× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঋণখেলাপি প্রার্থীদের তথ্য চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৩৭ পিএম

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১০ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ব্যাংকঋণের হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কারণ আইন অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি গ্রাহকের পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। তাই দেশে কার্যরত সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে এই প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। 

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ১২ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে, কোনো ঋণখেলাপি ব্যক্তি জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্য হন না। ফলে খেলাপি হলে কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। আগে নিয়ম ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাত দিন আগে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে নিয়মিত করতে হবে। ব্যাংকঋণ পরিশোধসংক্রান্ত বিধান ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে সংশোধন করা হয়। আর বিলখেলাপি–সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে। নতুন আইনে মনোনয়নপত্র জমার এক দিন আগে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করলেই নির্বাচনে অংশ নেওয়া যায়।

নানা ধরনের ছাড় দেওয়ার কারণে ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া সহজ হয়ে গেছে। এখন আর ভোটে দাঁড়াতে আগের মতো ১০ শতাংশ নগদ অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে হচ্ছে না। এর চেয়ে অনেক কম অর্থ জমা দিলেই হয়। তা ছাড়া আগের মতো ঋণ পুনঃতফসিলের প্রস্তাবও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর দরকার পড়ে না। ফলে ব্যাংকগুলো যে যার মতো করে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে দিচ্ছে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঋণখেলাপিদের আরও ছাড় দিতে চেয়েছিল। ঋণখেলাপিদের জন্য নির্বাচনের পথ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরো (সিআইবি) ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চেয়েছিল ইসি। তারা চেয়েছিল খেলাপি ঋণ আদায়ে কেবল মামলা থাকলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। এজন্য সিআইবির ছাড়পত্র লাগবে না। তাই গত বছরের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ইসি বৈঠক করে। কিন্তু ব্যাংকগুলো তাতে সম্মতি দেয়নি।  

২০১৮ সালে ব্যাংকঋণ পরিশোধসংক্রান্ত বিধান, আর এ বছর বিলখেলাপি–সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করায় এমন সুযোগ তৈরি হয়েছে। 

করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছরের বেশি সময় ঋণ পরিশোধে ছাড় দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন ঋণ শোধ বা কিস্তি না দিলেও কেউ খেলাপি হননি। এরপর গত বছরের জুলাইয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের নীতিমালা সংশোধন করে ছাড় দেওয়া হয়। যার ফলে এখন ব্যাংক নিজেই খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে পারছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন জমা দিতে হচ্ছে বকেয়ার আড়াই থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রবিবার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন কমিশন।

সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ঋণখেলাপি কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ত পরিচালক বা অংশীদার বা ব্যক্তি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলে তথ্য-প্রমাণসহ প্রত্যেক রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। যাচাই-বাছাইকালে তথ্য-প্রমাণসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ‘ব্যাংক/বিশেষায়িত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শাখা ব্যবস্থাপক/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র দাখিলের পরপরই রিটার্নিং অফিসারের নিকট হইতে প্রার্থীদের (পিতা /মাতা /স্বামীর নাম ও ঠিকানসহ) তালিকা সংগ্রহ করিবেন এবং প্রার্থীদের ঋণখেলাপি সম্পর্কিত তথ্য প্রধান কার্যালয়ে জানাবেন।’

খেলাপিদের তালিকা হালনাগাদ করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে নির্দেশনা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘শাখা ব্যবস্থাপক/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অথবা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত প্রার্থীদের তালিকার সহিত শাখাসমূহে হালনাগাদকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার তালিকা মিলাইয়া দেখিবেন এবং তাহার শাখাভুক্ত কোনো ঋণখেলাপি প্রার্থী হইয়াছেন কি না উহা নিশ্চিত হইবেন।

মনোনয়নপত্র দাখিলের পরপরই রিটার্নিং অফিসারের নিকট হইতে প্রার্থীদের (পিতা/মাতা/স্বামীর নাম ও ঠিকানাসহ) তালিকা সংগ্রহ করে প্রধান কার্যালয়ে বিশেষভাবে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কোনো খেলাপি মনোনয়নপত্র জমা দিলে তা দ্রুত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নিকট পাঠাতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/বিশেষায়িত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শাখা ব্যবস্থাপক/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ঋণখেলাপির তথ্য ও কাগজপত্রসহ উপস্থিত থাকতে বলা হয়।  খেলাপিসংক্রান্ত সকল তথ্যের দায় সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের কর্মকর্তাকে বহন করতে হবে। তথ্য ভুল বা তথ্য উপস্থাপনে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন থেকে বাছাই সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ছুটির দিনেও রিটার্নিং অফিসার বা নিজ দপ্তরে উপস্থিত থেকে সহায়তা করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, খেলাপির হার ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা