এনবিআরের প্রাক-বাজেট
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৩৪ পিএম
প্রবা ফটো
বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা চায় রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউসিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘অপ্রদর্শিত টাকা বাড়ি কেনার জন্য দিতে হবে, এ ধরনের দাবি প্রতিবছর করাটা মানায় না। তাহলে অনবরত অর্থনীতিতে কালো টাকা তৈরি হবে, আর আপনারা বাড়ি কিনবেন।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ’গ্র্যাজুয়েশন একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিতে হলে দ্রুত আমাদের শিল্পে বিকাশ ঘটাতে হবে। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’’ পণ্যে জোর দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় টেলিভিশন বাইরে থেকে আনতে আনতে দেশে বানানো শুরু হয়ে যায়।’ গাড়ির ক্ষেত্রেও আমদানির পাশাপাশি দেশে বানানো শুরু করতে হবে বলে জানান তিনি।
উৎপাদিত গাড়ি রপ্তানিও করতে হবে
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ’উন্নত দেশ করতে হলে ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াতে হবে আবার কর আদায়ও বাড়াতে হবে। এসব বিবেচনা করতে হবে।’ এজন্য ব্যবসায়ীদের তৈরি থাকার পাশাপাশি কর দেওয়ার মানসিকতা তৈরির কথা বলেন।
বাজেট আলোচনার সুপারিশে রিহ্যাব জানায়, আবাসন ক্রেতাদের ক্ষেত্রে প্রথম ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য অর্থের উৎস প্রদর্শন না করার সুযোগসহ আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪-এর ধারা ১৯এএএএএ-এর পুনঃপ্রবর্তন করা প্রয়োজন। আবাসন খাতের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫ থেকে ১০ বছরের জন্য গৃহায়ণ খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণিবিতানে বিনিয়োগের সুবিধা বহাল রাখা প্রয়োজন বলে মনে করে সংগঠনটি। সেই সঙ্গে এর ফলে জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলেও জানায় তারা।
বাজেট প্রস্তাবে রিহ্যাব আরও জানায়, ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট কর ও ফি ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা, নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে আবাসন খাতে সেকেন্ডারি বাজারব্যবস্থার প্রচলন, গৃহায়ণ শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর কমানো, গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা, রাজউক ও সিডিএর আওতাভুক্ত ও বহির্ভূত এলাকায় সকল জমির ক্ষেত্রে আরোপিত কর প্রত্যাহার, সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎসে কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ৫ বছরের জন্য ডেভেলপারদের অব্যাহতি প্রদান।
একই দিনে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) তাদের প্রস্তাবে জানায়, বর্তমানে দেশীয় টাইলস উৎপাদনে ১৫ শতাংশ ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদনে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত আছে। এই হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বিসিএমইএ। সংগঠনটি আরও জানায়, পণ্যের মূল্য ঘোষণায় সহগ নির্ণয়ে ময়েশ্চারসহ প্রসেসলস ৩৫ শতাংশ বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাব করেছে তারা। বর্তমানে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত মঞ্জুর করা হয় বলে জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়া সিরামিক খাতে আংশিক বন্ড সুবিধার প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) বিদ্যুৎ চালিত/ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারিত আছে। এ ছাড়া পাবলিক ট্রান্সপোর্টের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বারভিডা, যা বর্তমানে ১০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তাদের প্রস্তাবে জানায়, নন বন্ড ট্যানারির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ৩ শতাংশ করা (বর্তমানে ৫ শতাংশ), ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশের স্থলে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, রপ্তানি প্রণোদনার ওপর বিদ্যমান ১০ শতাংশ উৎসে করের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করা।
লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়ার ম্যানুফ্যাকচার্সস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) তাদের প্রস্তাবে জানায়, উৎসে কর কর্তন বর্তমানে ১ শতাংশ নির্ধারিত আছে। তবে এই হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।