প্রবা ফটো
এইচএস কোড সুস্পষ্টীকরণে সংশ্লিষ্ট পণ্যের বর্ণনা বিশ্ব কাস্টমস অরগানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) নিয়ম অনুযায়ী বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। রবিবার (৫ মার্চ) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়োজিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের পক্ষে সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ‘রপ্তানিকারক দেশ থেকে পণ্যের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা ডব্লিউসিওর নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের কাস্টমস সিস্টেমে আপডেট করা হয় না। এর ফলে এইচএস কোড ঠিক থাকলেও পণ্যের বর্ণনার ভিন্নতার কারণে কাস্টমস কর্মকর্তারা জরিমানা করেন। এ ছাড়া এইচএস কোড সুস্পষ্টীকরণের অভাবে অহেতুক কাস্টমস হয়রানির মাধ্যমে ব্যবসায় খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটায়।’
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘কথায় কথায় আমাদের শুনতে হয় আমরা এইচএস কোড নিয়ে হয়রানি করছি। এ ছাড়া জরিমানার পরিমাণটাও অযৌক্তিক। আমাদের কনসেপ্ট হলো সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যারা কাস্টমসের সঙ্গে যুক্ত থাকেন; তারা আইন-কানুন খুব ভালো করে জানেন। তারা আনাড়ি নন। সুতরাং মিথ্যা ঘোষণায় দাবি করা হয় অজ্ঞানে, ভুল করে এবং স্বেচ্ছায় করা হয়নি।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ’এইচএস কোড ভুল হয়ে গেলে আমরা ধরে নিই ইচ্ছাকৃত হচ্ছে। মানি লন্ডারিং এবং কর ফাঁকির জন্য ভুল করা হয় এইচএস কোড। এই কনসেপ্ট কাজ করে আমাদের। এই জায়গাটা থামাতে হলে জরিমানার পরিমাণ বা শাস্তির বিধান একটু শক্ত হওয়া দরকার। সে কারণে আমরা শাস্তি দিই ‘ এ সময় ব্যবসায়ীদের সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, লিস্টেড এবং নন-লিস্টেড কোম্পানির মধ্যকার কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানির করপোরেট করের হার আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানো। ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা, কর ও মুসক প্রদানসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সহজে সমাধানের লক্ষ্যে ‘ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইটিএএস)’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস)’ প্রবর্তন করা।
প্রস্তাবনায় আরও জানানো হয়, ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারে ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা হতে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ, ব্যাংকে আমানতের ওপর ১০-১৫ শতাংশ উৎসে কর কর্তন প্রত্যাহারের আহ্বান জানানোসহ বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
এর আগে সকালে কৃষি ও সেবা খাতের ১৪টি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিল। আলোচনায় ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশন টেইলারিং অ্যান্ড টেইলার্স সেবা খাতে ৩০ শতাংশ মূল্য ভিত্তি ধরে নিটমূল্য সংযোজন ভিত্তিতে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ মূসক ধার্য করার প্রস্তাব দেন।
ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইমরান হোসেন খামার মালিকদের আগামী ২০ বছরের জন্য আয়কর রেয়াত ও দেশীয় উৎপাদিত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য ও মাংসের ওপর সকল ভ্যাট প্রত্যাহার চেয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে সাফটা চুক্তি থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি বাতিল ও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন মোহাম্মদ ইমরান।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি স্ট্রিট ফুডসহ সকল খাদ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনা ও শতভাগ রেস্তোরাঁকে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইসের আওতায় আনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ক্যান্টিনে ভ্যাট হার ১ শতাংশ ও ক্যাটারিং সার্ভিসে খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে ভ্যাট হার ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) কৃষিজ পণ্য সরবরাহের বিপরীতে উৎসে কর কর্তনে অব্যাহতি প্রদান, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান উপকরণ হিসেবে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে। হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) এজেন্সিগুলোর জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি কেনার সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সিকিউরিটি সার্ভিসেস কোম্পানিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন করপোরেট কর, মূসক, উৎসে কর ও টার্নওভার করা শূন্য শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) তাদের প্রস্তাবে জানায়, রেজিস্ট্রেশন রি-নিউ করতে হলে ৫০ হাজার টাকা কর দিতে হয়। এই কর থেকে অব্যাহতি চায় বায়রা। বাংলাদেশ অটো রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন ১০ কোটির নিচে মূলধন হলে ৫ বছরের জন্য কর অব্যাহতি চায়। এ ছাড়া সবক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কর নির্ধারণের প্রস্তাব তাদের।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.