বহু জাতি, বহু সংস্কৃতি ও বহু ভাষার দেশ নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ৫০ বছরে পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে সেই সম্পর্কের জেরে দুই দেশের মধ্যে যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বন্ধন গড়ে উঠেছে, তা উদযাপনে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে শিল্প ও সংস্কৃতি উৎসব। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় উৎসব উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বাংলাদেশ-নেপাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির আয়োজনে পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী আসরে অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যান ভান্ডারি, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী হামিদুজ্জামান খান ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে শিল্পকলা একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজকরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নেপাল দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ললিতা সিলওয়াল ও বাংলাদেশ-নেপাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দীন টুকু।
টুকু জানান, একই ভেন্যুতে বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক আয়োজনে অতিথি হিসেবে থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এদিন বেলা ১১টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারিতে নেপাল ও বাংলাদেশের সম্পর্কের নানা অধ্যায় নিয়ে শিল্পকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শিত হবে। এ প্রদশর্নী চলবে শনিবার (১৮ মার্চ) রাত ৮টা পর্যন্ত। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু।
এ উৎসবে যোগ দিতে নেপালের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ ২০ জনের প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
নেপাল সপ্তম দেশ যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৮ সালের ১৪ জানুয়ারি নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২০২১ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। তার ওই সফরের সময় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে পর্যটন ও সংস্কৃতি খাতে সহযোগিতা ও বিনিময় কর্মসূচিসহ চারটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
দুই দেশের মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্য বিনিময়ের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ-নেপাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা-পরবর্তী সময়ে এই সংগঠন নিয়মিত দুই দেশের সাহিত্যকর্মের অনুবাদ, সাহিত্য সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।