× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রমজানে বাড়বে না নিত্যপণ্যের দাম : এফবিসিসিআই

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:০৪ পিএম

আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:১৪ পিএম

রমজানে বাড়বে না নিত্যপণ্যের দাম : এফবিসিসিআই

আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে যারা আইনবহির্ভূত দাম বাড়াবে, সিন্ডিকেট করে সংকট তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে নিজেরাই ব্যবস্থা নেবেন বলে তারা জানিয়েছেন। তাছাড়া চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে হটলাইন চালুর আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। 

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে নিজস্ব কার্যালয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এফবিসিসিআই। সূচনা বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা সারা বছরই ব্যবসা করে থাকে। রমজান মাস ইবাদতের মাস। আমরা এ মাসে ইবাদতের জন্য ব্যবসা করব। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উৎসবে পণ্য বিক্রিতে ২০ থেকে ২৫ ভাগ ছাড় দেওয়া হয়, অথচ আমাদের দেশে উল্টো দাম বাড়ে। আমরা লাভের জন্য ব্যবসা করি। তবে সেটি হতে হবে ন্যায্য পর্যায়ে। রমজানে কম লাভ করে বেশি বিক্রি করতে হবে। তা ছাড়া দেশের ৯৯ শতাংশ ব্যবসায়ী সৎ। মাত্র এক শতাংশ ব্যবসায়ী অসৎ। সেই সব অসৎ ব্যবসায়ীর দায়ভার এফবিসিসিআই নেবে না। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য কমাতে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। আশা করি এর সুফণ পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, পণ্য সরবরাহের ঘাটতির কারণে সমস্যা তৈরি হয়। কেউ যেন কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রত্যেক চেম্বারকে তদারক করতে হবে। মানুষের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দিতে হবে। সারা বছর যে পাঞ্জাবি ৮০০ টাকায় বিক্রি হয় তা যেন ৫ হাজার টাকা না হয়ে যায়। মিল থেকে পণ্য যাওয়ার সময় দাম লিখে দিতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পুলিশ দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে প্রস্তুত নয়। এ দায়িত্ব বাজার কমিটিকে নিতে হবে। সমিতির সদস্যদের নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করবে। সভাপতি বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধে এফবিসিসিআই হটলাইন চালু করবে। চাঁদাবাজদের তালিকা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে তা জানানো হবে।

রমজানে পেঁয়াজে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আছে তা দিয়ে রমজান মাস ভালোভাবে চালানো যাবে। কাঁচামাল মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ এমরান মাস্টার বলেন, রমজানে বেগুনের চাহিদা ১০০ গুণ বেড়ে যায়। কেউ যেন একসঙ্গে বেশি পরিমাণ বেগুন না কেনেন সে চিন্তা থাকতে হবে। তা ছাড়া নৈতিকতা না থাকলে সেমিনার করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কাঁচামাল পচনশীল হওয়ায় তা মজুদ করা যায় না। প্রথম সপ্তাহে বেগুনের দাম বাড়তে পারে। তবে আলু ও কাঁচামরিচের দাম বাড়বে না। সরবরাহ ঠিক রাখতে রমজানের ৪ মাস আগে প্রণোদনা দিয়ে সরকারিভাবে চাষাবাদের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

গরুর মাংস আমদানির অনুমতি চেয়ে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়ে গেছে। এবার রমজানে ব্রয়লার মুরগি নিয়ে যেন কোনো তেলেসমাতি না হয় সেদিকে খামারিদের নজর দিতে হবে। মশলা, গরুর মাংসের দাম বাড়ছেও। কিছু লোকের কারণে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গরুর মাংস আমদানির অনুমতি দিচ্ছে না। এতে দাম হুহু করে বাড়ছে। আমরা এফবিসিসিআইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে গরুর মাংসের আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। সেজন্য সরকারের সাথে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তিনি। 

বাজারে অবশ্যই সিন্ডিকেট আছে উল্লেখ করে ঠাটারি ও কাপ্তান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি মোমেন খান ময়না বলেন, সাংবাদিকরা বাজারে দাম জিজ্ঞেস করলে দোকানদাররা মুখ খোলেন না। নতুন মাল আসলে কিছু লোক দাম নির্ধারণ করে দেয়—এটিই এক ধরনের সিন্ডিকেট। তাছাড়া মূল্যতালিকা দেওয়া থাকে না, দেওয়া হয় না ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদও। এতে খুচরা ব্যবসায়ীদের বিপদে পড়তে হয়ে। তিনি বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকা, আদা ১৮০ টাকা, দেশি আদা ১৭০ টাকা, ছোলা ৯৮-১০০ টাকা, বেগুন ৮৫-১২০ টাকা, ডাবরি ও এংকর  ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১১৫ টাকা, বেসন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। 

রমজানে ডিমের চাহিদা কমে যায় জানিয়ে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ বলেন, রমজান মাসে ডিমের চাহিদা অনেক কমে যায়। এজন্য এ মাসে ডিম কোল্ড স্টোরেজে রাখার অনুমতি দিতে হবে। কেননা রমজানের পর দাম বেড়ে যায়। এতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, রমজানে খেজুরের দাম সহনীয় রাখতে কাস্টমস এবং এনবিআরের সহযোগিতা দরকার। গত ৩৫ বছর যাবত খেজুরে শুল্ক ছিল না। চলতি বাজেটে খেজুর আমদানিতে শুল্ক ধরা হয়েছে। অথচ গত ৫ মাস যাবত আমরা খেজুরের শুল্ক কমাতে দাবি জানালাম। এনবিআর কোনো কথা শুনল না। তারা মাত্র ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এলসি পাচ্ছি না। বাংলাদেশ ব্যাংক ১১০ টাকা করে ডলার দিতে বললেও ব্যাংক থেকে কিনতে হচ্ছে ১১৭ টাকায়। ১১০ টাকা কেজি খেজুর কিনে ডিউটি দিতে হচ্ছে ১৪০ টাকা। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা আছে, জবাবদিহিতা আছে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের তা নেই। প্রধানমন্ত্রী ডিউটি কমাতে বলেছেন, চিনিতে কেজিতে ৫০ পয়সা ও খেজুরে ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। এই কমানো দিয়ে কী হবে?

দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান বলেন, সরকারি রেটের চেয়ে কম দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।  চিনির ক্ষেত্রে ট্যাক্স নিয়ে হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। ভারতে ৪০ টাকা কেজি চিনির, আমাদের দেশে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে হয়। সিটি গ্রুপের করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, দেশে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক আছে। রমজানে দাম বাড়বে না। মেঘনা গ্রুপের ডেপুটি অ্যাডভাইজার সফিউর রহমান বলেন, চিনিসহ অন্যান্য পণ্য যথেষ্ট পরিমাণে আছে। যদি সরবরাহ সঠিকভাবে করা যায় তাহলে রমজান মাসে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি তানজিদ সানজিদা বলেন, রমজানে সরবরাহ ঠিক রাখতে ৮টি পণ্যের আমদানি জিরো মার্জিনে করা হয়েছে। এ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে প্রত্যেককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিন হেলালী বলেন, আমরা নিজেরাই নিজেদের তদারকি করব। কেউ অযথা সংকট সৃষ্টি করলে চেম্বার ব্যবস্থা নেবে, শাস্তির আওতায় আনবে। এ বছরের রমজান মাস ভালোভাবে অতিবাহিত করতে সকলের সহযোগিতা চান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা