ছবি : সংগৃহীত
দিন দিনই অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাংক-সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক সিলিকন ভ্যালির পতনের পরপরই সিগনেচার ব্যাংকের পতন ব্যাংক খাতকে আরও অস্থির করে তুলেছে। এর মধ্যেই সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের অর্থনৈতিক সংকটের খবরে ব্যাংক খাত নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে।
আর্থিক সংকট কাটাতে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জরুরি ভিত্তিতে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে ক্রেডিট সুইস। তবে সংকট মোকাবিলায় সুইজারল্যান্ডের আরেক ব্যাংক ইউবিএসের সঙ্গে ক্রেডিট সুইসকে একীভূত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও শুরুতে অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনা করে ক্রেডিট সুইসের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ দেখায়নি ইউবিএস। তবে অনুরোধের ঢেঁকি গেলাতে চাইলে ইউবিএসের কিছু শর্ত মানতে হবে সুইস সরকারকে। তা হলো, ক্রেডিট সুইসের ৬০০ কোটি ডলারের দায় নিতে হবে সরকারকে।
সোমবার ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে সুইস নিয়ন্ত্রকরা ক্রেডিট সুইসের জন্য একটি সমাধান উপস্থাপন করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানা গেছে। দুটি ব্যাংককে একীভূত করা খুব সহজ কাজ নয় বলে জানান এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘ক্রেডিট সুইসের কিছু অংশ এবং সম্ভাব্য মামলার চার্জ কমানোর খরচ হিসেবে সরকারের কাছ থেকে ৬০০ কোটি ডলারের নিশ্চয়তা চাইছে ইউবিএস। এদিকে একটি সূত্র বলছে, ক্রেডিট সুইসের আস্থার সংকট সমাধানের জন্য আলোচনা বাধার মুখে পড়েছে। কারণ দুই ব্যাংক একত্র হলে কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন হবে।
ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতকে এগিয়ে নিতে একদিকে যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন জোর তৎপরতা চালাচ্ছে, অন্যদিকে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক নড়বড়ে থাকা ক্রেডিট সুইসের ব্যালান্স শিট স্থিতিশীল করতে কোটি কোটি ডলার ঋণসহায়তার জন্য প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট দুজন বিশেষজ্ঞ জানান, আর্থিক সংকট নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউবিএস তার স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে অধিগ্রহণ করার বিষয়ে সুইস কর্তৃপক্ষের চাপের মধ্যে ছিল। কারণ সুইস সরকার ক্রেডিট সুইসের ব্যবসা বন্ধের বিষয়ে ভাবছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত দুই ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্রেডিট সুইস অধিগ্রহণের চুক্তিটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এদিকে অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ইনকরপোরেটেডের সিইও ওয়ারেন বাফেট ব্যাংকিং সংকট নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ।
ক্রেডিট সুইসের শেয়ারমূল্য গত সপ্তাহে এক চতুর্থাংশ কমেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন হয়েছে। এদিকে শেয়ারের দর কমায় সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ নেওয়ার কথা জানিয়েছে ক্রেডিট সুইস। ক্রেডিট সুইস নিয়ে এমন অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন।
বিশ্বের সেরা সম্পদশালী ৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ক্রেডিট সুইস। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের পতনের নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশ্লেষক লটফি কারুই বলেন, ২০০৮ সালের ব্যাংক খাতের বিপর্যয়ের তুলনায় এবারের বিপর্যয় অত গুরুতর নয়। এখন স্থিতিশীলতা আনতে আরও জোরদার নীতি প্রয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ক্রেডিট সুইসের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা না থাকলে ইউরোপীয় ব্যাংক খাত চাপে পড়বে।
সূত্র : রয়টার্স
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.