× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

লাখ কোটি ছাড়াল লেনদেন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৩ পিএম

লাখ কোটি ছাড়াল লেনদেন

দেশে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ার পর থেকেই এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির কল্যাণে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে ব্যাংকের বিভিন্ন সেবা। মোবাইলের মাধ্যমে এক মুহূর্তে সর্বত্র টাকা পাঠানো যায়। একই সঙ্গে কেনাকাটার বিল পরিশোধ, ঋণ সুবিধাসহ যোগ হয়েছে নতুন নতুন অনেক পরিষেবা।

বিদেশ থেকে আসছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সও। ফলে মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা। গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। সবশেষ চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা এক লাখ ৫৯৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এমএফএসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা যায়। সেখানে ১৩টি এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, গত জনুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ২৪৫ কোটি টাকা।

তবে এখানে ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’-এর তথ্য যুক্ত হয়নি। নগদের হিসাব যোগ করলে মোট লেনদেন আরও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাবে। সেই হিসাবে এমএফএসে লেনদেন হচ্ছে এক লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর দৈনিক দেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় চার হাজার ২০০ কোটি টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে মোট লেনদেনের মধ্যে টাকা জমা হয়েছিল ৩১ হাজার ২৬০ কোটি ও উত্তোলিত হয়েছিল ২৮ হাজার ৬৮৮ কোটি। ফলে মোট লেনদেনে প্রায় ৬০ শতাংশই ছিল জমা ও উত্তোলন। বাকি ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে ডিজিটালে।

এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সর্বোচ্চ এক লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। পাঁচ বছর আগেও যেখানে লেনদেন হতো ৩৪ হাজার কোটি টাকার মতো। এখন তা লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

দেশে এমএফএস সেবার বড় অংশ দখল করে আছে ‘বিকা‌শ’। সেবার পরিধিও তাদের সবচেয়ে বেশি। প্রতিষ্ঠানটির হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ব‌লেন, বর্তমানে মোবাইল আর্থিক সেবার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে।

এর সঙ্গে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, সৃজনশীল ও সময়োপযোগী নানা সেবা-পরিষেবা যুক্ত হচ্ছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সেবার বিল ও সুরক্ষা ভাতা, উপবৃত্তি ও প্রণোদনা বিতরণে এখন মোবাইলে পরিশোধ করছে।

রেমিট্যান্স আসছে কর্মীদের বেতন-বোনাস দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ ক্যাশলেস লেনদেন অভ্যস্ত হচ্ছেন। এসব কারণে এমএফএস সেবায় লেনদেনের সঙ্গে গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। সামনে ঈদ, কেনাকাটা বাড়বে, সঙ্গে এ সেবার লেনদেনও বেড়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাইক্যাশ, শিওরক্যাশসহ নানা নামে ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ১৩৭ জন। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ১১২ জনে।

এ ছাড়া শুধু নগদে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি গ্রাহক। এ হিসাব যোগ করলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ছাড়াবে ২৫ কোটি। এর কারণ অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছে। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমে হিসাব খুলছে।

এখন গ্রাহকরা ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজেই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন। ফলে গ্রাহক হওয়ার যে ঝামেলা মুক্তভাবে হিসাব খুলতে পারছেন।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরেই আছে নগদ।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সেবা। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের এখন বেতনও দেওয়া হচ্ছে বিকাশে, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাক খাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলে দিনে দিনে নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিশোধ ব্যবস্থায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোভিড-১৯-এর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এমএফএসের আওতা ও লেনদেনের ব্যাপ্তি প্রসারের পাশাপাশি এ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

একই সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করতে এমএফএসের ব্যক্তি হিসাবের লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা