× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১০ প্রকল্পে কচ্ছপগতি

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৬:০০ পিএম

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৬:০৪ পিএম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১০ প্রকল্পে কচ্ছপগতি

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গুদামঘর নির্মাণসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১০টি প্রকল্পে চলছে কচ্ছপগতি। এসব প্রকল্পের গড় অগ্রগতি মাত্র ৪৬ শতাংশ। অথচ বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলছে সেই ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে।

সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) জুলাই থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। চলতি অর্থবছরে ১০টি প্রকল্পের আওতায় খরচ হয়েছে ৭৩ কোটি টাকা বা ৩০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

টিসিবির আপৎকালীন মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ২৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচে চট্টগ্রাম, সিলেট ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের জন্য গুদাম নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তবে প্রকল্পটি দুই বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ১৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যেখানে এই সংকটের মুহূর্তে প্রকল্পটি খুবই জরুরি ছিল। কিন্তু এর নির্মাণকাজে চলছে ধীরগতি। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে। ফলে তখন আবারও মেয়াদ বাড়াতে হবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হলে গুদামগুলো সংকটের সময়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু প্রকল্পের ধীরগতির কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে সংকটের মুহূর্তে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম ইচ্ছামতো বাড়িয়ে সাধারণ ক্রেতাদের পকেট কাটছেন। যে ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বাজার নিয়ন্ত্রণে ভালো ভূমিকা রাখতে পারত, কিন্তু ট্যারিফ কমিশনের নেওয়া সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই‌। প্রকল্পটি গত বছরের জানুয়ারিতে শুরু হলেও এ পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। প্রকল্পটির আওতায় খরচ হয়েছে মাত্র ৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রকল্প ডায়াগনস্টিক ট্রেড ইন্টিগ্রেশন স্টাডি আপডেট অব বাংলাদেশ প্রকল্পটি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নেওয়া হলেও এক বছরে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। যেখানে গত জানুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটির মোট খরচ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৫ সালের জুলাইয়ে শুরু হয় কিন্তু ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৬৩ শতাংশ। যদিও এক্সিবিশন সেন্টারটি উদ্বোধন করা হয়েছে এবং সেখানে দুটি ঢাকা-আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পের মোট কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৮২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির দ্রুত শেষ করার জন্য বলেছে আইএমইডি।

প্রতিযোগিতামূলক রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোতে চাকরির সুযোগ বাড়াতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালে এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১২ কোটি টাকা।

জানা যায়, বাংলাদেশে রপ্তানিনীতিতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য পণ্য ও মার্কেট বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। দেশের রপ্তানি বাজার সীমিত পণ্য ও সীমিত বাজার এলাকায় সীমাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে যেকোনো অস্থিতিশীলতা রপ্তানি বাজারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতগুলোকে চিহ্নিত করে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করে। তবে ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। খরচ হয়েছে ২৬১ কোটি টাকা। অথচ প্রথম প্রকল্পটি এত দিনে শেষ হলে রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোতে প্রতিযোগিতা বাড়ত এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো।

এদিকে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১ প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে হাতে নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে ছয় বছরে প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪২ শতাংশ বা ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ২০১৬ সালে অনুমোদিত এক্সটেনশন অব স্মল হোল্ডিং টি কনটিভেশন ইন দ্য চট্টগ্রাম হিল ট্যাক্টস হাতে নেওয়া হয়। ১০ কোটি টাকার প্রকল্পটির ৭ বছরে অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। খরচ হয়েছে ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এক্সপোর্ট ড্রাইভারিফিকেশন অ্যান্ড কম্পেটিটিভনেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট টু প্রকল্পটি ২০১৮ সালে হাতে নেওয়া হলেও এটি আজও শেষ হয়নি। পাঁচ বছরের প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ। খরচ হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অর্থে বাস্তবায়িত দুটি প্রকল্পেরও অগ্রগতি নেই। ইরাডিকেশন অব রুরাল প্রভাটি ভাই এক্সটেনশন অব স্মল হোল্ডিং কাস্তিভেশন ইন লালমনিরহাট প্রকল্পটি ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে হাতে নেওয়া হয়। আট বছরে প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে ৬৬ শতাংশ। খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এদিকে ২২০ কোটি টাকা পেয়ে গত বছরের এপ্রিলে রপ্তানি উন্নয়ন ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হলেও এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর কম অগ্রগতির বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. মোশারফ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিসগুলোই বলতে পারবে অগ্রগতি কম হওয়ার কারণ।’

বাংলাদেশ-চায়না এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি কম হওয়ার বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পের মূল কাজ যে এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ, সেটা হয়ে গেছে। আপনারা তো দেখছেন সেখানে দুটি বাণিজ্য মেলাও হয়ে গেছে। তবে এই এক্সিবিশনের সঙ্গে এখন আরও কিছু কাজ যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলোর প্ল্যানিং চলছে। তাই অগ্রগতি কম মনে হচ্ছে।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা