× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সোনালী ব্যাংক

অবলোপনকৃত ঋণের ৯৩ শতাংশই ২০ শাখায়

জয়নাল আবেদীন

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ১১:১১ এএম

আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ১৩:০৮ পিএম

সোনালী ব্যাংক। ফাইল ফটো

সোনালী ব্যাংক। ফাইল ফটো

সরকারি সোনালী ব্যাংকের ২০২২ সাল শেষে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ২০ শাখারই ৬ হাজার ২১১ কোটি টাকা, যা মোট অবলোপনকৃত ঋণের ৯৩ শতাংশ। কিন্তু বছরের পর বছর চেষ্টা করে সামান্যই আদায় করতে পারছে ব্যাংকটি। 

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ১৬৭ কোটি টাকা আদায়ের পর ৬ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকায় ঠেকেছে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ। ২০২৩ সালে ১ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ব্যাংকটি। কিন্তু প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) মাত্র ১৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৭ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ১২ হাজার ৬০ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৫.৪৫ শতাংশ।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি ও অবলোপন হওয়া ঋণ থেকে প্রতি বছর আদায়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সোনালী ব্যাংক। কিন্তু কোনো বছরই ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। এমনকি বেশিরভাগ শাখা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও আদায় করতে পারে না। 

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের লোন রিকভারি বিভাগের প্রধান (ডিএমডি) মীর মোজাফ্ফর হোসেইন বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের চেষ্টা চলছে। এগুলো এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। বেশিরভাগই অনেক দিন আগের দেনা। তা ছাড়া আমরা এসব ঋণ আদায়ের জন্য প্রচলিত নিয়মানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ছয়জন ডিএমডির অধীনে স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তারাও তদারকি জোরদার করেছে। আশা করছি শিগগিরই এর ফলাফল পাওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে যাই হোক, আগামী জুন মাসের মধ্যে ১০ শতাংশের নিচে খেলাপি ঋণের হার নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমরাও ওই নির্দেশনা পরিপালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।’

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল করপোরেট শাখার মোট অবলোপন ১ হাজার ২২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পুরো সোনালী ব্যাংকের মধ্যে ওই শাখায়ই সবচেয়ে বেশি ঋণ অবলোপন হয়েছে। এর পরে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখা। ২০২২ সাল পর্যন্ত এ শাখা থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা অবলোপন হয়েছে। এর পরে যথাক্রমে স্থানীয় কার্যালয় শাখার ৮৯৬ কোটি ৩০ লাখ, দিলকুশা করপোরেট শাখার ৬৯৬ কোটি ৬৪ লাখ, নারায়ণগঞ্জের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার ৪৯৩ কোটি ৬৩ লাখ, আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার ৪২৭ কোটি ২১ লাখ, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ করপোরেট শাখার ২৭৬ কোটি ৪৮ লাখ, বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখার ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ, লালদীঘি করপোরেট শাখার ২৬৬ কোটি ৬২ লাখ ও ফরিদপুর করপোরেট শাখার ১২৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা অবলোপন করা হয়েছে।

গত ৫ জানুয়ারি খেলাপি ঋণ কম দেখাতে ঋণ অবলোপন (রাইট অফ) নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়মে এখন থেকে পাঁচ লাখ টাকার খেলাপি ঋণ মামলা না করে অবলোপন করে ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র থেকে বাদ দিতে পারবে ব্যাংক। এতদিন দুই লাখ টাকা অবলোপনের সুযোগ ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুসারে, ব্যাংকের মন্দমানের খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন আদায় না হলে তা ব্যাংকের মূল ব্যালান্স শিট থেকে আলাদা করে অন্য একটি লেজার বুকে সংরক্ষণ করা হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় যা ঋণ অবলোপন বা রাইট অফ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আওতায় ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলো ঋণ অবলোপন করে আসছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঋণ আদায় না করে যদি ‘রাইট অফ’ কৌশল বেছে নেওয়া হয়, তাহলে এক সময় ব্যাংকের মূলধনও শেষ হয়ে যায়। তাই এটাকে ভালোভাবে নেওয়া যাচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “যদি এমন হতো ব্যাংকগুলো ‘রাইট অফ’ করে জোর দিয়ে ঋণ আদায় করছে, তাহলে এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতাম। কিন্তু তারা শুধু ব্যালান্স শিট ঠিক রাখতেই রাইট অফ করছে। ফলে বাইরে থেকে লোকজন মনে করছেন তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো। আসলে কিন্তু তা নয়।” 

খেলাপি ঋণ কমাতে অবশ্যই ঋণ আদায়ে জোর দিতে হবে- এমন পরামর্শ দিয়ে সাবেক এ গভর্নর আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে ঋণ আদায়ের টার্গেট দিতে হবে। টার্গেট পূরণ করতে না পারলে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা কমিয়ে দিতে হবে। তাদের বলতে হবে, যতটুকু ঋণ আদায় করতে পারবে, ততটুকু ঋণ দিতে পারবে। তা না হলে খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব নয়।’

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল করপোরেট শাখার মোট অবলোপন ১ হাজার ২২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পুরো সোনালী ব্যাংকের মধ্যে এই শাখাতেই সবচেয়ে বেশি ঋণ অবলোপন হয়েছে। এরপর রয়েছে নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখা। ২০২২ সাল পর্যন্ত এ শাখা থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, এরপর যথাক্রমে স্থানীয় কার্যালয় শাখার ৮৯৬ কোটি ৩০ লাখ, দিলকুশা করপোরেট শাখার ৬৯৬ কোটি ৬৪ লাখ, নারায়ণগঞ্জের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার ৪৯৩ কোটি ৬৩ লাখ, আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার ৪২৭ কোটি ২১ লাখ, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ করপোরেট শাখার ২৭৬ কোটি ৪৮ লাখ, বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখার ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ, লালদীঘি করপোরেট শাখার ২৬৬ কোটি ৬২ লাখ ও ফরিদপুর করপোরেট শাখার ১২৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা অবলোপন করা হয়েছে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা