× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পুলিশের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ২৮৮ শতাংশ

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ২০:০৮ পিএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ২০:৪৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সরকার সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনায় পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে নেওয়া সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পে ২৮৮ শতাংশ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ব্যয় বাড়ছে শুধু আর্মড ও এসকর্ট ভেহিকেল আমদানিতে। তবে প্রকল্পটিতে গাড়ি আমদানিতে সিডি ভ্যাট বাড়ার কারণে বেড়েছে। সিডি ভ্যাট পরিশোধ করতে না পারায় বেশ কিছু গাড়ি চট্রগ্রাম কাস্টমসে আটকে আছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পটি মঙ্গলবার (২১ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্পটির উপস্থাপনায় দেখা যায়, মূল ডিপিপিতে প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এখন সংশোধিত প্রস্তাবে সেই ব্যয় ২৮৮ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পটিতে অন্যান্য খাতে ব্যয় কমলেও মূল ব্যয় বাড়ানো হয়েছে আর্মড ভেহিকেল ও এসকর্ট ভেহিকেল কেনার ক্ষেত্রে। ১০টি আমর্ড গাড়ি কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। যেখানে প্রতিটির গড় খরচ ১ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এখন মাত্র দুটি গাড়ি বেড়েছে। কিন্তু ব্যয় বেড়েছে ২০১ কোটি ২২ লাখ টাকা। ১২টি আমর্ড গাড়ির দাম এখন ২২০ কোটি ২৮ লাখ ২১ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। ফলে প্রতিটির দাম পড়বে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আর ২০টি এসকর্ট গাড়ি কেনার জন্য মূল প্রকল্পে দাম ধরা হয়েছিল ১২ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এতে প্রতিটির দাম ৬২ লাখ ২৫ হাজার টাকা হয়। কিন্তু এখন ২০টির দাম ধরা হয়েছে মোট ৮১ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ফলে প্রতিটির দাম বৃদ্ধি পেয়ে হচ্ছে ৪ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফ্ল্যাগ লাইট গাড়ি পাঁচটির দাম আগের ৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা থেকে কমে এখন ৫ কোটি ২৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা হয়েছে। এখানে প্রতিটির দাম ১ কোটি ৫ লাখ টাকার কিছু বেশি। 

প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ডিপিপিতে প্রকল্পের আওতায় ভেহিকেলকে স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে শুল্ক কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক সিডি ভ্যাট আরোপের ক্ষেত্রে শুধু লাইট ভেহিকেলকে স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আর্মড ভেহিকেল ও এসকর্ট ভেহিকেলকে বেজ ভেহিকেল হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সে অনুযায়ী সিডি ভ্যাট ক্রয়কৃত ভেহিকেল মূল্যের ৮২৬ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। এরই পরিপেক্ষিতে প্রকল্পটির সিডি ভ্যাট খাতে ব্যয় তথা সমগ্র প্রকল্পব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় উক্ত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) এমদাদ উল্লাহ মিয়ান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রকল্পটি মূলত আর্মড ভেহিকেল ও এসকর্ট ভেহিকেল আমদানিতে ৮২৬ শতাংশ সিডি ভ্যাট বাড়ার কারণে বেড়েছে। সিডি ভ্যাট ভেহিকেলের দামের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এজন্য ব্যয় বেশি মনে হচ্ছে। প্রকল্পের যে ব্যয় বেড়েছে সেটা শুধু সিডি ভ্যাট বাড়ার কারণে। গাড়িগুলো কাস্টমসে পড়ে আছে। তাই প্রকল্পটির আওতায় চলতি অর্থবছরে ২৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ না থাকলেও দিতে হচ্ছে।’

ব্য়য় বাড়ার বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত এসপি (উন্নয়ন) মোশাররফ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ’আগে জাপানের দেওয়া গাড়িগুলো আমদানিতে সিডি ভ্যাট কম ধরা ছিল, কিন্তু কাস্টমস সিডি ভ্যাট অনেক বেশি ধরেছে। তিন ধরনের গাড়ির মধ্যে একটিকে স্পেশাল হিসেবে ধরেছে, কিন্তু বাকিগুলো ধরছে না। গত মাসে গাড়িগুলো এসেছে। সিডি ভ্যাটের জন্য কিছু গাড়ি আটকে আছে। কিছু গাড়ি ছাড় হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংশোধিত প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, সুরক্ষিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ পুলিশকে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। প্রয়োজনীয় সুরক্ষিত যানবাহন ও লজিস্টিকসের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কখনও কখনও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সীমিত জনবল, লজিস্টিকস ও যন্ত্রপাতি দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অপারেশনে সফলতা অর্জন করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশের এই অর্জন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এটা মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের জন্য আর্মড গাড়ি, এসকর্ট গাড়ি ও ফ্ল্যাগ লাইট গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত  নেয় ২০১৯ সালে। বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার লক্ষ্যে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়। জিওবি ও জাপান সরকারের অর্থায়নে এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ বিভাগের দেওয়া প্রস্তাব থেকে জানা গেছে, সন্ত্রাসবাদ ও জননিরাপত্তায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। দুই বছরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৭৯ কোটি ৮৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ২০১৯ সালের মার্চে একনেক থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। যা ২০২১ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কাজ না হওয়াতে এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। তাতে দেখা যায়, তিন বছরে অগ্রগতি মাত্র ৬৩ শতাংশ। অর্থ ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ কোটি টাকার কিছু বেশি বা ৬৭ শতাংশ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা