× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্ন তুলে উপাচার্য রোষানলে

চয়ন চৌধুরী, সিলেট

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১১:৩৩ এএম

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১১:৩৪ এএম

অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্ন তুলে উপাচার্য রোষানলে

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলীর রোষানলে পড়েছেন বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা। এজন্য উপাচার্যকে বিনা বেতনে ছয় মাস থেকে এক বছরের জন্য ছুটিতে পাঠাতে চান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আলোচিত শিল্পপতি রাগীব আলী।

এমনকি বিদেশ সফর শেষে দেশে ফেরার পর ড. মাওলাকে ক্যাম্পাসে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। উপাচার্য হিসেবে প্রাপ্ত তার সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করার পাশাপাশি অফিসিয়াল ই-মেইল পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষকে (ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য) আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন ড. মাওলা। 

বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কোষাধ্যক্ষ বনমালী ভৌমিকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছিলেন উপাচার্য। গত ৫ মার্চ উপাচার্যের পক্ষে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আইনজীবী শরীফ ভূইয়া লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাগীব আলী ও কোষাধ্যক্ষ বনমালী ভৌমিককে আইনি নোটিস পাঠান।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং আচার্য ও রাষ্ট্রপতির সচিবকে নোটিসের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। নোটিসে উপাচার্যকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়াকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০-এর পরিপন্থি ও মানহানিকর উল্লেখ করে চিঠি প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আবদুল হামিদ বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মাওলাকে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য নিয়োগ দেন। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১ মার্চ ড. মাওলা আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

চলতি বছরের ১২ থেকে ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি ইউজিসির অনুমতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তবে অসুস্থতা ও ফ্লাইট জটিলতার কারণে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেননি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার তিন দিন পর তিনি বিধি অনুযায়ী উপাচার্য হিসেবে লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ফিরতে চাইলে চেয়ারম্যান ও কোষাধ্যক্ষ কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হন। 

অভিযোগ রয়েছে, লিডিং ইউনিভার্সিটিতে যোগদান ঠেকানোর জন্য উপাচার্যের অফিস-বাসস্থান তালাবদ্ধ করার পাশাপাশি বরাদ্দকৃত গাড়িও জব্দ করা হয়েছে। এমনকি উপাচার্যের অফিসিয়াল ই-মেইল আইডির পাসওয়ার্ড পাল্টে দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপ থেকে ড. মাওলাকে ‘অপসারণ’ করা হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাগীব আলী ই-মেইলের মাধ্যমে ড. মাওলাকে কাজে যোগদানে নিষেধ করার পাশাপাশি বিনা বেতনে ছয় মাস থেকে এক বছরের ছুটি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। একে চেয়ারম্যানের এখতিয়ারবহির্ভূত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান আইনের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে উপাচার্য ড. মাওলা ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালককে চিঠি দেন। 

সূত্র আরও জানিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি চেয়ারম্যান ড. রাগীব আলীকে চিঠি দেন উপাচার্য ড. মাওলা। 

এতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনটি চেকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ড থেকে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক কোনো ধরনের কার্যাদেশ ছাড়াই স্কিলটেক ইনিটেটিভস অ্যান্ড ভেঞ্চারস বিডি লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। একে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ২০১০-এর ৩৩২ ধারা, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮-এর পরিষ্কার লঙ্ঘন উল্লেখ করে ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন তিনি।

ওই চিঠির অনুলিপি ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়। একই দিন উপাচার্যকে ছুটি দিয়ে চিঠি দেন চেয়ারম্যান।

গত শনিবার উপাচার্য ড. মাওলার অনুপস্থিতিতে লিডিং ইউনিভার্সিটির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাগীব আলী।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, ‘দেশে ফেরার পর ইউজিসিকে অবহিত করার পর বিধি অনুযায়ী লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এখন আমি। আমাকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য নিয়োগ দিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা নেবেন। ট্রাস্টি বোর্ড বা অন্য কেউ জোর করে ছুটি দেওয়া আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কারও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালনেরও সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হওয়ায় তাকে সরাতে একটি পক্ষ সক্রিয় রয়েছে।

এদিকে বিনা বেতনে ছুটি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে লেখা চিঠিতে রাগীব আলী উপাচার্য ড. মাওলার বিরুদ্ধেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপাচার্যের যোগদান বা ছুটি নেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন বলেও দাবি করেছেন।

ইউনিভার্সিটির ফান্ড থেকে বিদেশে টাকা সরানোর মতো গুরুতর অভিযোগও করেছেন তিনি চিঠিতে। এসব বিষয়ে কথার বলার জন্য ড. সৈয়দ রাগীব আলীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করলে নুর আহমদ ফারহান নামে একজন তার নাতি পরিচয় দিয়ে জানান, রাগীব আলী লিডিং ইউনিভার্সিটিতে জরুরি মিটিংয়ে আছেন। অন্যদিকে কোষাধ্যক্ষ বনমালী ভৌমিকের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা