× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বস্তিতে নেই পুঁজিবাজার

আনিছুর রহমান

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৮:০০ পিএম

স্বস্তিতে নেই পুঁজিবাজার

ক্রেতা সংকট ও লেনদেনের নিম্নগতির কারণে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, স্টক এক্সচেঞ্জসহ সবখানে। শুধু তাই নয়, এই ধাক্কা লেগেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেও (বিএসইসি)। 

তবে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলসহ বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএসইসির কর্তাব্যক্তিরা। গত ২১ ডিসেম্বর ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করলেও পতন ঠেকাতে তা আবারও আরোপ করেছে ১ মার্চ।

এর আগে গত বছরের ২৮ জুলাই শেয়ারদরে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেয় বিএসইসি, যা কার্যকর হয় ৩১ জুলাই থেকে। এরপর তিন মাসে (আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর) লেনদেনের পাশাপাশি সূচকই ছিল স্বস্তির জায়গায়। এই উত্থানের মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৮ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা, যা ছিল ডিএসইর শীর্ষ ৫টি লেনদেনের মধ্যে একটি। বড় লেনদেনের দুই কার্যদিবস পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৬৭৬ পয়েন্টে, যা গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থান।

গত ৭ মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় সেপ্টেম্বর মাসে। ওই মাসে ডিএসইতে ৩৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বেচাকেনা হয়। এর আগের মাস আগস্টেও ২৫ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে অক্টোবর ও নভেম্বরে আগের মাসগুলোর চেয়ে লেনদেন কিছুটা কমে যায়। ডিএসইতে অক্টোবর ও নভেম্বরে লেনদেন হয় যথাক্রমে ২১ হাজার ৯১ কোটি ও ১৬ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। 

কিন্তু এর পরের তিন মাসে লেনদেন নেমে আসে তলানিতে। আগের মাসের চেয়ে লেনদেন অর্ধেকের চেয়ে বেশি কমে ডিসেম্বর মাসে। ওই মাসে লেনদেন হয় ৭ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, যা মাসের হিসেবে সর্বনিম্ন লেনদেন। আর নতুন বছর ২০২৩ সালে এসেও লেনদেনে গতি ফিরেনি। গত দুই মাসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার আশপাশে। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৪৬ কোটি টাকা, যা গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর প্রথম দুই মাস সূচকে ইতিবাচক ধারা থাকলেও কমতে শুরু করে তৃতীয় মাস থেকে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডিএসইএক্স বেড়েছে যথাক্রমে ৩২৩ পয়েন্ট ও ৫৫ পয়েন্ট। এদিকে অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ডিএসইএক্স কমেছে যথাক্রমে ২০৫ পয়েন্ট, ৭১ পয়েন্ট ও ২৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ ওই তিন মাসে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৩০৫ পয়েন্ট। আর নতুন বছরের প্রথম মাসে সূচক ৬০ পয়েন্ট বাড়লেও পরের মাসে ৫০ পয়েন্ট কমেছে। এই সাত মাসের হিসাবে ডিএসইর সূচক পতন হয়েছে ৮২ পয়েন্ট।

বর্তমানে অনেকটাই স্থবির পরিস্থিতির কারণে বহু দিন পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারিতে মতিঝিলের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। বর্তমান অসহায় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে। সম্প্রতি ছোট-বড় বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী ও ট্রেডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাজুক এই পরিস্থিতিতে ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীই টাকা আটকে গেছে। বড় বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ কয়েক মাস আগে শেয়ার বিক্রি করেন, কিছু টাকা নগদ করতে পারলেও আটকা পড়েছেন ছোট বিনিয়োগকারীরা। এখন চেষ্টা করেও শেয়ারের ক্রেতা না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারছেন না তারা। ফলে কোনোভাবেই নগদ অর্থ বের করতে পারছেন না। আটকে গেছে বিনিয়োগের পুরো অর্থে। সামনে রমজান মাস ও ঈদ ঘিরে যে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হয়, তা মেটানো নিয়েও শঙ্কিত।

ডিবিএর সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, বর্তমানে শেয়ারে বিনিয়োগে লোকসান তো আছেই, এর সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের মতো দায়িত্ব রীতিমতো ভোগাচ্ছে। 

তিনি জানান, শেয়ার লেনদেনে যে কমিশন পাচ্ছেন, তা দিয়ে অফিসের দৈনন্দিন খরচই মিটছে না। বেতন-ভাতা দিতে হচ্ছে অন্য জায়গা থেকে। অন্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এভাবে চলতে থাকলে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিরাও বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পোর্টফোলিও সামাল দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। আর বিনিয়োগকারীদের মার্জিন লোনের সুদ আদায় কষ্টকর হয়ে উঠেছে।

আর মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগের সিংহভাগই যেহেতু শেয়ারবাজারে হয়ে থাকে। তাই তিন মাস ধরে কমেই চলছে এসব ফান্ডের সম্পদমূল্য। এতে তারল্যে বড় ধরনের সংকট তৈরি করছে। সম্পদমূল্য ও তারল্য কমলে স্বস্তিতে থাকে না অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো। এ অবস্থা মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষমতা আগের বছরের চেয়ে কমবে। এ অবস্থায় চলতে থাকলে জুন ক্লোজিং মিউচুয়াল ফান্ডগুলো লভ্যাংশ প্রদান নিয়ে সংকট তৈরি করবে বলে মনে করেন এ খাতসংশ্লিষ্টরা। 

এমন পরিস্থিতি থেকে সহসাই উন্নত হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, শিগগিরই এক্সপোজার হিসাব থেকে বন্ডে বিনিয়োগের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে আইন পাস হবে, যা ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা