× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পিরোজপুরে দিনমজুরের হাট

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩ ১৩:০৮ পিএম

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৩ ১৩:১২ পিএম

কাজের অপেক্ষায় দিনমজুর। ছবি : সংগৃহীত

কাজের অপেক্ষায় দিনমজুর। ছবি : সংগৃহীত

দিনমজুরদের হাট, যে হাটের পণ্য মানুষ নিজেই। যেখানে মানুষ চুক্তিভিত্তিক দিনব্যাপী শ্রম দেওয়ার জন্য নিজেকে হাটে তোলে। পণ্যের মতো দর-কষাকষি করে কেনাবেচা হচ্ছে মানুষের শ্রম। পিরোজপুর জেলায় এই হাট দুই জায়গায় বসে সপ্তাহে দুই দিন রবি ও বুধবার। এর মধ্যে স্বরূপকাঠি উপজেলায় মাদ্রা গ্রামের দিনমজুরের হাটটি সবচেয়ে বড়। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমজীবী মানুষ দলে দলে এই হাটে শ্রম বিক্রির জন্য আসে। এদের শ্রম বিক্রি হয় দিন, সপ্তাহ কিংবা মাস চুক্তিতে।

স্বরূপকাঠির মাদ্রা হাট ঘুরে দেখা যায়, দলে দলে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ। শ্রমিক কিনতে আসা পক্ষটি ঘুরে ঘুরে মানুষ খোঁজে তার কাজের জন্য। পছন্দমতো মানুষ পেলে তার সঙ্গে কথা বলে দর-কষাকষির মাধ্যমে মজুরি নির্ধারণ করে। শ্রম বিক্রি করা এসব মানুষ অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের সঙ্গে তাদের বাড়ি যায়। তাদের সঙ্গে থাকে নিজের দৈনন্দিন ব্যবহারের কাপড়-চোপড়ের পুঁটলি, কাস্তে, কোদালসহ কাজের ক্ষেত্র অনুসারে জিনিসিপত্র। 

স্বরূপকাঠি উপজেলায় বর্তমান মৌসুমে এসব শ্রমজীবী দিনমজুরের চাহিদা ও মজুরি বেড়ে যায়। ভরা মৌসুমে প্রতিজন কৃষি শ্রমিকের দৈনিক মজুরি নির্ধারিত হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। মৌসুমের কাজ কমে এলে মজুরি নেমে আসে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। সঙ্গে থাকে দুই বেলা খাবার ও থাকার জায়গার ব্যবস্থা।

বাজারে শ্রম বিক্রি করতে আসা কিশোর বিশ্বাস বলেন, যেদিন নিজের শ্রম বিক্রি করতে পারেন না, সেদিন তাদের রাত কাটে বাজারের কাছাকাছি কোনো স্কুলঘরের বারান্দায়। কখনও আধা পেট বা কখনও উপোস করে রাত কেটে যায় তাদের।

এসব হাট-বাজারে শ্রম বিক্রি করতে আসা মানুষদের বেশিরভাগেরই বাড়ি পিরোজপুর জেলা, বাগেরহাট ও ঝালকাঠির বিভিন্ন উপজেলায়। নাজিরপুর এবং পদুয়ার বাজারে কথা হয় বাগেরহাটের খোচরাখলি গ্রামের সুশান্ত মজুমদার (৩০) এবং একই গ্রামের সন্তোষ হাওলাদারের (৩৯) সঙ্গে। নিজদের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে তারা কাজের আশায় এসেছেন এই এলাকায়। শ্রম বিক্রি করে পরিবার-পরিজনের চাহিদা মেটাতেই এই পথে এসেছেন তারা। 

নাজিরপুর উপজেলার শেখমাঠিয়া গ্রামের সাধু হালদার বলেন, এক গৃহস্থের ক্ষেত পরিষ্কার করেছি। গৃহস্থ দিনে ও রাতে তিন বেলা খেতে দিয়েছে। রাতে ঘুমের জন্য কাঁথা-বালিশ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, গৃহস্থ ভালো হলে থাকা ও খাবারের অসুবিধা হয় না। তবে অনেক সময় অনেক গৃহস্থ কাজের মানুষকে মানুষই মনে করে না।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজের খোঁজে আসা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব এলাকায় শ্রম বিক্রি করে তারা যা আয় করবেন, তা বাড়ি নিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ ও অন্যান্য কাজে লাগাবেন। কৃষির ভরা মৌসুমে তাদের এলাকায় শ্রমিকের মজুরি খুব কম। তবুও মৌসুমে তারা তাদের এলাকায় কাজ করেন। এলাকায় করার মতো কোনো কাজ না থাকলেই তারা বেরিয়ে পড়েন কাজের সন্ধানে। আসেন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির মাদ্রা গ্রামে। এখানে বিভিন্ন কৃষিকাজ করে কিছু রোজগার করে বাড়ি ফিরে যান। এভাবেই কাজের মৌসুমে এদের অনেকেই আসেন এই এলাকায়। কিছু রোজগার হলে এটা তাদের পরিবারের জন্য কিছুটা হলেও আর্থিক সচ্ছলতা এনে দেয়।

মাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তহিদ্দুল ইসলাম (তহিদ) বলেন, এই মাদ্রা গ্রামে ৩৫-৩৬ বছর ধরে এই হাট বসে। এখানে পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ নিজেদের দিনমজুর হিসেবে বিক্রি করতে এসে থাকে। ঐতিহ্যগতভাবেই এই গ্রামের হাটে শ্রম বিক্রির জন্য মানুষের হাট বসে থাকে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা