× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এনবিআরের প্রাক-বাজেট

ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:০৫ পিএম

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:২১ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। গতকাল রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব ভবনে (এনবিআর) অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দিয়েছে অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের এ সংগঠন।

ইআরএফের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির মাসিক আয় ৪১ হাজার ৬৬৬ টাকা বা তার বেশি হলে তাকে করের আওতায় আনা হবে। অন্যদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা নির্ধারিত আছে। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরে একজন ব্যক্তির মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার বেশি হলেই তিনি করের আওতায় ছিলেন।

এ ছাড়া এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়েও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার বেশি। ভারত সরকার সম্প্রতি ঘোষিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৭ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সীমিত আয়ের জনগণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছে ইআরএফ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খসড়া কাস্টমস অ্যাক্ট ও খসড়া আয়কর আইন আগামী জুনের মধ্যে বিল আকারে পাস করে আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে সরকার। তাড়াহুড়া করে আইন দুটি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি করের চাপ দেওয়া না হয় এবং দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করেছে ইআরএফ।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে আগামী বাজেটে কর-জিডিপির অনুপাত ০.৫ শতাংশ বাড়াতে হবে, পরের দুই বছরেও ০.৫ শতাংশ ও ০.৭ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে। এই বাড়তি রাজস্ব আহরণে করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ান, অটোমেশনের মাধ্যমে কর কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা।

পাচার করা অর্থ দেশে আনার জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে যে সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার সুফলও মিলছে না উল্লেখ করে মুদ্রাপাচার রোধে ভারত, চীন অথবা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কঠোর আইন প্রণয়নের সুপারিশ জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় জানানো হয়েছে, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ধাক্কা সামলাতে এখন থেকেই গতিশীল রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। মুক্তবাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শুল্ক হার যৌক্তিক করার কাজ আগামী বাজেট থেকেই শুরু করার প্রস্তাব করছি।

বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতির ফলে অর্থনীতিতে কী ধরনের সুবিধা আসছেÑ তার একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে ইআরএফ। সংগঠনটি আরও জানায়, আগাম কর রিফান্ড ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে যুগোপযোগী করতে হবে। হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে শতভাগ ডিজিটাল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ওপর জোর দিতে হবে। করদাতা ও কর কর্মকর্তার সরাসরি সাক্ষাৎ যতটা সম্ভব দূর করার চেষ্টা করতে হবে।

এ ছাড়া পর্যটন ভিসায় আগত যেসব বিদেশি নাগরিক ঘন ঘন এসে বাংলাদেশে অবৈধভাবে কাজ করে, তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো, স্থানীয় শিল্পের জন্য অগ্রাধিকার দিয়ে ট্যারিফ পলিসিটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা, তৈরি পোশাক শিল্পের মতো অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্যও বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা চালু করা। পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, সম্পদের ওপর বিদ‍্যমান সারচার্জ আরও বাড়ানো, পর্যটন খাত বিকাশের স্বার্থে পর্যটকদের ভ্রমণে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের ছাড় দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করে ইআরএফ।

এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটটা আমার জন্য করা হয়, এটা বোঝার মতো জ্ঞান সাধারণ মানুষের নেই। বাজেটের মূল উদ্দেশ্যই থাকে নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে মধ্যবিত্তে উন্নীত করা। মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে নিয়ে যাওয়া। মানুষের অবস্থার উন্নতি ও মাথাপিছু আয় বাড়ানো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটে কোথায় কর ছাড় দেওয়া হয় সেটা আমরা দেখি। ২০২১ সাল থেকে মেড ইন বাংলাদেশ ধারণা নিয়ে আমরা বাজেট প্রণয়ন করি। মধ্যশ্রেণির সংখ্যা বেশি। তাদের কনজ্যুমার আইটেমও বেশি। এই সাইজটার ডিমান্ডটা পূরণ করছে বিদেশ থেকে আনা আমদানি। মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে প্রেসার কুকার, টিভি ও ফ্রিজ। আমরা চাই বিদেশ থেকে আমদানির শেয়ার জিরো হয়ে যাক।’ 

অপর এক বৈঠকে মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট হার ২৫ শতাংশ করা, পুঁজিবাজারে গতিশীলতা আনতে লভ্যাংশের ওপর কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন।

অন্যদিকে করপোরেট করের হার ৩৭ দশমিক ৫ থেকে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। সেই সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই হার ২০ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর হারের পার্থক্য সাড়ে সাত শতাংশ। এই হার সাড়ে ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে ডিএসই। এ ছাড়া লেনদেনের ক্ষেত্রে বর্তমানে ০ দশমিক ০৫ শতাংশ হারে উৎস কর কাটা হয়। সেখান থেকে কমিয়ে ০ দশমিক ০১৫ শতাংশ করতে চায় ডিএসই।

এ ছাড়া নির্দিষ্ট হারে কর প্রদানসাপেক্ষে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন না তোলার বিধানটি ফের চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। অন্যদিকে স্বাস্থ্যবীমার প্রসারে এ খাতের ওপর থেকে ট্যাক্স রহিত করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন।

সবার দাবি শোনার প্রেক্ষাপটে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমি আশা করব যার যার ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে যেন দাবি না আসে। আমরা যতটুকু গ্রহণ করতে পারব তা করব। আপনারা যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছেন তা দেখলাম, নিশ্চিত থাকতে পারেন প্রতিটি প্রস্তাব আমরা যাচাই করে দেখব। সবকিছুর মূলভিত্তি থাকবে রাজস্ব আদায়, ব্যবসা সহজীকরণ, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা, কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, শিল্পায়ন তৈরি করা ইত্যাদি।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা