× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গম নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা

ফারুক আহমাদ আরিফ

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৬ পিএম

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৯ পিএম

গম নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা

৮০ বছর বয়সি তয়ফুন নেসা চাল কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তার আকুতি ৫ কেজির জায়গায় যেন ১০ কেজি চাল দেওয়া হয়। কেননা, আটা দেওয়া হয় না তিন মাস ধরে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ তয়ফুন নেসা প্রতিদিন ওপেন মার্কেট সেলে (ওএমএস) চাল কিনতে আসতে পারেন না। তয়ফুন নেসার মতোই লাইনে দাঁড়িয়েছেন আব্দুল মান্নান (৮০) ও আব্দুল ওয়াহিদসহ (৭০) অসংখ্য নারী-পুরুষ, কিছু তরুণ এবং কিশোরও। তারাও জানালেন, তিন থেকে সাড়ে তিন মাস ধরে সিলেট শহরের সার্কিট হাউসের পাশের কিন ব্রিজের ঢালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওএমএসের ট্রাক সেলে শুধু চাল দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি জানতে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, দুই মাস ধরে শুধু চাল দেওয়া হচ্ছে তাদের। একই চিত্র মিলল শাহপরান থানাতেও। সেখানেও আটা দেওয়া হয় না। এসব চিত্র চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারির। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার বাংলামোটরে ওএমএসের ট্রাক সেলের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, সেখানে প্যাকেটের আটার পরিবর্তে খোলা আটা দেওয়া হচ্ছে। জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, প্যাকেট আটা কম আসছে, সেজন্য খোলা আটা দেওয়া হচ্ছে।

কেন এই সংকট

এমন পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বাংলাদেশের আমদানি চিত্র পাল্টে গেছে। দেশে এখন বছরে গমের চাহিদা ৭৫ লাখ টন। কিন্তু উৎপাদন হয় ১১ লাখ টন। বাকি ৬৪ লাখ টন গমের ঘাটতি মেটানো হয় সাধারণত রাশিয়া, ইউক্রেন, কানাডা ও ভারত থেকে আমদানি করে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট আমদানি করা গমের ৪৫ শতাংশ এসেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে, ২৩ শতাংশ এসেছে কানাডা থেকে এবং ১৭ ভাগ এসেছে ভারত থেকে। বাকি ১৫ ভাগ গম আমদানি করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়াসহ আটটি দেশ থেকে। 

কিন্তু গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এ চিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ১ মার্চ থেকে ১২ মে পর্যন্ত সময়কালে গম আমদানিতে শীর্ষে উঠে আসে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। এ সময়ে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টন গম আনা হয় ভারত থেকে, যা মোট আমদানির ৬৩ শতাংশ। এ ছাড়া কানাডা থেকে ১৪ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশ থেকে ২৩ শতাংশ গম আমদানি করা হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার টন গম আমদানি হয়। এর আগে ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আমদানি হয়েছিল ৫৩ লাখ ৪২ হাজার টন। 

এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগের বা ২০২১ সালের দামের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায়, গমের আমদানি মূল্য দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তখন ভারতের গমের মূল্য ছিল প্রতি টন ২০০ ডলার, কানাডার ২৮০ ডলার। বাংলাদেশে এখনও গমের মজুদ পর্যাপ্ত। যদিও এরই মধ্যে আটা এবং ময়দার দাম বেড়ে গেছে। দেশের বেসরকারি পর্যায়ে গম আমদানিকারক এক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘গমের বিকল্প উৎস আছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি। ভারতে যেমন ২০২২ সালে প্রতি টন গমের মূল্য ছিল ৪০০ ইউএস ডলার। কিন্তু কানাডায় তা ৫৪০ ইউএস ডলার; অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানির গমের দামও বেশি। দামের তুলনা করলে এই সময়ে আমাদের সামনে ভারতের কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না।’ 

খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক স্থানেই ওএমএসে শুধু চাল দেওয়া হচ্ছে, আটা দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, আটার মজুদ কম। বিদেশ থেকেও গমের আমদানি কম। কিন্তু সিলেট আর ঢাকার ওএমএসের আটার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আমদানি করা গম। বাংলাদেশ রাশিয়া, ইউক্রেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং কানাডা থেকে গম আমদানি করে থাকে। ২০২২ সালে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ভারতে গম উৎপাদন কম হয়েছে। তাই দেশটি গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে, বাংলাদেশ সেই তালিকার বাইরে ছিল বলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার একাধিক বক্তব্যে দাবি করেছেন। ভারত নতুন কোনো অবস্থান নিলে দেশের গম আমদানির চিত্র পুরোপুরি পাল্টে যাবে এবং সংকট ঘনীভূত হতে পারে।

অস্থিরতা ভারতের বাজারেও 

গত বুধবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, ভারত গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। ভারতের দ্য ইকোনমিক টাইমসও একই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বিভিন্ন অংশে বছরের এই সময়ে অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় গম উৎপাদনকারী এলাকা রাজস্থানও রয়েছে। এখন গমগাছগুলো পরিপক্বতার বা ফুল ফোটার কাছাকাছি সময়ে পৌঁছেছে। এই উষ্ণতা কৃষকদের তাই খুব উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এই উচ্চ তাপমাত্রার ফলে উৎপাদনে ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর অধিক তাপপ্রবাহ ভারতের বেশিরভাগ অংশকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এতে দেশটি গম রপ্তানি সীমিত করে। বর্তমানে তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকরা তাদের ক্ষেতগুলো নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, গত বছর খাদ্যমন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করার পর থেকে আমরা প্রয়োজনীয় মজুদ রেখেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। ভারত যদি গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলে কী অবস্থা তৈরি হবে, তা বলা যাচ্ছে না। তবে গত বছর থেকে সরকারি পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশকে গম দিচ্ছে না। 

চীনের পর বিশ্বব্যাপী ভারতের গমের ফলন সবচেয়ে বেশি। গম ভারতের একটি প্রধান খাদ্য এবং খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘায়িত তাপে টানা দ্বিতীয় বছরের জন্যে উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে। এতে স্থানীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে। এ কারণে দেশটি সম্ভবত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে। এমন সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুষ্ক আবহাওয়া এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যে বিশ্ববাজারকে প্রভাবিত করবে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।

চলতি বছর ভারতে বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন হবে। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য খাদ্য ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার। দরিদ্রদের জন্য খাদ্য কর্মসূচি সরবরাহ করতে ব্যবহৃত গমের মজুদ এই সময় সবচেয়ে নিচে নেমে এসেছে। 

ফুড কর্প অব ইন্ডিয়ার (এফসিআই) প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে ব্লুমবার্গ জানায়, ২০১৭ সাল থেকে ছয় বছরের মধ্যে চলতি বছর ভারতে গমের মজুদ সবচেয়ে কম। ২০১৬ সালে মজুদের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ৩ মিলিয়ন টন, ২০১৭ সালে ১১ দশমিক ৬, ২০১৮ সালে ১৭ দশমিক ৬, ২০১৯ সালে ২৩ দশমিক ৯, ২০২০ সালে ৩০ দশমিক ৪, ২০২১ সালে ৩১ দশমিক ৪, ২০২২ সালে ২৮ দশমিক ৪ ও চলতি বছর ১৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম।

ভারতীয় গম ও বার্লি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান জ্ঞানেন্দ্র সিং জানান, যদিও ভারতের ফসল আপাতত ভালো অবস্থায় আছে, ফলনের ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের ঘন ঘন ক্ষেতে পানি দিতে হবে। তাদের কীটপতঙ্গ এবং রোগের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, এই মৌসুমে গমের উৎপাদন সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে। তারপরও অভ্যন্তরীণ দাম চড়া রয়েছে। দেশটির ভোক্তাবিষয়ক বিভাগের তথ্যানুসারে, গমের গড় খুচরামূল্য এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১৯ ভাগ বেশি, যেখানে আটার দাম ২০ ভাগ বেড়েছে। রাজ্যের মজুদ কর্মকর্তারা ব্লুমবার্গকে জানান, ৫ মিলিয়ন টন গম কম দামে বিক্রি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া উষ্ণ হলে দামের প্রবণতা আরও বাড়বে। গরম আবহাওয়া বিরাজ করার সঙ্গে সঙ্গে ভারত গমের ওপর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাব নিরীক্ষণের জন্য একটি প্যানেল তৈরি করেছে। প্যানেল, কৃষকদের তাদের ফসলে (পটাসিয়াম ক্লোরাইড) একধরনের সার দিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে। তাপমাত্রা দিনে ৩০ ডিগ্রি (৮৬ ফারেনহাইট) বা রাতে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে এ স্প্রে করতে হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ মৌসুমে ভারতে ১০৫ মিলিয়ন টন গমের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১১২ মিলিয়ন টন গম উৎপাদিত হবে। গত বছর একই চাহিদার বিপরীতে উৎপাদিত হয় ৯৫ মিলিয়ন টন। তাতে গমের সংকট দেখা দেয়। এতে প্রতি টন গমের মূল্য জানুয়ারিতে প্রায় রেকর্ড বা ৩২ হাজার ৫০০ রুপিতে পৌঁছে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে

৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাংকের ‘ফুড সিকিউরিটি আপডেট-২০২৩’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২, মার্চে ৬ দশমিক ৩, এপ্রিলে ৬ দশমিক ২, মেতে ৮ দশমিক ৩, জুনে ৮ দশমিক ৪, জুলাইয়ে ৮ দশমিক ২, আগস্টে ৯ দশমিক ৯, সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১, অক্টোবরে ৮ দশমিক ৫, নভেম্বরে ৮ দশমিক ১, ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৯ ও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। সেখানে কৃষি ও খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে এবং রপ্তানি মূল্যসূচক বেড়েছে ৫ শতাংশ। ভুট্টা ১ শতাংশ, গম ২ শতাংশ ও চালের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। বার্ষিক ভিত্তিতে ভুট্টা এবং চালের দাম যথাক্রমে ৯ শতাংশ এবং ১৬ শতাংশ বেশি এবং গমের দাম ৩ শতাংশ কম। ২০২১ সালের জানুয়ারির তুলনায় ভুট্টা ও গমের দাম ৩১ শতাংশ এবং ১৪ শতাংশ বেশি এবং চালের দাম ২ শতাংশ কম।

মানুষকে রক্ষা এবং জলবায়ু ঝুঁকির বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে এ প্রতিবেদনে চারটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে উষ্ণ, আর্দ্র এবং কম অনুমানযোগ্য জলবায়ুর বিরুদ্ধে দেশের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য চারটি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমত, কৃষিতে অভিযোজনের মূল চালিকাশক্তি হতে হবে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা; দ্বিতীয়ত, কৃষকদের বিশেষ করে ছোট এবং আরও ঝুঁকিপূর্ণদের, তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের ধরন এবং সেই সঙ্গে আরও স্থিতিস্থাপক বীজের জাতগুলোর ফসল ফলনের ওপর প্রভাব সম্পর্কে তথ্যের প্রয়োজন পড়বে; তৃতীয়ত, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপ খাতে সহায়তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে; চতুর্থত, পশুসম্পদ এবং ফল ও সবজি, জলবায়ু ও স্মার্টকৃষির প্রচারে গুরুত্ব দিতে হবে। বন উজাড় ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি, নির্গমন হ্রাস এবং গ্রামীণ আয় বাড়াতে পারে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি

বাংলাদেশেও চালের পরই দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য গম। এখানে বছরে গমের চাহিদা ৮৫-৮৬ লাখ মেট্রিক টন। প্রতিবছর গম আমদানি করতে হচ্ছে ৭৪-৭৫ লাখ মেট্রিক টন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬২ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে। চাহিদা মেটাতে প্রতি মাসে গড়ে ৫ লাখ ১৬ হাজার টন গম আমদানি করতে হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম দেড় মাসে গম আমদানি হয় ৩ লাখ ৪০ হাজার টন। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৫ লাখ ২৮ হাজার টন। 

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাসিক বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতি কেজি খোলা আটার দাম ছিল ৩৪ টাকা। প্যাকেটজাত আটার দাম ছিল ৪০ টাকা। মার্চ মাসে খোলা ৩৪ ও প্যাকেট ৩৫ টাকা, জুন মাসে খোলা ৪০ ও প্যাকেট ৪৮ টাকা, সেপ্টেম্বরে খোলা ৫০ ও প্যাকেট ৫৫ টাকা, অক্টোবরে খোলা ৫৫ ও প্যাকেট ৫৮ টাকা, নভেম্বরে খোলা ৬০ ও প্যাকেট ৬৫ টাকা, ডিসেম্বরে খোলা ৬০ ও প্যাকেট ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি প্রতি কেজি খোলা ৫৮ ও প্যাকেট ৬৫ টাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতি কেজি খোলা আটা ৫৬ ও প্যাকেট ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

মাসিক হিসেবে খোলা আটা ১ দশমিক ৬৯ ও প্যাকেটজাত আটার দাম কমেছে ৫ শতাংশ। তবে বার্ষিক হিসেবে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খোলা আটা ৬৫ দশমিক ৭১ ও প্যাকেটজাত আটা ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ দাম বেড়েছে। 

গম আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গম আমদানিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ চললেও ওই দুই দেশ থেকে গম আমদানি হচ্ছে। চলতি মাসেও ইউক্রেন থেকে অনেক গম আসছে। এই দুটি দেশের বাইরে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া থেকেও গম আমদানি হচ্ছে। তাই ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধ থাকলেও খুব সমস্যা হচ্ছে না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা