প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩ ১৮:১৪ পিএম
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩ ১৮:৪৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে উন্নত সাতটি দেশের (যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য) সংগঠন জি-৭। চলতি সপ্তাহে জাপানে অনুষ্ঠিত জোটভুক্ত দেশগুলোর বৈঠকে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে বলেও জানিয়েছেন জি-৭-এর নেতারা।
তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়ার যুদ্ধে সহায়তা করছে তাদের জ্বালানি শক্তি। দেশটির জ্বালানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।
জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭-এর আগামী ১৯ থেকে ২১ মের বৈঠকে রাশিয়ার সঙ্গে তৃতীয় দেশগুলোর বাণিজ্যের বিষয়েও আলোচনা করা হবে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়া যেহেতু এসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করছে এবং তাদের এই বাণিজ্য সামরিক খাতে ভূমিকা রাখছে, ফলে এ বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আশা করছেন, জি-৭ সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে একমত হবে। অন্তত নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে সম্মত হবে। এ ছাড়াও যেসব পণ্য অনুমোদিত রপ্তানি তালিকাভুক্ত থাকবে না সেসব পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে।
এর আগেও বাইডেন প্রশাসন জি-৭ জোটকে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করেছিল। সে সময় তারা বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র সে সমস্ত পণ্য রাশিয়ার কাছে বিক্রি করার অনুমতি দেয় যেগুলো কালো তালিকাভুক্ত নয়।
হঠাৎ বৈশ্বিক এমন পরিবর্তন মস্কোর জন্য নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াকে কঠিন করে তুলতে পারে। তবে যে এলাকায় জি-৭-এর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গা বিশেষ করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প ঘাঁটির সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলো নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আসা উচিৎ।’
রাশিয়ার ওপর জি-৭-এর নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তখনোই জোরালো হচ্ছে, যখন পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠার উপায় খুঁজছে মস্কো। ইতোমধ্যেই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ভিসা বিধিনিষেধ এবং তেলের দামের সীমাবদ্ধতাসহ নানামুখী পশ্চিমা চাপে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। এমনকি নিষেধাজ্ঞার ১১তম প্যাকেজ নিয়ে আবার আলোচনা করছে ইইউ। এ বিষয়ে জার্মান সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘কিছু নির্দিষ্ট বিষয় বাদ দিয়ে প্রথমেই আমরা রাশিয়ার সবকিছু নিষিদ্ধ করেছি। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একেবারে সুনির্দিষ্ট হতে চাই এবং অনিচ্ছাকৃত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে চাই।’
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চলতি সপ্তাহে পোপ ফ্রান্সিস এবং ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ইউরোপে রয়েছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, হিরোশিমায় তাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময় জেলেনস্কি কার্যত ব্যক্তিগতভাবে জি-৭ নেতাদের সামনে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার ওপর আনা নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ গত মাসে বলেছিলেন, জি-৭ যদি রপ্তানি নিষিদ্ধ করে তাহলে মস্কো ‘ব্ল্যাক সি’ শস্য চুক্তি বাতিল করবে। যা ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথ। আমরা আশা করছি, যুদ্ধপরবর্তী সময়ের খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়টিও জি-৭ বিবেচনায় রাখবে।
সূত্র : রয়টার্স