প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আবারও টুইটারে পুরোপুরিভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করেছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। টুইটারের নতুন মালিক ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক জানিয়েছেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুকের সঙ্গে তাঁর ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে টুইটার অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলার বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান করেছেন তারা। আলোচনায় কুক স্পষ্ট করেছেন অ্যাপল কখনই এটি করার কথা চিন্তা করেনি। খবর রয়টার্স।
সম্প্রতি অ্যাপলের বিষয়ে এক টুইট বার্তায় ইলন মাস্ক বলেন, "সামাজিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের বৃহত্তম বিজ্ঞাপনদাতা হলো অ্যাপল।" যদিও অ্যাপল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
তবে কিছুদিন আগে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের বিরুদ্ধে অ্যাপ স্টোর থেকে টুইটার অ্যাপ সরানোর হুমকির অভিযোগ তোলেন ইলন মাস্ক। কোনও কারণ উল্লেখ না করলেও, সোমবার একাধিক টুইটে তিনি দাবি করেন, টুইটারে বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটি। এরই জেরে ইলন মাস্ক অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুকের সঙ্গে দেখা করেন । আলোচনা শেষে বলেন, দুজনের মধ্যে ভাল আলোচনা হয়েছে। এদিকে আমাজন ডট কমও প্রতি বছর টুইটারে ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিজ্ঞাপন পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি আমাজন কর্তৃপক্ষ।
ইলন মাস্ক টুইটারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম টালমাটাল হতে শুরু করে। নীতি নির্ধারণী পর্যায়সহ অনেক বিষয়ে পরিবর্তন আনেন ইলন মাস্ক। প্ল্যাটফর্মটি ঘৃণাত্মক বক্তব্য ও ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তার নীতি সংশোধন করবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। এসব নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিলে টুইটারে বিজ্ঞাপন দেওয়া স্থগিত করে কিছু কোম্পানি। তবে গত শনিবার, ইলন মাস্ক টুইটারে ফিরে আসার জন্য বিজ্ঞাপনদাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে একটি টুইট পোস্ট করেছেন।
এবার টুইটারে দুই তৃতীয়াংশ কর্মী কমে যাওয়ার পর প্ল্যাটফর্মে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের উপস্থিতি বাড়তে থাকায় ‘অটোমেশন’-এর দিকে ঝুঁকেছেন চিফ টুইট ইলন মাস্ক। বর্তমান কর্মীদের আরও বেশি ঝুঁকি নিতে বলছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ‘সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইট (সিসিডিএইচ)’ এর এক সাম্প্রতিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মাস্কের অধীনে টুইটারে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও আপত্তিকর ভাষার ব্যবহার কমার বদলে উল্টো বেড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে টুইটার কনটেন্ট মডারেশন প্রশ্নে ‘অটোমেশন’ প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে। ক্ষতিকর কনটেন্ট চিহ্নিত করতে কর্মীদের ওপর নির্ভরশীলতা টুইটারের অতীত ভুলগুলোর একটি এবং এতে সময় ও শ্রম উভয়ই অপচয় হতো বলে দাবি করেছেন তিনি। আগের প্রশ্নবিদ্ধ কনটেন্ট পর্যালোচনা করে প্ল্যাটফর্মে রাখা, না রাখার সিদ্ধান্তটি মানব কর্মীরা নিলেও – সে কাজটি টুইটারের মূল অ্যালগরিদমের ওপর চাপাতে চাইছেন মাস্ক। টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তিন হাজার ৭০০ কর্মী ছাটাই করেছেন তিনি। বাকি কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের আল্টিমেটাম দেওয়ার পর ইস্তফা দিয়েছেন আরও ১২শ’ কর্মী। তারপর থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্ল্যাটফর্মটির বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য মোকাবেলার সক্ষমতা।
মাস্কের ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটির নতুন নিরাপত্তা প্রধান এলা আরউইন রয়টার্সকে বলেন, তিনি কর্মীদের আরও ঝুঁকি নিয়ে, দ্রুত গতিতে কাজ করে প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ করে তুলতে উদ্বুদ্ধ করছেন। শিশু নিরাপত্তার প্রশ্নে টুইটার নির্ভরযোগ্য অভিযোগকারীদের ওপর নির্ভর করছে। অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ কনটেন্টে নিয়ে সঠিক অভিযোগ তুলেছেন– এমন অ্যাকাউন্টগুলো থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেন্ট মুছে দিচ্ছে টুইটার। শিশু নিপীড়নের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে টুইটার আগের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মকভাবে নিপীড়নমূলক হ্যাশট্যাগ এবং সার্চ রেজাল্ট মুছে দিচ্ছে।