প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫৭ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। জীবনযাত্রার খরচ সামলাতে নাকাল অনেক পরিবার। এ অবস্থায় দাতব্য খাবার বা ফুড ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় যুক্তরাজ্যের ফুড ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
পেনশনভোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিক্ষকসহ অনেক পেশাজীবী জীবনযাপন খরচ কুলিয়ে উঠতে না পেরে সংকটে দাতব্য সংস্থারগুলোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা ইনডিপেনডেন্ট ফুড এইড নেটওয়ার্ক (ইফান)। তারা বলছে, এক বছর আগের তুলনায় গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ফুড ব্যাংকে ৯০ শতাংশ চাহিদা বেড়েছে।
১৫৪টি ফুড ব্যাংক পরিচালনাকারী ৮৫টি সংস্থার অর্ধেকই ইফানকে জানায়, চাহিদা বাড়লেও তাদের সরবরাহ বাড়েনি। ফলে তারা চাহিদাসাপেক্ষে সহায়তা দিতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে তাদের চাহিদা থাকলেও সাহায্য কমাতে বাধ্য হবে অথবা সীমিত পরিসরে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
১ হাজার ৩০০টি ফুড ব্যাংক পরিচালনাকারী যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় সংস্থা ট্রাসল ট্রাস্ট এমন পরিস্থিতির আশঙ্কা আগেই করেছিল। গত নভেম্বরে তারা বলেছিল, শীতকালটা সবচেয়ে কঠিন হবে। যদিও আগে থেকেই ফুড ব্যাংকগুলোর প্রতি চাহিদা বাড়ে। শুধু এপ্রিল ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৩ লাখ জরুরি খাদ্য পার্সেল বিতরণ করেছে তারা। যা ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি এবং করোনা মহামারির আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।
গত সপ্তাহে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো সত্ত্বেও জীবনযাত্রার খরচ এখনও ক্রমবর্ধমান। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং গ্যাসের দাম এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১৩০ শতাংশ বেশি। মজুরি কমায় ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপে কয়েক দশকের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীরা কয়েকবার ধর্মঘট ডেকেছেন। শিক্ষক, জুনিয়র চিকিৎসকসহ অনেকেই এসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
ইফানের গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিক্ষকসহ অন্য পেশাজীবীদের রেকর্ড চাহিদা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ফুড ব্যাংকগুলো। ৮০ শতাংশ সংস্থাই জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষকে সাহায্য দিতে হয়েছে। পেনশনভোগী ও শিশু আছে এমন পরিবারেই বেশি সহায়তার প্রয়োজন হচ্ছে।
এমন দুর্ভোগের জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন ইফানের সমন্বয়কারী সাবিন গুডউইন। তিনি বলেন, ‘দাতব্য সংস্থার ওপর নির্ভরশীল এটাই প্রমাণ করে যে মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষ খাদ্যের কিনারে পৌঁছে গেছে। সরকারের নীতিসহায়তা ছাড়া এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব না।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান