প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৫৫ পিএম
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৫৫ পিএম
যাত্রা আয়োজনের নামে কোনো অশালীন কর্মকাণ্ড দেখলে বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সদস্যরা তা রুখে দেবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি মিলন কান্তি দে।
রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন ঘোষষা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা গভীর অনুসন্ধানে জেনেছি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আর এক শ্রেণির অসাধু যাত্রাপালা প্রদর্শক ও বিকৃতরুচির দল মালিকদের অশ্লীল কর্মকাণ্ডের কারণে যাত্রা আজ নাগরিক সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। আমরা ঘোষণা করছি, যাত্রা আয়োজনের নামে কেউ কোথাও অশ্লীলতা করলে আমরা তা রুখে দেব।’
মিলন কান্তি দে জানান, প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশের গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন মেলা-পার্বণ উপলক্ষে যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি যাত্রাপালা আয়োজনে প্রশাসনিক নানা জটিলতার কথা তুলে ধরেন। বলেন, ‘যাত্রানুষ্ঠানের অনুমতি প্রদানে দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের হাতে। কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে না। অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি করে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস প্রকৃত যাত্রাদল মালিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। প্রশাসন বলছে যাত্রার নামে জুয়া হাউজি হয়, অশ্লীল নাচ-গান হয়।’
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘ভালো দলের ভালো পালাও আছে। অনুষ্ঠানের অনুমতি দিন। তদন্ত করুন। খারাপ কিছু দেখলেই বন্ধ করে দিন।’
যাত্রার নামে অশ্লীলতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দে বলেন, ‘যাত্রার মৌসুম শুরু হলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে, যেমন রুহিয়া, নেকমরদ, বীরগঞ্জের কালীর মেলা ও দিনাজপুরের কান্তজীউর মেলায় কিছু মালিক দল নিয়ে যায়। প্রকৃত অর্থে তারা দল গঠন করে না। দুই চারজন পুরুষ শিল্পী এবং এক ঝাঁক নাচের মেয়ে নিয়ে তারা হাজির হয় ওই সব প্যান্ডেলে। ২-১টি দৃশ্যের পর সেগুলোতে চলে অশ্লীল নাচ-গান।’
সংবাদ সম্মেলনে এমন কর্মকাণ্ড রুখে দেয়ার আহ্বান জানায় পরিষদ।
মিলন কান্তি বলেন, ‘এখন যাত্রাশিল্পের ভরা মৌসুম। হেমন্তের শেষে শীতের আগমনীর সুর শোনা যাচ্ছে। সারা দেশে মাঠে ঘাটে যাত্রার ঐকতানবাদন বেঁজে উঠার এখনই সময়। যাত্রা একটি পেশাদারী শিল্প। এর ওপরেই নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষ। তাই যাত্রাপালার আগের জৌলুস ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, নীতিনির্ধারক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতি তিনি অনুরোধ জানান, যেন এই শিল্পকে ধ্বংস করা না হয়।
বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এই মাধ্যমকে আবার জাগিয়ে তুলুন। অবাধে যাত্রাপালা মঞ্চায়নের অনুমতি দিন। গরিব-দুঃখী যাত্রাশিল্পীরা খেয়ে পরে বাঁচুক। যাত্রামঞ্চের নিভে যাওয়া বাতিগুলো আবার জ্বলে উঠুক।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম আলীম, যুগ্ম সম্পাদক এস আলম লাবলু, সদস্য আব্দুল গফুর, আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা।