প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ১৪:০৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ দ্রুত শিল্প উন্নয়ন। আধুনিক বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মেলাতে শিল্পায়ন প্রয়োজন হলেও পরিবেশ দূষণ রোধে শিল্প কারখানাগুলোকে আইনের আওতায় আনা উচিত। যেকোনো উন্নয়নে পরিবেশ সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবেশ দূষণ ও প্রতিকার বিষয়ে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। একইসঙ্গে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পন্য নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর হলিস্টিক স্ট্যাডিজ’ এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এস পি গৌতম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
এস পি গৌতম তাঁর প্রবন্ধে বলেন, মূলত আকাশ, বাতাস, পানি, আগুন এবং পৃথিবী এই পাঁচটি কম্পোনেন্ট নিয়েই পরিবেশ। আর এগুলো নিয়েই মানুষের সৃষ্টি। পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এগুলোকে রক্ষা করতে হবে, না হলে এগুলো মানব জাতিকে ধংষ করে দেবে।
পরিবেশ দূষণের মূল কারণ হিসেবে তিনি অপরিকল্পিত দ্রুত শিল্পায়নকেই দায়ি করেছেন। গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, ফার্মাসিটিক্যাল, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, ট্যানারি শিল্প, রাসায়নিক সার কারখানা, তেল শোধনাগার, কীটনাশক উৎপাদনসহ ১৭টি শিল্পকে উচ্চ দূষিত হিসেবে আক্ষায়িত করেন তিনি।
এস পি গৌতম বলেন, দ্রুত শিল্পায়ন পানি এবং বায়ু দূষণ ঘটায় একইসঙ্গে কঠিন বর্জ্য তৈরী করে। এধরণের দূষণ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে দরিদ্র মানুষদের। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব আছে একইভাবে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। শিল্প উন্নয়ন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এজন্য আইনের প্রয়োগ করা জরুরী।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পরিবেশন দূষণ রোধ করতে চাইলে সবার আগে প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে কোনো প্রকল্প অনুমোদনের আগে দেখা হচ্ছে এর দ্বারা পরিবেশ বা জীব বৈচিত্রের কোনো ক্ষতি হবে কি না। উন্নয়ন কাজে ইটিপি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিও পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির কারণেও পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। কল কারখানর বর্জ্য নিয়ে চিন্তা না করে তারা বেশি মুনাফার চিন্তা করে।
তিনি বলেন, পরিবেশের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে সকলের দায়িত্ব নিতে হবে। যারা বেশি পরিবেশ দূষণ করবে তাদের অতিরিক্ত দায় নিতে হবে। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতির পেছনে পশ্চিমা বিশ্বের দায় সবচেয়ে বেশি থাকলেও তারা অতিরিক্ত দায় নিতে চায় না, তারা শুধু সাধারণ দায়িত্ব নিয়ে সরব থাকে।