আনিছুর রহমান
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪০ পিএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৩১ পিএম
নবায়ন ফি জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত দুই মাস বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব কমেছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯টি বা ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে গত আগস্টে। এ মাসে মোট বিও হিসাব বেড়েছে ৩ হাজার ৯৩৬টি। ফলে মাস শেষে বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬১টিতে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, গত আগস্টে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পুরুষদের বিও হিসাব। ওই মাসে ৩ হাজার ২৬টি পুরুষ বিও হিসাব সিডিবিএলে সংযোজিত হয়েছে। আর নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৮১৫ জন। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কর্তৃক রোড শো প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি। আগের দুই মাসের ধারাবাহিকতায় আগস্টেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিও হিসাব কমেছে। তবে সংখ্যাটা খুব কম ১৩টি। গত আগস্টে কোম্পানির বিও হিসাব বেড়েছে ৯৫টি।
আগস্টে সংখ্যার হিসাবে যে পরিমাণ বিও হিসাব বেড়েছে তা বড় কিছু না বলে উল্লেখ করেন এএফসি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী মাহবুব এইচ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু প্রকল্প উদ্বোধন হচ্ছে। এটার একটা ইতিবাচক প্রভাব আছে, যার ফলে নতুন করে অনেকেই পুঁজিবাজারে ঢুকছেন। সেটাই বিও হিসাব বাড়াচ্ছে।’
সিডিবিএলের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগস্ট মাসে ‘বিও উইথ জিরো ব্যালেন্স’-এর সংখ্যা বেড়েছে। জুলাই শেষে এ ধরনের বিও হিসাব ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ১৩৫টি, যা আগস্ট শেষে দাঁড়ায় ২ লাখ ৯৩ হাজার ৭২৪টিতে। অর্থাৎ শূন্য ব্যালেন্সের বিও সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ৫৮৯টি।
আর আগস্ট শেষে শেয়ার কেনা আছে এমন বিও সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৭৪টি, যা জুলাই শেষে ছিল ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৭৯টি। অর্থাৎ এক মাসে শেয়ার আছে এমন বিওর সংখ্যা কমেছে পাঁচটি।
এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সিডিবিএলের তথ্য বলছে, ওই অর্থবছরে বিও হিসাব কমেছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৮টি বা ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এবং শেষ মাস জুনে বিও হিসাব কমলেও বেড়েছে বাকি মাসগুলোতে। সবচেয়ে বেশি কমেছে জুলাই মাসে। ওই মাসে বিও হিসাব কমেছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৮টি। এ ছাড়া অর্থবছরের শেষ মাস চলতি বছরের জুনে বিও হিসাব কমেছে ১১ হাজার ৯১৩টি।
গত বছরের জুলাই পরবর্তী মাসগুলোতে একটু একটু করে বিও হিসাব বেড়েছে। এসব বিনিয়োগকারীর বড় অংশ নতুন করে হিসাব খুলে পুঁজিবাজারে এসেছেন। পরবর্তী মাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিও হিসাব খোলা হয় গত আগস্টে। ওই মাসে নতুন করে বিও হিসাব খোলা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৭টি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ৩৩৬, অক্টোবরে ৪ হাজার ৬৮২, নভেম্বরে ৪ হাজার ৯৫৪, ডিসেম্বরে ২ হাজার ৯৮৮, জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৩৭১, ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ২৩৩, মার্চে ২ হাজার ৭০০, এপ্রিলে ১৮৯ এবং মে মাসে ১ হাজার ৮৯৩টি নতুন বিও হিসাব খোলা হয়।
২০১৬ সালের জুন শেষে বিও হিসাব ছিল ৩১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪২টি, যা ২০২৩ সালের জুলাই শেষে দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ২৫টিতে। অর্থাৎ এই সাত বছরে বিও হিসাব কমেছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৪১৭টি বা ৪৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে শুধু ২০১৮-১৯ অর্থবছর ছাড়া বাকি সব বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী কমেছে।
উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের বার্ষিক বিও নবায়ন ফি হিসেবে দিতে হয় ৪৫০ টাকা। এই টাকার মধ্যে সিডিবিএল পায় ১০০ টাকা, হিসাব পরিচালনাকারী ব্রোকারেজ হাউস পায় ১০০ টাকা, বিএসইসি পায় ৫০ টাকা এবং সরকারি কোষাগারে যায় ২০০ টাকা। জুনের মধ্যে টাকা না দিলে জুলাই মাসে হিসাব বন্ধ বা স্থগিত করে দেয় সিডিবিএল।