প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
শুক্রবার ছিল রমজানের অষ্টম দিন। কেনাকাটা জমে উঠতে দেখা গেছে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে। প্রবা ফটো
শুক্রবার (৩১ মার্চ) ছিল রমজানের অষ্টম দিন। কেনাকাটা জমে উঠতে দেখা গেছে রাজধানীর শপিংমল ও বিপণিবিতানগুলোতে। বেশিরভাগ মার্কেটে প্রচুর ক্রেতা দেখা গেছে। মার্কেটের ভেতরে কিংবা আশপাশের রাস্তাগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড়।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদের কেনাকাটা কমে গিয়েছিল। সে অবস্থা কাটিয়ে কেনাকাটার পরিবেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবারই ক্রেতা সমাগম সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর অভিজাত ও বহুল পরিচিত বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, বাহারি রঙ ও ডিজাইনের নতুন নতুন পণ্যে দোকানগুলো সাজানো হয়েছে। জামাকাপড়ের দোকানে ভিড় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি।
বসুন্ধরার জেন্টল পার্কের ম্যানেজার মো. আসিফ জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। করোনার পর এবারের ঈদে বেচাকেনা অনেক ভালো। তিনি বলেন, এবার ঈদ গরমের সময় হওয়ায় আমরা সামার ফেব্রিক অর্থাৎ কটনকে গুরুত্ব দিয়েছি। ক্রেতার সমাগমও বেশ ভালো।
মার্কেটের লুবনান পাঞ্জাবির ব্যবস্থাপক মনির হোসেন জানান, গতবারের তুলনায় এবার ক্রেতাদের ভিড় বেশ ভালো। তবে পুরোদমে শুরু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। মাসের শেষ দিক হওয়ায় চাকরিজীবীদের হাত প্রায় খালি। আগামী সপ্তাহ থেকেই পুরোপুরি জমে উঠবে কেনাকাটা।
তিনি জানান, এবার ঈদে তারা ক্রেতাদের জন্য গিফট রেখেছেন। তা ছাড়া বিশেষ ছাড়ও রয়েছে। ঈদ সামনে রেখে তারা নতুন নতুন কালেকশন এনেছেন। এবার তাদের দেশীয় পাঞ্জাবির পাশাপাশি ইন্ডিয়ান পাঞ্জাবিরও ব্যাপক কালেকশন রয়েছে। ঈদের সময়ে এবার গরম থাকছে, সেজন্য তারা এবার সুতি কাপড় ও হালকা রঙকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
ঈদ উপলক্ষে মার্কেটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশেষ ছাড়ও ঘোষণা করেছে। বডিশপ প্রশাধনীর সেলস্ এক্সিকিউটিভ রিয়াদ হোসাইন জানান, তারা এবার ঈদে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছেন। এবার ঈদেও তারা স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রত্যেক ক্রেতার জন্য থাকছে বিশেষ উপহার। গত বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা সমাগম ভালো আছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি বেচাবিক্রির আশা করছেন।
আল হারামাইন আতর ও পারফিউমের সিনিয়র বিক্রয় প্রতিনিধি শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ঈদে তারা এবার মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাদের সাধ্যের কথা মাথায় রেখে নতুন কিছু পোডাক্ট বাজারে এনেছেন। আতরের দাম এক হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখছেন। আর পারফিউমের দাম দুই হাজার ৩০০ টাকা থেকে ২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
পণ্যের দাম নিয়ে অস্বস্তি
ঈদের শপিং শেষে কথা হয় তানভীর-সাথী দম্পতির সঙ্গে। তারা এসেছেন কাঁঠালবাগান এলাকা থেকে। পেশায় ব্যবসায়ী তানভীর বলেন, প্রথম দিকেই কেনাকাটা সেরে নিলেন। ভিড় তুলনামূলক এখন একটু কম থাকায় পছন্দ অনুযায়ী দেখে কেনা যায়। পরিবারের সবার জন্য কিছু না কিছু কিনেছেন। তবে অল্পকিছু এখনও বাকি আছে, শেষ দিকে কিনবেন।
তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি। তার কাছে মনে হয়েছে ৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে। আজকে সব মিলিয়ে ৬০ হাজার টাকার শপিং করেছি।
বেসরকারি চাকরিজীবী আবিদ হাসান। এসেছেন ছোট ভাইয়ের জন্য পাঞ্জাবি কিনতে। একটি পাঞ্জাবির দোকানের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন প্রায় ১০ মিনিট। তিনি বলেন, কয়েকটি দোকান ঘুরেছেন, তার কাছে মনে হয়েছে, এবার ঈদে ২০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এ ছাড়া ক্রেতাদের কাছে টানতে মোবাইল ফোনসহ নানা দোকানিরা বিভিন্ন আঙ্গিকে দিচ্ছেন লোভলীয় ও আকর্ষণীয় অফার। এবার ঈদে গত কয়েক ঈদের লোকসান কাটিয়ে উঠবে বলে আশাবাদী সব শ্রেণির বিক্রেতারা।