× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যক্তিগত লেনদেন বেড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:১৪ পিএম

আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:২০ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

আজকাল ব্যক্তিগত লেনদেনেও মোবাইলনির্ভরতা বাড়ছে। পণ্য কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, অফিসের বেতন দেওয়ার পাশাপাশি ঈদ সালামি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে অর্থ পাঠানোর মতো সেবা যুক্ত করা হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ। এ ছাড়া নগদ টাকার ঝক্কি এড়াতেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ফলে গত সেপ্টেম্বরে এক ব্যক্তির হিসাব থেকে অন্য ব্যক্তির হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৩০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছিল ২৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৫ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গড়ে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।

গত সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ঢুকেছে (ক্যাশ ইন) ৩৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা, আর উত্তোলন হয়েছে ২৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ৫২০ কোটি টাকা।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন পরিষেবার ৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

ব্যাংকাররা জানান, হিসাব খুলতে কোনো টাকা লাগে না। শহর কিংবা গ্রামে নিমেষেই পাঠানো যায় অর্থ। কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, ঋণ গ্রহণসহ যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নানা পরিষেবা। বিদেশ থেকে সহজে আসছে রেমিট্যান্স। দ্রুত লেনদেনে গতিশীল হয়েছে দেশের অর্থনীতি। এসব সুবিধার কারণে এমএফএস সেবার ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা।

বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৫০ লাখ ৪১ হাজার ৭৪৬ জন। অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছেন। লেনদেনের সুবিধার্থে তারা একাধিক সিমে হিসাব খুলছেন। তাই দেশের জনসংখ্যার চেয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাবের সংখ্যা বেশি।

নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ৪২ লাখ ৯১ হাজার ৭ ও নারী ৯ কোটি ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭১৫ জন। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬টি।

বর্তমানে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজে ঝামেলা ছাড়াই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। 

জানা যায়, ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরই রয়েছে নগদ।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাক খাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন। ফলে দিন দিন নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ব‌লেন, এখন মোবাইল আর্থিক সেবার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে। এর সঙ্গে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, সৃজনশীল ও সময়োপযোগী নানা সেবা পরিষেবা যুক্ত হচ্ছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সেবার বিল ও সুরক্ষা ভাতা, উপবৃত্তি ও প্রণোদনা বিতরণে এখন মোবাইলে পরিশোধ করছে। রেমিট্যান্স আসছে কর্মীদের বেতন বোনাস দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ ক্যাশলেস লেনদেন অভ্যস্ত হচ্ছেন। এসব কারণে এমএফএস সেবায় লেনদেনের সঙ্গে গ্রাহকসংখ্যা বাড়ছে। ভবিষ্যতে লেনদেন আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত সুবিধার পাশাপাশি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে মোবইলভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে। এটা বন্ধ করার জন্য কাজ করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। অনলাইন জুয়া, বৈদেশিক মুদ্রার অবৈধ লেনদেন এবং হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়ার পর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ২১ হাজার ৭২৫টি মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএস অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধে গঠিত সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা