ভারত থেকে এলো ৬৫ হাজার কেজি কাঁচা মরিচ

ভারত থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এক দিনেই ৬৫ হাজার ৮৫৫ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতীয় ৯টি ট্রাকে করে এসব কাঁচ মরিচ আমদানি করা হয়। এতে দেশের বাজারে কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়ায় কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৫০ টাকা করে কমেছে। দুদিন আগেও বন্দরে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমায় খুশি বন্দরে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা পাইকারসহ নিম্নআয়ের মানুষ।

হিলি স্থলবন্দরে কাঁচামরিচ কিনতে আসা মোস্তফা হোসেন বলেন, দেশীয় কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধির কারণে বাজারে আমদানিকৃত ভারতীয় কাঁচা মরিচের চাহিদা রয়েছে। সেই কারণে আমরা বন্দর থেকে কাঁচামরিচ ক্রয় করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছি। বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচা মরিচ আমদানির ফলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু হঠাৎ করে গত সপ্তাহ থেকে কাঁচামরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। কাঁচা মরিচের দাম বাড়তে বাড়তে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় উঠে যায়। বাড়তি দামের কারণে আমাদের কাঁচা মরিচ কিনতে বিপাকে পড়তে হচ্ছিল। বর্তমানে কাঁচা মরিচের আমদানি বেড়ে, দাম কমে এসেছে। যার কারণে আমাদের যেমন কিনতে সুবিধা হচ্ছে। তেমনি মোকামে চাহিদামত পাঠাতে পারছি। ক্রেতারাও কম দামে কাঁচা মরিচ কিনতে পারছে।

কাঁচা মরিচের আরেক আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। সম্প্রতি দুই-তিন দিন ভারতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়ায় দেশটির কৃষকরা ওই সময়ে ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলতে পারেনি। যার কারণে ভারতের মোকামে কাঁচামরিচের সরবরাহ কমে আসে। ফলে বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচের আমদানি অনেকটা কমে যায় এবং দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। এতে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। তবে বর্তমানে আবহাওয়া কিছুটা ভালো হওয়ায় ভারতের কৃষকরা আবার ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলতে শুরু করেছে। যার কারণে ভারতের বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ বেড়েছে, তেমনি দাম কমেছে। সেই সঙ্গে বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচের আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। শুধু হিলি স্থলবন্দর দিয়ে নয়, দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়েই ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। যার কারণে দেশের বাজারে আবারো দাম কমতে শুরু করেছে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসের ছুটির কারণে একদিন বন্ধের পর বুধবার (১৬ আগস্ট) বন্দর দিয়ে দু’দেশের মাঝে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়। গত বুধবার এক দিনেই বন্দর দিয়ে ৯টি ট্রাকে ৬৫ হাজার ৮৫৫ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। কাঁচা মরিচ যেহেতু একটি কাঁচাপণ্য, চলতি মৌসুমে গরমে ও বৃষ্টিতে পচে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সকল প্রক্রিয়া শেষে আমদানিকারকরা যেন বন্দর থেকে কাঁচা মরিচ দ্রত খালাস করে নিতে পারে বন্দর সে জন্যে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

প্রসঙ্গত, দেশে কাঁচা মরিচের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে গত ২৫ জুন কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এর ফলে দীর্ঘ ১০ মাস বন্ধের পর গত ২৬ জুন ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়। হিলি স্থলবন্দরের কয়েকজন আমদানিকারক কয়েক হাজার টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি পেয়েছে।