× ই-পেপার প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত ফিচার শিল্প-সংস্কৃতি ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্থবিরতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া আবাসন শিল্প

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:২০ এএম । আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৪০ এএম

প্রবা ফটো

চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের আবাসন খাত। নির্মাণ সামগ্রীর চরম উর্ধ্বগতি আবাসন শিল্পকে স্থবির করে দিয়েছে। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা যুক্ত হওয়ায় মধ্যবিত্তরা কার্যত ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না। এরপরও স্বপ্নপূরণে ক্রেতারা ভালোমানের ফ্ল্যাট খুঁজেন মাথা গোঁজার তাগিদে। 

কিন্তু উচ্চমূল্যের কারণে ফ্ল্যাট যেন সোনার হরিণে পরিণত হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকার যদি আবাসন শিল্প রক্ষায় এগিয়ে না আসে তাহলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। এই ক্ষেত্রে রিহ্যাবের কিছু করণীয় আছে। কিন্তু অস্থির এই সময়ে সরকার-রিহ্যাব কেউই কিছু করছেন না। 

মূলত, ২০১২ সালের পর থেকেই আবাসন খাত ধীর গতির হয়েছিল। করোনা সংক্রণ এই খাতকে খাদের কিনারায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুনরায় আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করে। কিন্তু এবার নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চ মূল্য। 

মরার উপর খরার ঘা হয়ে আগের পুরনো সমস্যাও যন্ত্রণা বাড়াচ্ছে। নির্মাণ সামগ্রীর উর্ধ্বগতির কারণে ব্যয় বৃদ্ধির পরও কিছু নাম সর্বস্ব আবাসন কোম্পানি ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। স্বল্প দামে ফ্ল্যাট বিক্রির স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আদায়ের পর যথাসময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করছে পারছে না ওইসব নামসর্বস্ব আবাসন কোম্পানীগুলো। 

নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, অত্যাধিক রেজিস্ট্রেশন ফি, ফ্ল্যাট ক্রেতারা স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তে সরকারি ঋণ না পাওয়ার কারণে আবাসন খাত খাদের কিনারায় দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠার পাশাপাশি সরকারি নীতি সহায়তা পেলে এই খাত থেকে সরকার বিপুল রাজস্ব আয় করতে পারবে এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে।  

আবাসন ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে রডের দাম ছিল ৬০-৬৫ হাজার টাকা। এখন রড বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ হাজার টাকায়। সিমেন্টের দাম ছিল ৩২০-৩৩০ টাকা। এখন ৫০০ টাকা ছাড়িয়েছে। শুল্কসহ পাথরের দাম ছাড়িয়েছে দ্বিগুণ। এর সঙ্গ যুক্ত অন্যান্য সামগ্রী রং, স্যানিটারি, আসবাবপত্র ও ইন্টরিয়ার সরঞ্জামসহ সব কিছুর দামই বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এই কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। যার প্রভাব ফ্ল্যাটে পড়েছে। ফ্ল্যাটে প্রতি বর্গফুটে দাম বেড়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা হারে। অবশ্য, মহানগরীর এলাকা ভেদে ফ্ল্যাটের দাম কম-বেশি হয়। এখন পাঁচলাইশ এলাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে ৮-৯ হাজার টাকায়। নাসিরাবাদে বিলাস বহুল ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে প্রতি বর্গফুট ১০-১২ হাজার টাকায়। আবার শহরতলীতে এখনো প্রতি বর্গফুট ছয়-সাত হাজার টাকায় ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে। ফ্ল্যাটের দাম বাড়লেও ক্রেতাদের আয় তেমন বাড়েনি। ফলে আবাসনখাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। 

ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন নিয়ে একাধিক ফ্ল্যাট ঘুরে ঘুরে দেখেছিলেন একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর চাকরিজীবী অক্সিজেন এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন নিয়ে অনেক ফ্ল্যাট দেখেছি। পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যায়। ফলে স্বপ্নের ফ্ল্যাট এখনো কিনতে পারিনি। এখন কোটি টাকার কমে ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে না।’ 

এরপরও চট্টগ্রামের রিহ্যাব মেলায় অংশ নেওয়া আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা হলেও ছাড় দিচ্ছেন গ্রাহকদের জন্য। মেলার পর এই ছাড় থাকবে না বলে জানিয়েছেন। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির পরও ছাড়ের বিষয়ে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মেলা হলে কিছু ফ্ল্যাট প্লট বিক্রি হবে। ক্রেতারা আশা নিয়ে মেলায় আসবেন। বুকিং দেবেন। তাই তাৎক্ষণিক কিছু ছাড় দিয়ে গ্রাহক আকৃষ্ট করার পাশাপাশি ব্যবসা চাঙা করতে হচ্ছে। 

নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিষয়ে উইকন প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আশরাফুল ইসলাম আলভি বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে আমদানির ক্ষেত্রে সরকারি কিছু বিধিনিষেধ আছে। এই কারণে বিদেশী কিছু নির্মাণ সামগ্রী আমদানি বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে দেশে উৎপাদিত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সংকট মোকাবেলা করা যায়।’  তিনি বলেন, ‘আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করলে দেশের শিল্প বিকশিত হবে।’ ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন অভিজাত ফ্ল্যাট নির্মাণ করছি। এখনই ফ্ল্যাট কেনার সুবর্ণ সুযোগ।’ 

ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে আনতে পারে এবং সেই সঙ্গে ট্রান্সফার ফিও কমিয়ে আনা যেতে পারে। এতে এই সেক্টরে কিছুটা হলেও গতি আসবে। পাশাপাশি গাড়ি যেমন হাত বদল করে বিক্রি করা যায়, তেমনিভাবে ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে হাতবদল করে বিক্রির বাজার বাড়াতে হবে। 

আবাসন শিল্পকে টিকিয়ে রাখা জরুরি উল্লেখ করে ফিনলে প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আই খসরু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘নির্মাণ সামগ্রী উর্ধ্বগতির কারণে ব্যবসা হচ্ছে না। এখানে সরকার ও রিহ্যাব-কেউই কিছু করে না। তাই আবাসন ব্যবসা নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না।’ 

শেয়ার করুন-

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা