× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩ ১০:৫০ এএম

আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:০৪ পিএম

কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাঁওতা গ্রামে পাট কাটায় ব্যস্ত কৃষক। প্রবা ফটো

কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাঁওতা গ্রামে পাট কাটায় ব্যস্ত কৃষক। প্রবা ফটো

কুষ্টিয়ায় এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি নেই। তার ওপর পাটের বর্তমান বাজারদর নিয়ে চিন্তিত তারা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কা। বিভিন্ন সময়ে দরপতন, ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, শ্রমমূল্য বৃদ্ধি ও জাগ দেওয়ার পানির অভাবে কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। অনেকে পাট চাষ ছেড়ে শাকসবজি ও মরিচ চাষে ঝুঁকছেন।

কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় পাট চাষে কৃষকরা ভারতীয় একটি জাতের বীজের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ বছর অতিরিক্ত খরা ও পোকামাকড়ে আক্রান্ত হওয়ায় আশানুরূপ ফলন মেলেনি। তবে এ ব্যাপারে প্রযুক্তি সহায়তাসহ নতুন জাত সম্প্রসারণে কাজ করছেন তারা।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে ৬ উপজেলায় ৪১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু চাষ হয়েছে ৩৭ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় চার হাজার হেক্টর কম। 

এদিকে আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ শুরু হয়েছে। এখন পাট কাটা ও জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। তবে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তিত কৃষকরা। পানির অভাবে পাট পচানো নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। পর্যাপ্ত পানি পাওয়া না গেলে পাটের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। 

কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাঁওতা গ্রামের কৃষক মেজবার আলী বলেন, ‘বর্তমানে একজন দিনমজুরের ৫০০-৬০০ টাকা হাজিরা। তার ওপর বেড়েছে বিভিন্ন কৃষি উপকরণের দাম। এক বিঘা জমিতে পাট হয় ৫-৬ মণ। পাট কেটে তা জাগ দিয়ে শুকিয়ে ঘরে তুলতে মণপ্রতি দুই হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতিবছর মণপ্রতি পাটের বাজার মূল্য ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে পাট চাষে আমাদের প্রতিবছর লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।’

আছালত শেখ নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘খাল-বিলে অধিকাংশ সময় পানি থাকে না। আবার কোনো কোনো খালে মাছ চাষ করায় পানি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় পাট জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশ সমস্যা হয়। তাই পাট চাষে তেমন আগ্রহ নেই।’ 

বাঁধ বাজার গ্রামের কৃষক মির্জা শেখ বলেন, ‘চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করে জাগ দেওয়ার পানির অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তা ছাড়া উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এখন পাট চাষ ছেড়ে দিয়ে শাকসবজি ও মরিচের চাষ করছি। এতে পরিশ্রম কম, লাভ বেশি।’

উৎপাদন খরচসহ সবধরনের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি করার দাবি জনিয়ে আমজেদ আলী নামে এক কৃষক বলেন, ‘পাটের জন্য কুষ্টিয়ার খ্যাতি রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে প্রতিমণ পাটের মূল্য তিন হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করলে আমরা লাভবান হতে পারব। না হয় প্রতিবছর লোকসান গুনতে হবে। পাট চাষে অন্য অনেকের মতো এখনও যাদের আগ্রহ আছে তা হারিয়ে যাবে।’ 

জানতে চাইলে কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হায়াত মাহমুদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন জাতের বীজ, সার, প্রণোদনা প্রদান এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে সবরকম সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এতদিন জেলায় কৃষকরা পাট চাষে ভারতীয় জাত জেআরও-৫২৪ বীজের ওপর নির্ভরশীল ছিল। অতিরিক্ত খরা ও পোকামাকড়ে আক্রান্ত হয়ে এই জাতটি কৃষকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। কৃষকদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত জাত বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) চাষ জেলায় জনপ্রিয় করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা