× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাক্ষাৎকার

বাজেট হতে হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার

জাহিদুল ইসলাম

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১৬:৩৩ পিএম

বাজেট হতে হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার

সৈয়দ আলমাস কবির। বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) সভাপতি। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে নিজের ভাবনার কথা বলেছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে। বাজেট মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জাহিদুল ইসলাম

আগামী অর্থবছরের বাজেটের চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?

সৈয়দ আলমাস কবির : আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ, ভর্তুকি এবং উচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর সময়মতো সমাপ্তিসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজেট ঘাটতি প্রতিবারের মতোই একটা বড় সমস্যা, আগেও এ ঘাটতি ছিল, কিন্তু সেই সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য ও রেমিট্যান্স স্বস্তি নিয়ে আসত। কিন্তু এবার সেটা হুমকির মুখে। বিশ্বব্যাংক ও এডিবি যে প্রবৃদ্ধির হিসাব দিচ্ছে তা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। বিশ্বব্যাংক আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ এবং এডিবি অনুমান করছে ৫.৩ শতাংশ। তাই নতুন অর্থবছরে ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

বাজেটে কোন কোন দিকে অধিক মনোযোগী হওয়া উচিত?

সৈয়দ আলমাস কবির : প্রবৃদ্ধির ধারা ইতিবাচক রাখার জন্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার, সে জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে রাখা ও সরকারের বিনিয়োগ কর্মসূচি সীমিত রাখতে হবে। ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে না পারায় রপ্তানিযোগ্য পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে দেশের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হুমকির মুখে পড়বে, একই সঙ্গে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। আর তা যদি হয় তবে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দিতে না পারায় আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো তাদের বৈদেশিক বাজার হারাবে।

এ সংকট কাটাতে করণীয় কী?

সৈয়দ আলমাস কবির : সরকারকে কর আদায় অটোমেশন করে ফেলা, মূল্য সংযোজন কর ও আয়করের পরিধি বৃদ্ধি এবং বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে হবে। নতুন বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথাও সরকারের বিবেচনা করা উচিত। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার করা জরুরি। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষকে আরও সুরক্ষার আওতায় আনতে হবে এবং সে জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বাজেটে আয়-ব্যয়ের একটা ভারসাম্য রাখতে হবে। সে জন্য অতিরিক্ত খরচ এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে এখনি প্রয়োজন হবে নাÑ এমন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ না করাটা কল্যাণকর হবে।

মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা কি সম্ভব?

সৈয়দ আলমাস কবির : দেখুন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে নেই। আন্তর্জাতিক বাজারের যে অস্থিরতা আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়েছে, এটা সত্য। বিশ্বায়নের এই যুগে যুদ্ধের প্রভাবে প্রতিটি দেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের মেরূকরণ ঘটছে। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ডলার সংকট ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম পরবর্তী সময়ে কমলেও আমাদের দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। এসব সংকট কাটানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং উৎপাদনের কাঁচামালে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ছাড়াও আরও সূক্ষ্ম পরিকল্পনা দরকার। 

একটি আদর্শ বাজেট বলতে আসলে আমরা কী বুঝি?

সৈয়দ আলমাস কবির : বাংলাদেশের মতো একটি দেশের জন্য একটি আদর্শ অর্থনৈতিক বাজেট এমন হওয়া উচিত যেখানে সরকারের একটি সুপরিকল্পিত আর্থিক পরিকল্পনা থাকবে, যা প্রতিটি অর্থবছরেই সরকারের প্রত্যাশিত রাজস্ব এবং ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখবে। বাজেট সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার শক্তি দেবে এবং এর টেকসই অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে।

বন্দরের সক্ষমতা নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অনেক পুরোনো, বর্তমানে বন্দরগুলোর অবস্থা কেমন?

সৈয়দ আলমাস কবির : বাংলাদেশের বন্দরের সক্ষমতা নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পুরোনো হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্দরের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সরকার চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা বন্দরগুলোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বন্দরগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উন্নয়নগুলো করা হয়েছে। গত এক দশকে ৫ লাখ ৮০ হাজার বর্গমিটার ইয়ার্ড নির্মাণের ফলে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ৫৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে অটোমেটেড বন্দরে পরিণত করা হয়েছে। বার্থিংও ডিজিটালভাবে হচ্ছে। এরই মধ্যে মাদার ভেসেল নোঙরের ব্যবস্থা হয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দরগুলো চালু হলে সেটা হবে অর্থনীতির জন্য গেমচেঞ্জার।

মালয়েশিয়ার সঙ্গে বর্তমানে আমাদের বাণিজ্যের অবস্থা কেমন?

সৈয়দ আলমাস কবির : বিএমসিসিআই বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে সাম্প্রতিক ব্যবসায়িক সমস্যাগুলোর ওপর সেমিনার আয়োজন, ব্যবসায়িক ফোরাম, বাণিজ্য মেলা, ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের মধ্যকার অভিজ্ঞতা বিনিময় ইত্যাদি আয়োজনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১১-১২ সালে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় ৫৬.১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। এখন এটি বেড়ে ২০২১-২২ সালে ৩৩৭.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। যদিও এই অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সেখানে ১২.১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘাটতি রয়েছে। রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা মিস করা সত্ত্বেও বাংলাদেশ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১০.১৯ শতাংশ ইতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা গত বছর ৩০৬.৫৭ মিলিয়ন ডলার ছিল।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা