প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩ ২০:৪৯ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩ ২১:২১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতে অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে। পরপর সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধের পর অন্যান্য ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার জন্য ভিড় করছেন অনেক গ্রাহক। ব্যাংক খাত নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির জেপি মরগ্যান চেজ অ্যান্ড করপোরেশন, ব্যাংক অব আমেরিকা এবং সিটি গ্রুপ ইনকরপোরেশন থেকেও অর্থ তুলে নিচ্ছেন বিপুলসংখ্যক গ্রাহক।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধের আগে গত সপ্তাহে বড় ব্যাংকগুলোয় গ্রাহক এবং ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ আমানত জমা রেখেছিলেন, সেখানে ভাটা পড়েছে। বিগত সময়ে লেনদেনের প্রবাহও ভালো ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্য নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরও ছোট আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোয় আমানত রাখবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এখন বড় ব্যাংকগুলোতেও তারা আস্থা রাখতে পারছেন না। ফলে তারা কোটি কোটি ডলার অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নিচ্ছেন।
তবে ব্যাংক গ্রাহকদের অর্থ তুলে নেওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন না ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যাদের আমানত আটকে গেছে তাদের উদ্বেগের কারণে সেসব ব্যাংক থেকে অর্থ তুলে অন্য জায়গায় রাখছেন। তবে তাদের অর্থ অন্য কোনো ব্যাংকে রাখার ব্যাপারে অনুরোধ করা হবে না।
গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস মঙ্গলবার তাদের এক প্রতিবেদনে ব্যাংকসংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বরাত দিয়ে বলেছে, ব্যাংক খাতে ধস নামার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং রেটিং প্রদানকারী সংস্থা মুডিস দেশটির ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে। এখন তারা ব্যাংক খাতের অবস্থা নেতিবাচক বলেই মনে করছে। মুডিস বলছে, বর্তমান পরিস্থিতি তহবিল, তারল্য, উপার্জন এবং মূলধনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে সিলিকন ভ্যালি এবং সিগনেচার ব্যাংকের পতনের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর ওপরও। এরই মধ্যে শেয়ারের সূচক কমেছে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক, ওয়েস্টার্ন অ্যালায়েন্স ব্যাংক করপোরেশন এবং কে করপোরেশনের। তবে সোমবার যেখানে ব্যাংকগুলোর সূচক কমেছিল প্রায় ৬০ শতাংশ, মঙ্গলবার তা কিছুটা কমে ৪০ শতাংশে নামে।
এদিকে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গোটা বিশ্বের প্রযুক্তি খাত কেঁপে উঠেছে। বিভিন্ন টেক স্টার্টআপ যতই একে অন্যের থেকে দূরে থাকুক না কেন, এগুলো একে অপরের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে অনেকেই নিজেদের দৈনিক কার্যক্রমের জন্য কোনো মাঝারি আকারের একটি ব্যাংকের ওপর নির্ভর করে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সহকর্মীদের নেতৃত্ব অনুসরণ করে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন স্টার্টআপও ব্যাংকটি থেকে নিজেদের হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম বৃহৎ ব্যাংকের খেতাব পাওয়া এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রযুক্তি খাতের সম্পর্কের কারণে আলাদা পরিচিতি তৈরি হয়েছে। এখানে বিশেষ আর্থিক সেবা পেত বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি।
সূত্র : রয়টার্স