× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দাম কমছে ছোলার বাড়ছে পেঁয়াজের

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪০ পিএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৫ পিএম

দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত

গত বছর রমজানের আগে ৫০ কেজি ওজনের ২০ বস্তা ছোলা (প্রায় ১০০০ কেজি) বিক্রি করেছিলাম। এবার তার অর্ধেকও বেচাকেনা হয়নি। এবার ৩০ কেজি ওজনের ১৩ বস্তা (প্রায় ৩৯০ কেজি) ছোলা কিনেছি। এর মধ্যে তিন/চার বস্তা ছোলা এখনও রয়ে গেছে।

খুচরা পর্যায়ে ছোলা বিক্রি কমে যাওয়ার এ তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর ঈদগাঁ বরফকল এলাকার সতেজ স্টোরের মালিক মো. ইসরাফিল। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা অনেক কম। গত বছর আমার দোকানে যে পরিমাণ বেচাকেনা ছিল, এবার তার অর্ধেকও নেই। গত বছর একেকটা পরিবার চার-পাঁচ কেজি করে ছোলা নিয়েছে। এবার অনেকে এক-দুই কেজি করে নিচ্ছে। রমজান মাসের সব বাজারও একসঙ্গে নিচ্ছে না।’

খুচরা পর্যায়ে ছোলা বিক্রি কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। রমজান সামনে রেখে সেখানে কমেছে ছোলা বেচাকেনা। যে কারণে রমজানের আগেই দাম কমতে শুরু করেছে খাতুনগঞ্জে। ১৫ দিনের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে ছোলার দাম কমেছে কেজিতে অন্তত ৫ থেকে ৭ টাকা। 


খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বাজারে ভালো মানের প্রতি কেজি অস্ট্রেলিয়ান ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। তানজানিয়ার মাঝারি মানের প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।

এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা ছোলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৯ থেকে ৮০ টাকায়। অথচ ১৫ দিন আগে ভালো মানের ছোলা বিক্রি হয়েছিল ৮৮ থেকে ৯০ টাকায়। 

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বাজারে বেচাকেনা অনেক কম। অন্যান্য বছর রমজান সামনে রেখে শবেবরাতের পর খাতুনগঞ্জে যে পরিমাণ বেচাকেনা হতো, এবার তার অর্ধেকও বেচাকেনা নেই। তাই ছোলাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রে দাম কমছে।

তবে ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন খাতুনগঞ্জের অন্য আড়তদাররা। তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি ছোলা আমদানি হয়েছে। যদিও উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, এবার গত বছরের তুলনায় ছোলা আমদানি কমছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার সমুদ্রবন্দরের বাইরে স্থলবন্দর হয়ে ভারত থেকে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে।

উদ্ভিদ সংঘনিরোধ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের গত ১ জুলাই থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত আট মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৩২১ মেট্রিক টন। অথচ এক বছর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে সমুদ্রবন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ২৩৬ মেট্রিক টন। সমুদ্রবন্দর দিয়ে এবার ছোলা আমদানি কম হলেও ভারত থেকে স্থলপথে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে ছোলার চাহিদা থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে এবার রমজান সামনে রেখে ছোলা আমদানি হয়েছে অন্তত ২ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ আমদানির কারণেই কমছে ছোলার দাম। প্রচুর ছোলা আমদানি হওয়ায় এবার ছোলা আমদানিকারকরা লোকসানে পড়বেন বলে জানিয়ছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের তৈয়্যবিয়া ট্রেডার্সের মালিক সোলায়মান আলম বাদশা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ছোলা আমদানি করে এবার অনেকেই লোকসানে পড়বেন। এবার চাহিদার তুলনায় প্রচুর ছোলা আমদানি করা হয়েছে। 

অস্ট্রেলিয়া, কানাডার পাশাপাশি এবার অনেকে ভারত থেকে স্থলপথে অনেক ছোলা আমদানি করেছেন। সব মিলিয়ে এবার চাহিদার দ্বিগুণ ছোলা আমদানি হয়েছে, তাই বাজারে এখন ছোলার দাম কমছে।

তিনি আরও বলেন, দাম কমে যাওয়ার পেছনে আরও কয়েকটি কারণ আছে। আমদানি করা ছোলার মধ্যে কিছু ছোলার মান তুলনামূলক খারাপ, যেগুলো কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছোলা আমদানি করেছেন, রমজানের মধ্যে ছোলা বিক্রি করতে না পারলে ঋণ পরিশোধ নিয়ে বেকায়দায় পড়বেন। তাই ব্যাংকঋণের কারণেই অনেকে কম দামে ছোলা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে ছোলার দাম কমতির দিকে থাকলেও রমজান ঘিরে বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ মশলাজাতীয় পণ্যের দাম। খাতুনগঞ্জের একাধিক আড়তে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়ে বাজারে এখন ভারতীয় নাসিক জাতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৩ টাকায়, মানভেদে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। এ ছাড়া ভারতের বেল ডাঙার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকায়। 

অন্যদিকে কেজিতে এক মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে মিয়ানমারের আদার দাম। এক মাস আগে যেখানে মিয়ানমারের প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছিল ৬৫ টাকায়। সেখানে এখন বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। 

অপরদিকে ভিয়েতনামের আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। 

পেঁয়াজের আড়তদার খাতুনগঞ্জের এ কে ট্রেডার্সের মালিক আনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ইমপোর্ট পারমিট না দেওয়ায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ছে। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এটি খুব বেশি না। কারণ এখন ৩০ টাকা কেজিতে অনেক সবজিও পাওয়া যায় না। অন্যদিকে বাজারে সরবরাহ সংকটের কারণে আদার দাম বাড়ছে বলে তিনি জানান।

আনোয়ার হোসেন বলেন, চায়না আদার দাম বেড়ে যাওয়ায় কেউ চায়না আদা আমদানি করছে না। তাই বাজারে আদার সংকট, যে কারণে মিয়ানমার এবং তাইওয়ান থেকে যেসব আদা আনা হচ্ছে সেগুলোর দাম বাড়তি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা