প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৪২ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ১২:১৫ পিএম
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার তেল, ডাল ও গম কিনবে সরকার। এর মধ্যে ১৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল, ৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকার মসুর ডাল এবং ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার গম কেনা হবে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই তেল, ডাল ও গম কেনার অনুমোদন দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
তিনি জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান এমএস এগ্রো কট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই গম কিনতে মোট ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন গমের মূল্য পড়বে ৩০৩ দশমিক ১৬ ডলার। আগের ক্রয়মূল্য ছিল ৩১৫ দশমিক ২৯ ডলার।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ২৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকার মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজশাহীর নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড থেকে এই মসুর ডাল কিনতে মোট খরচ হবে ৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরও এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে স্থানীয় উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোন দেওয়া হয়েছে। সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে এই তেল কিনতে মোট ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আর প্রতি লিটারের জন্য খরচ হবে ১৫৮ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের ক্রয়মূল্য ছিল ১৬৫ টাকা ২৫ পয়সা।
৪৩৯ কোটি টাকার সার কিনছে সরকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার ইউরিয়া, ডিএপি সার ও ফসফরিক অ্যাসিড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ২৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ডিএপি সার, ১২২ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার ইউরিয়া সার এবং ৬২ কোটি ৯২ লাখ টাকার ফসফরিক অ্যাসিড রয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় জিটুজি পদ্ধতিতে সৌদি আরবের মা আদেন থেকে দ্বিতীয় লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৫৭৬ মার্কিন ডলার, যা আগে ছিল ৫৮৯ মার্কিন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১২২ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৩৭১.৩৭৫ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩১৬. ৬২৫ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৫৭২ মার্কিন ডলার, যা আগে ছিল ৫৮২ ডলার।
কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য ১৫০ কোটি টাকার ওষুধ কিনছে সরকার: দেশের ১৪ হাজার ২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড থেকে ১৫০ কোটি টাকার ওষুধ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে এসব ওষুধ। দেশের ১৪ হাজার ২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের জন্য কমিউনিটি বেইজড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যানের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিওবি (উন্নয়ন) খাতের আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ওষুধ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৯২ টাকা। এর আগে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দুটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে মশক নিধন কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কীটনাশক আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।