× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:১১ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দেশের বর্তমান অর্থনীতির সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ। নানা উদ্যেগের পরও এটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছেনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।

সোমাবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। 

এই খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। যদিও আন্তর্জাতিক মানদন্ডে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ শতাংশ পর্যন্ত সহনীয় ধরা হয়।

হিসাব থেকে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমান ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কমে গেছে। তবে এটা হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণ করতে অবলোপন ও পুনঃতফসিলের মতো নানা কৌশল কাজে লাগানোর কারণে। 

তথ্য অনুযায়ী, আগের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রান্তিকের চেয়ে ৯ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা কমেছে খেলাপির হিসাব। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। যা তখন বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের বড় দুই সমস্যা। ব্যাংক খাতে প্রধান এ সমস্যা মোকাবিলায় ঢালাওভাবে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। বরং পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। খেলাপি নামের সমস্যা দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রহীতা ও দাতার ক্ষেত্রে একইভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগেরও পরামর্শ তাদের।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক গতবছরের শেষ দিক থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ শুরু করেছে। এতে খেলাপি কিছুটা কমেছে। আমরা নতুন করে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এসব কার্যকর করা গেলে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি আরও অনেক কমে আসবে। এছাড়া ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। আশাকরি ব্যাংক খাতে বড় ধরণের পরিবর্তন আসবে।’

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, ‘খেলাপি ঋণ কমাতে তেমন সফলতা আসছে না। যেটুকু কম দেখানো হয়েছে তা আদায় হয়নি। পুনঃতফসিল বা অবলোপন কিংবা সুদ মওকুফের কারণে এসব ঋণ কমেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকের শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২৩ সালের জুন প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২২ সালের জুন প্রান্তিকে দেশের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছিলো খেলাপি ঋণ।

এরপর সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। যা তখন বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সবশেষ ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আরও কিছুটা কমে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় নেমেছে। এই খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। সে হিসাবে ছয় মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা কমেছে। অবলোপনের মাধ্যমে হিসাবের খাতা থেকে মুছে ফেলা ও পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়মিত দেখানোর মাধ্যমে এটি কমানো হয়েছে। 

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। তবে ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অপরদিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।  

আইএমএফের শর্তমতে, পুনঃতফশিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটির হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। আর ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ এখন প্রায় চার লাখ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা