প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩ ২১:৪০ পিএম
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৩ ২১:৫৮ পিএম
বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। ছবি : সংগৃহীত
‘প্রলয় বাজাও গানে, সাহস জাগাও প্রাণে’—এই স্লোগান নিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত একাদশ সত্যেন সেন গণসংগীত উৎসব ও জাতীয় গণসংগীত প্রতিযোগিতা। তিন দিনের এই উৎসবের প্রথম দিন ছিল। শুক্রবার (১০ মার্চ ) বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। উদ্বোধন করেন উদীচীর অন্যতম উপদেষ্টা, বিশিষ্ট লোকশিল্পী সাইদুর রহমান বয়াতি। এ সময় সমবেত জাতীয় এবং সংগঠন সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা।
উদ্বোধন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে একাদশ উৎসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একজন ঢাকি ও ১০ জন ঢুলি মিলে ঢাক-ঢোলের বাদ্যে চারপাশ মুখরিত করে তোলেন। নানা রঙের আবির ছড়িয়ে দিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেন উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা। পরে হয় আলোচনা। উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন সংস্কৃতিজন ম. হামিদ, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গণসংগীতশিল্পী কংকন ভট্টাচার্য্য, বিশিষ্ট গণসংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ। আলোচনা করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম, হাবিবুল আলম এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
উৎসবের প্রথম দিন সন্ধ্যায় মঞ্চে একক গান পরিবেশন করেন আমন্ত্রিত শিল্পী কংকন ভট্টাচার্য্য, ফকির সিরাজ, কফিল আহমেদ, তানভীর আলম সজীব, সুরাইয়া পারভীন, আবিদা রহমান সেতু ও শিল্পী আকতার। দলীয় গণসংগীত পরিবেশন করে ঋষিজ, বহ্নিশিখা, সহজিয়া, ভিন্নধারা ও উদীচী।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয় জাতীয় পর্যায়ের গণসংগীত প্রতিযোগিতা। জেলা পর্যায়ের পর যেসব প্রতিযোগী বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী হয়েছেন তারা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। চূড়ান্ত পর্বে 'ক' বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন নেত্রকোণার অপলা সাহা। দ্বিতীয় হয়েছেন বগুড়ার সৌমিকা লাহিড়ী। তৃতীয় স্থান পেয়েছেন নেত্রকোণার আইরিন জাহান পলি। 'খ' বিভাগে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন মৌলভীবাজারের তনুশ্রী পাল শ্রেয়া। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের আনন্দ কুমার দাস। তৃতীয় হয়েছেন দিনাজপুরের বর্ণমালা ইসলাম প্রজ্ঞা। 'গ' বিভাগে সেরা হয়েছেন রাজবাড়ীর মো. আওয়াল মোল্লা, দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন যশোরের মুস্তাহীদ হাসান এবং তৃতীয় হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের অরুণ চন্দ্র বর্মণ। এ ছাড়া 'ঘ' অর্থাৎ দলীয় বিভাগে সেরা হয়েছে উদীচী নোয়াখালী জেলা সংসদ। দ্বিতীয় হয়েছে যুগ্মভাবে উদীচী মাদারীপুর জেলা সংসদ এবং মৌলভীবাজার জেলা সংসদ। তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে বরিশালের উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংগঠন।
শনিবার বিকাল ৪টায় রয়েছে আলোচনা পর্ব। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা করবেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গণসংগীত শিল্পী মন্দিরা ভট্টাচার্য্য, গীতিকার ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি প্রবীর সরদার এবং জামসেদ আনোয়ার তপন। এ ছাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিল্পীদের গণসংগীতসহ দেশের স্বনামধন্য গণসংগীতের সংগঠন ও শিল্পীদের সংগীতে মুখর হবে। উৎসবের তৃতীয় ও শেষ দিন রবিবার ছায়ানট মিলনায়তনে ভারত থেকে আসা অতিথিশিল্পী কংকন ভট্টাচার্য্য, মন্দিরা ভট্টাচার্য্য ও রঞ্জিনী ভট্টাচার্য্যের পরিবেশনা থাকছে। গণসংগীতের প্রচার, প্রসার ও একে একটি স্বতন্ত্র সংগীতের ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রতিবছর উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের জন্মদিন ২৮ মার্চে উৎসব ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।