ইসলামি স্থাপত্য
তারিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪ ০২:৪৫ এএম
পাবনার সুপ্রাচীন
ঐতিহ্যবাহী কাচারীপাড়া জামে মসজিদ। শহরের প্রাণকেন্দ্র এবং প্রশাসনিক এলাকায় মসজিদটির
অবস্থান হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে। এ মসজিদের প্রতিষ্ঠাকাল ১৮৮৯ সাল। কোর্ট
ও প্রশাসনিক এলাকায় মসজিদটি স্থাপিত হওয়ায় লোকমুখে মসজিদের নাম ছড়িয়ে পড়ে ‘কাচারীপাড়া
জামে মসজিদ’ হিসেবে। মসজিদটি নির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তাদের মাঝে হারুন চাপরাশির নাম
উল্লেখযোগ্য। কথিত রয়েছে, মসজিদের জন্য জমি দান করেছিলেন সৌরভ প্রামাণিক নামে স্থানীয়
এক ব্যক্তি। আবার এমনও বলা হয়, মসজিদ নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন আজিম চৌধুরী নামে একজন
ধনাঢ্য ব্যক্তি। মসজিদের গায়ে বসানো ফারসি ভাষায় লিখিত ফলক থেকে জানা যায়, জমিদার
আজিম চৌধুরীর আর্থিক সহায়তায় শেখ হারুন চাপরাশি ১৮৮৯ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন।
তবে মসজিদ নির্মাণে স্থানীয়দের সঙ্গে তৎকালীন সরকারি কর্মচারীরাও আর্থিক সহায়তা করেছিলেন
বলে জানা যায়।
পাবনা জেলা সদরের
কোর্ট ও প্রশাসনিক এলাকায় অবস্থিত মসজিদটি নির্মাণের সময় অনুসরন করা হয়েছে ইন্দো-ইসলামি
রেনেসাঁর স্থাপত্যশৈলী। মসজিদটিতে রয়েছে কয়েকটি নান্দনিক সুউচ্চ গম্বুজ ও মিনার; যা
দর্শনার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ করে। মসজিদটির ২৬টি ছোটবড় গম্বুজ মধ্যযুগের মুসলিম শিল্পধারার
প্রকাশ। এ ছাড়া রয়েছে ৭০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি মিনার। মসজিদের খিলান ও সুউচ্চ মিনার
বাড়িয়েছে এর নান্দনিকতা। আগে মসজিদটি ছিল তিন কাতার বিশিষ্ট। বর্তমানে এর পরিসর অনেক
বেড়েছে। এখন এখানে একসঙ্গে দেড় হাজার মুসল্লির অধিক নামাজ আদায় করতে পারে। সারা দেশেই
দখলে-দূষণে যখন বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ত্রাহি অবস্থা, এ থেকে ব্যতিক্রম নয় পাবনার
কাচারীপাড়া মসজিদও। তবে প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমের সুবাদে
প্রায় দখলমুক্ত মসজিদটি।