× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আট মাসে ৯.৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি বাংলাদেশ ব্যাংকের

জয়নাল আবেদীন

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৪১ এএম

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৪২ এএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

জরুরি পণ্য আমদানির জন্য ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে মোট ৯৮০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯৮ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এর আগে এত কম সময়ে কখনও এত ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকট কাটাতে এ ডলার বিক্রি করলেও তা বাজারে তারল্য সংকট তৈরি করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৯২০ কোটি বা ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে কখনও এত পরিমাণ ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। গত অর্থবছরের ১২ মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছিল ৭৬২ কোটি ডলার।

এদিকে ডলার বিক্রির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকে হিসাব করলে রিজার্ভ এখন ২৪ বিলিয়নের কিছু বেশি। গত বছরের এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরে কমেছে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর হাতে সিআরআর ও এসএলআর রাখার পর চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে অতিরিক্ত তারল্য কমে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। জানুয়ারি শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় অতিরিক্তি তারল্য ৫১ হাজার কোটি টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৫৪ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ব্যাংকের ৩২ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় নেমেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার কেনাবেচা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রয়োজনীয়তার খাতিরে বছরজুড়ে ডলার সহায়তা দিয়ে আসছি। গুরুত্ব বিবেচনায় ভবিষ্যতে দিয়ে যাব। তবে এই পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশে নয়। সারা বিশ্বজুড়েই ডলার ক্রাইসিস ও পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশাবাদী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশে যে ডলার সংকট তৈরি হয়েছে, তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ডলার বিক্রি করে বাজার স্থিতিশীল রাখা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ ডলার বিক্রির ফলে চাপ তৈরি হচ্ছে ব্যাংকের তারল্যে। এর ফলে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি, সরকারকে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সমস্যার সমাধানে বেশকিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের অন্যতম দুটি পথের মধ্যে একটি রেমিট্যান্স এবং অপরটি রপ্তানি আয়। রপ্তানি আয় বাড়াতে ডলারের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাহলে ব্যবসায়ীরা দেশে ডলার আনতে আগ্রহী হবেন। ডলার রেট নিয়ন্ত্রণ করে বাজার স্থিতিশীল করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। পাশাপাশি ব্যাংকঋণের সুদের হারকে মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন আহসান এইচ মনসুর।

তবে সুখবর দিচ্ছে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। এ দুই ধারা এখন ইতিবাচক। এর বিপরীতে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে আমদানি কমছে। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতি মাসে আয় হয়েছে ৪৬৪ কোটি ডলার। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে গড়ে ৫২০ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে।

একই সময়ে বেড়েছে রেমিট্যান্স। জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়েছে। এ মাসে দেশে এসেছে ১৯৬ কোটি ডলার। আগের মাস ডিসেম্বরে এটি ছিল প্রায় ১৭০ কোটি ডলার। আর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১০৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসেও রেমিট্যান্স বাড়বে এমনটাই আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের।

আমদানি কমাতে শতভাগ পর্যন্ত এলসি মার্জিন, বিলাসীপণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে আমদানি ব্যয় ২ দশমিক ১৫ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৮১৩ কোটি ডলারে নেমেছে। অর্থনীতির এই সূচকগুলোকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা