প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:১৭ পিএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:১৮ পিএম
মুহূর্তেই মোবাইলের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। ক্রমেই আর্থিক প্রয়োজনে অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে এমএফএস। এখন দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে নগদ টাকার চাহিদা মেটাচ্ছে হাতে থাকা মোবাইল ফোন। তাই দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর শেষে এ খাতে নিবন্ধিত হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৬টি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, নভেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমলেও নিবন্ধিত গ্রাহক বেড়েছে। নভেম্বরে নিবন্ধিত হিসাব ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৬টি। এর আগে অক্টোবর শেষে নিবন্ধিত হিসাব ছিল ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৯৩টি। এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে ১০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৩টি।
এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১০ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৪ জন এবং নারী গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ জনে। অক্টোবরে সারা দেশে পুরুষ গ্রাহক ছিল ১০ কোটি ৮৬ লাখ ২১ হাজার ৮২৪ জন এবং নারী ৭ কোটি ৮৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৬ জন। এ ছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৪০৫টি। অক্টোবরে এজেন্ট ছিল ১৫ লাখ ২১ হাজার ৮০৩টি।
নভেম্বরে এমএফএসের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, উত্তোলন, বেতন-ভাতা সবকিছু মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৯২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। অক্টোবরে যা ছিল ৯৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৮৮৭ কোটি টাকা।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন আর শুধু টাকা পাঠানোতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এর মাধ্যমে দৈনন্দিন কেনাকাটা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ ও মোবাইলে রিচার্জসহ নানা ধরনের সেবা মিলছে। রাজধানী ও জেলা শহরে গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। শ্রমজীবীরাও এখন এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন।
নভেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠানো হয়েছে ২৯ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। আর উত্তোলন করা হয়েছে ২৬ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। এমএফএস সেবায় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ২৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ৭২ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটার ৩ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
লেনদেন উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনসীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ টাকা জমা করতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।