× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সবুজ বিল্ডিং শুধু পরিবেশবান্ধব‌ই নয়, অর্থ ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী

জোনায়েদ মানসুর

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪ ২২:০৯ পিএম

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৪ ২২:১২ পিএম

 ৩৬০ টোটাল সলিউশনের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত আহমেদ। প্রবা ফটো

৩৬০ টোটাল সলিউশনের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত আহমেদ। প্রবা ফটো

সবুজ প্রকল্পের অর্থায়ন একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তবে এটি নতুন প্রকল্প প্রতিষ্ঠা ও কোম্পানির বৃদ্ধির দিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সবুজ বিল্ডিং শুধু পরিবেশবান্ধব‌ই নয়, অর্থ ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। দেশের সবুজ অর্থনীতির সহযোগী হয়ে কাজ করছে ৩৬০ টোটাল সলিউশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি গ্রিন বিল্ডিং কনসালট্যান্সি হিসেবে বর্তমানে ৩৫৫ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এমনটি জানিয়েছেন ৩৬০ টোটাল সলিউশনের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত আহমেদ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জোনায়েদ মানসুর

প্রবা : যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) মূলত কী?

অনন্ত আহমেদ : বিশ্বের যে কয়টি প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব (গ্রিন ফ্যাক্টরি) স্থাপনার সনদ দেয়, তাদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলÑইউএসজিবিসি। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএসজিবিসি। তারা লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি) সনদ দেয়। লিড কেবল একটি সনদপত্র নয়, এটি সবচেয়ে কার্যকর ব্যবসা পরিচালনা ব্যবস্থাও। সাধারণত অন্যান্য স্থাপনার চেয়ে পরিবেশবান্ধব স্থাপনায় ১-২ শতাংশ খরচ বেশি হতে পারে। তবে বাড়তি খরচ করলেও দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া যায়। এখানে বলে রাখা দরকার যে, লিড বিল্ডিং করতে কখনও কখনও ২ থেকে ৫ শতাংশ খরচ কমেও যায়, যদি কাজটি আমরা ঠিকমতো করি। মোট ব্যয় সাশ্রয় ছাড়াও প্রকল্পটি এনার্জি ও পানি ব্যবহারে কার্যকর পরিচালন ব্যয় সাশ্রয়ে কাজ করে। মোট ১১০ নম্বরের মধ্যে কোনো কারখানা ৮০–এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ এবং ৪০-৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়। ইউএসজিবিসিতে নিবন্ধিত বাংলাদেশের প্রায় ৭৫০ কারখানা ভবন পরিবেশবান্ধব। এগুলোর মধ্যে ৪৫০টি তৈরি পোশাক কারখানার বাইরে। 

প্রবা : ইউএসজিবিসির সনদ পাওয়ার কী কী শর্ত রয়েছে?

অনন্ত আহমেদ : ইউএসজিবিসির সনদ পাওয়ার জন্য নয়টি শর্ত পরিপালন করতে হয়। তার মধ্যে আছে এমন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করতে হয়, যাতে কার্বন নিঃসরণ কম হয়। এজন্য পুনরুৎপাদনের মাধ্যমে তৈরি ইট, সিমেন্ট ও ইস্পাত লাগে। বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সূর্যের আলো, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি ও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয়। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি পানিসাশ্রয়ী কল ও ব্যবহৃত পানি প্রক্রিয়াজাত করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করতে হয়। এ ছাড়া স্থাপনায় পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে পরিবেশবান্ধব স্থাপনায় ২৪-৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ, ৩৩-৩৯ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ এবং ৪০ শতাংশ পানি ব্যবহার কমানো সম্ভব। 

প্রবা : দেশে লিড সার্টিফায়েড সনদধারী পোশাক কারখানার সংখ্যা কত?

অনন্ত আহমেদ : বাংলাদেশের প্রথম লিড সার্টিফায়েড প্রকল্প হচ্ছে ‘সি আই পি এল’ একটি বিল্ডিং যা ৯ মে ২০১১ সালে সনদপ্রাপ্ত হয়। এটি ছিল একটি পুরোনো বিল্ডিং। বিজিএমইএর তথ্য বলছে, দেশে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা হলো ২১৩টি। এর মধ্যে ৮০টিই লিড প্লাটিনাম সনদধারী। এ ছাড়া ১১৯টি গোল্ড, ১০টি সিলভার এবং চারটি কারখানা সার্টিফায়েড সনদ পেয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৯টিই বাংলাদেশে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি লাভ করেছে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর এসএম সোর্সিং। ১১০ নম্বরের মধ্যে কারখানাটি ১০৬ পেয়েছে। এটি আমাদের সমন্বয় করা প্রতিষ্ঠান।

প্রবা : ৩৬০ টোটাল সলিউশনের পরিষেবাগুলো যদি বলতেন?

অনন্ত আহমেদ : আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে লিড সনদপ্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা। আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াই পরামর্শক হিসেবে সঙ্গে থাকি। এ ছাড়াও রয়েছে নতুন প্রকল্পে অর্থায়ন। প্রকল্পের পোর্টফোলিও ও প্রস্তাবনা। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টেকসই (সবুজ) পুনঃঅর্থায়ন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ)। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জিটিএফের জন্য এনার্জি অডিট পরিষেবা। ইউএসজিবিসি (লিড) গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন। সাপোর্ট সফটওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, এসওপিসহ সম্পূর্ণ আর্থিক সেটআপ। এ ছাড়া ৩৬০ টিএসএল ফিন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্সি সার্ভিসের ফিন্যান্স প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে প্রজেক্ট অ্যাসেসমেন্ট, ফিন্যান্সিং, কোলাবোরেশন ও কনসালট্যান্সি সাপোর্ট।

প্রবা : ৩৬০ টোটাল সলিউশনের সেবাগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান কারা?

অনন্ত আহমেদ : ৩৬০ টিসিএল বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেকসই উন্নয়ন পরামর্শদাতা কোম্পানি, দেশের শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের, নেতৃস্থানীয় আরএমজি, জুতা শিল্প, অর্থনৈতিক অঞ্চল, নির্মাণ শিল্প এবং অন্যান্য বিভিন্ন কোম্পানিকে সেবা দেয়। ৩৬০ টিসিএল দ্বারা প্রদত্ত পরিষেবাগুলো গ্রিন বিল্ডিংয়ের জন্য বিভিন্ন ডিজাইন ও অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তাকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং বিল্ডিংয়ের জীবন-চক্রজুড়ে উচ্চ পারফরম্যান্স অপারেশন নিশ্চিত করে। ৩৬০ টিসিএল এখন ৩৫১টি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ওয়ালটন, আকিজ, ডিবিএল, ইস্পাহানি, হামস, ইউনিফিল, ক্রোনি, মাসকো অন্যতম। 

প্রবা : আপনাদের প্রতিষ্ঠানের গ্রিন বিল্ডিং ওয়ার্কশপ বিষয়ে কিছু বলুন?

অনন্ত আহমেদ : ৩৬০ টিসিএল সফলভাবে সংগঠিত এবং ২৮ দিনব্যাপী গ্রিন বিল্ডিং ওয়ার্কশপ সম্পন্ন করেছে ২ হাজার ৯৪০ জন প্রশিক্ষিত এবং ১১টি দুই দিনব্যাপী এলইইডি জিএ পরীক্ষার প্রস্তুতি কর্মশালা এবং প্রশিক্ষিত ১৯৫-এর বেশি পেশাদারদের সাথে।

প্রবা : আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে উল্লেখযোগ্য লিড সনদধারী সম্পর্কে যদি কিছু বলেন।

অনন্ত আহমেদ : আমাদের সমন্বয়ে লিড প্লাটিনাম পেয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্কোরধারী প্রতিষ্ঠান এসএম সোর্সিং। পৃথিবীর চতুর্থতম গ্রিন প্রকল্প নিট এশিয়া লিমিটেড ও আমরা সম্পন্ন করেছি, যা ৯৯ পয়েন্ট পেয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ৪৫টি প্রকল্প সম্পন্ন করেছি, যার মধ্যে ২৮টি প্লাটিনাম এবং ১৭টি গোল্ড প্রকল্প রয়েছে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা