× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১৩ বছরেও হয়নি জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:১৩ পিএম

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫৪ পিএম

১৩ বছরেও হয়নি জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি

নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারার একটি বড় উদাহরণ জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা। প্রকল্পটি ২০০৯ সালে হাতে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ। ফের কিছু কাজ সংযোজন-বিয়োজন করে আরও দেড় বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়।

এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ না করার কারণেই প্রকল্পে দেরি হচ্ছে বলে মনে করছেন পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পটি নিয়ে মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সভাপতিত্ব করেন। 

সভায় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্যামস্টেক অনুবিভাগের উপ-প্রধান জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা প্রকল্প (২য় সংশোধিত) শীর্ষক বিনিয়োগ প্রকল্পটি ২৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে অক্টোবর ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সালের ১৯ জুলাই পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনুমোদন দেন। 

বর্তমানে প্রকল্পের এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধি করে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ৩য় সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ অনুমোদিত ব্যয় থেকে ২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা কমিয়ে ২৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সভায় জানানো হয়, প্রকল্পটিতে ইতঃপূর্বে মেয়াদ বৃদ্ধিসহ দুইবার সংশোধন এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে পাঁচবার মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে প্রকল্পের মূল অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ২৩৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ২৫৮ কোটি টাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর তিন মাসের পরিবর্তে ১৩ বছর ৩ মাস হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্পের মেয়াদ ১৪ বছর ৩ মাস। 

প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনের কারণ হিসেবে প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক জানান, ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ১৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৬২ দশমিক ০৬ শতাংশ।

একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের বাস্তব অগ্রগতি ৯০ শতাংশ হলেও প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ। বিভিন্ন পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে প্রকল্পটির কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। তা ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডার একীভূত হওয়ায় নির্মাণাধীন প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রত্যক্ষ ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫৫০ থেকে ৬০০০ জনে উন্নীত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে অবকাঠামোগত সুবিধা পুনর্নির্ধারণ; অভ্যন্তরীণ সুবিধাদি বৃদ্ধি করে প্রশিক্ষণ উপযোগী করতে আনুষঙ্গিক সামগ্রীর পরিমাণ পুনর্নির্ধারণসহ বায় প্রাক্কলন করা হয়েছে।

বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে প্রশিক্ষণ না হওয়ায় এ খাত বাদ দেওয়া, নির্মাণাধীন একাডেমিক ভবনের চলমান কাজের দরপত্রভুক্ত কিছু কিছু হ্রাসবৃদ্ধিসহ পরপর বহির্ভূত আইটেম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ভবন নির্মাণকাজে ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্পের আওতায় অসম্পন্ন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত প্রকল্প সমাপ্তির মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২২-এর পরিবর্তে যৌক্তিকভাবে মেয়াদ নির্ধারণের জন্য তৃতীয় সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

শেষ পর্যায়ে এসে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে উপ-প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক মাটি পরীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে ৭৪৭টি ৫০ ফুট পাইল দৈর্ঘ্য ধরে টেন্ডার করা হয়। কিন্তু পরবর্তীকাল ৫০ ফুটের পরিবর্তে ৭৫ ফুট ও পাইলের সংখ্যা ৭৪৭টির পরিবর্তে ৭৫০টি নির্ধারণ করায় এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় সুইমিং পুল ভবনের ৯ম ও ১০ম তলা থেকে ছাদে স্থানান্তর হওয়ায় দুটি ফ্লোরে প্রায় ১০০০ বর্গফুট এরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মানসম্মত সুইমিং পুল নির্মাণের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সংশোধিত প্রস্তাবে গবেষণা, সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল, বৃষ্টির পানি ধারণসহ বেশ কিছু খাতের ব্যয় চলমান নির্মাণকাজের মূল দরপত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকায় উক্ত খাতসমূহ বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধিত প্রস্তাবে প্রশিক্ষণ ও সম্মানী খাতসহ মোট ১৮টি অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি, ৫৮টি অঙ্গের ব্যয় হ্রাসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 

প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ নির্ধারণের বিষয়ে ভূতপূর্ব প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এ এস এম কামরুজ্জামান বলেন, প্রকল্পটি সি-ক্যাটাগরিভুক্ত হওয়ায় ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত অনুমোদিত থাকায় প্রকল্পের আওতায় অর্থছাড় করা সম্ভব হয়নি। তিনি প্রকল্পের সমাপ্তির মেয়াদকাল ডিসেম্বর ২০২৩-এর পরিবর্তে জুন ২০২৪ পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।

সভায় প্রকল্পের মেয়াদ অক্টোবর ২০০৯ থেকে জুন ২০২৪ পর্যন্ত নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। সংশোধন প্রস্তাবে প্রশিক্ষণ খাতসহ মোট ৫৮টি অঙ্গের ব্যয় হ্রাস এবং ১৮টি অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি, গবেষণা, সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল, বৃষ্টির পানি ধারণসহ অনুমোদিত খাতসমূহ সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার এবং প্রস্তাবিত নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা আরডিপিপিতে সংযোজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করার বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সাবেক সচিব মামুন আল রশীদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রধান সমস্যা অনভিজ্ঞ প্রকল্প পরিচালক, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, পরিকল্পনা অনুযায়ী সময় মতো কাজ না করা, ফিজিবিলিটি স্টাডি সঠিকভাবে না হওয়া। প্রকল্প নেওয়ার সময় এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে গুরুত্ব দিলে প্রকল্পের এই দশা হয় না। আমাদের দেশে প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর কারণেও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা