ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১২:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৩:০৫ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা। প্রবা ফটো
দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। কারখানার মেশিনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই সেখানে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। ইতোমধ্যে কারখানার মেশিনগুলো থেকে কাপড় বোনার কাজ শুরু হয়েছে।
বুধবার (২ আগস্ট) শহরের গোবিন্দনগরস্থ ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন-নতুন শ্রমিকের কর্মচাঞ্চল্যে প্রাণ ফিরেছে কারখানায়। শ্রমিকরা মেশিনগুলো পরিষ্কার করে সুতা লাগিয়ে কাপড় বোনা শুরু করেছেন।
একসময় ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানায় উৎপাদিত হতো মসৃণ সিল্ক কাপড়। এর মধ্যে ২০টি পাওয়ার লুম, ২০টি তাঁত রয়েছে। এ ছাড়াও পাওয়ার লুম ও হ্যান্ড লুমগুলোও সচল করা হয়েছে। রেশম কারখানা বন্ধ হওয়ার পর প্রায় ৫ হাজার রেশম চাষি বেকার হয়ে পড়েছিলেন। এর মধ্যে ২ থেকে ৩ হাজার চাষি রেশম চাষ ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু তুঁতগাছের অভাবে তারা গুটিপোকা পালন করতে পারছিলেন না। তাই কারখানাটি চালুর ফলে রেশম চাষের সঙ্গে যুক্ত ৫ হাজার বা তার অধিক চাষির আবারও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। চাষিদের গুটিপোকা পালনের মাধ্যমে তাদের সুতা দিয়ে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানায় উৎপাদিত মসৃণ সিল্ক কাপড় আবারও বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সুপ্রিয় গ্রুপ।
কোম্পানির চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান বলেন, আমরা খুবই আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটি চালুর ব্যাপারে ইতোমধ্যে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে। কারখানা বন্ধের পর যেসব শ্রমিক কর্মক্ষম হয়ে পড়েছিলেন, পুরোনো আটজনসহ মোট ২৫-৩০ জন শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়েছে। মেশিনগুলো আবারও সচল করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন মেশিন কেনা হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের রেশমের আগে থেকেই একটি ঐতিহ্য রয়েছে। কারখানাটি চালুর ফলে এখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ঠাকুরগাঁওয়ে খুবই উন্নত ও ভালো মানের রেশম উৎপাদন করা হয়। দেশ ও দেশের বাইরে ঠাকুরগাঁওয়ের উৎপাদিত রেশমের বেশ চাহিদা রয়েছে। সেই চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭৭-৭৮ সালে বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস ঠাকুরগাঁওয়ে এই রেশম কারখানাটি স্থাপন করে। ১৯৯৫ সালে রেশম কারখানাটি আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে। লোকসানের অজুহাতে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। জমি, যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সবই রয়েছে কারখানটিতে।