলো কত মূল্যবান। এর
সঠিক মূল্য বুঝে আসবে আখেরাতে, যখন আমাদের ইচ্ছার অধীনে কিছু থাকবে না; চাইলেও একটি
নেকি অর্জন করা সম্ভব হবে না। দুই রাকাত নামাজের কী মূল্যÑ তা সেদিন বুঝে আসবে। একটি
সিজদার প্রতিদান, একবার সুবহানাল্লাহ বলার সওয়াব মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ
হবে।
নবী করিম (সা.)
সাহাবিদের তা বুঝিয়েছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.)
একদিন সদ্যদাফনকৃত একটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন সাহাবিদের লক্ষ করে বললেন, দুই
রাকাত নামাজ, তোমরা যেটাকে সামান্য মনে করো, এই ব্যক্তির কাছে দুই রাকাত নামাজ তার
আমলনামাকে সমৃদ্ধ করবেÑ যা তার কাছে সারা দুনিয়া থেকে উত্তম। Ñমাজমাউয যাওয়ায়েদ : ৩৫০৬
অর্থাৎ তোমরা
কখনও তাড়াতাড়ি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নাও আর এটাকে সামান্য মনে করো। অথচ তা সামান্য নয়,
এই মৃত ব্যক্তিÑ যে এই কবরের মধ্যে রয়েছে, সে আফসোস করছে এবং আশা করছে, হায়! আমার জীবনের
আরও কিছু সময় যদি মিলত, তাহলে আমিও দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিতাম আর তা আমার আমলনামাকে
সমৃদ্ধ করত। তার কাছে দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও
উত্তম।
অথচ আমরা সময়
নষ্ট করার অজস্র পথ আবিষ্কার করেছি এবং তা আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে। গোনাহের
কথা না হয় বাদই দিলাম। এতে তো দুনিয়া-আখেরাতের ক্ষতি রয়েছে। সর্বদা তা থেকে বিরত থাকা
জরুরি।