× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চট্টগ্রামে ঈদ বাজার

বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা, শেষ সপ্তাহের আশায় ব্যবসায়ীরা

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৮ পিএম

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৫ এএম

ঈদকে সামনে রেখে মার্কেটগুলোতে ভিড় করেছে ক্রেতারা। বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে তোলা। প্রবা ফটো

ঈদকে সামনে রেখে মার্কেটগুলোতে ভিড় করেছে ক্রেতারা। বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে তোলা। প্রবা ফটো

রিয়াজউদ্দিন বাজারের আমতল বাহার লেইনের জুমুর শাড়ি মেলায় গিয়ে দেখা  গেছে, দোকানটিতে কোনো ক্রেতা নেই। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর পাঁচ মিনিটের মাথায় ওই দোকানে আসেন এক নারী ক্রেতা। তার ঠিক পরপরই আসেন আরেক নারী। দুজন ক্রেতাই বেশ কয়েকটি শাড়ি দেখেন কিন্তু দর কষাকষিতে মিল না হওয়ায় কেউ কোনো শাড়ি কেনেননি। শাড়ি না কিনেই তারা দোকান ছেড়েছেন। বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

রমজানে বেচাকেনা কেমন প্রশ্ন করতেই উপরের এই দৃশ্যটির কথা তুলে ধরেন দোকানটির বিক্রয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহ আলম। 

তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আপনি তো দেখলেন। বাজারে ক্রেতার আনাগোনা বাড়ছে ঠিকই কিন্তু বেচাকেনা খুব একটা নেই। গত রমজানের এই সময়ে যে বেচাকেনা ছিল, তার চেয়ে এখন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেচাকেনা কম হচ্ছে।’

রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে বেচাকেনা ভালো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লোকজন গত মাসের বেতন রমজানের সপ্তাহখানেক আগে পেয়েছেন। তাই ওই সময় অনেকে ঈদের কেনাকাটা করেছেন। তাই তখন বেচাকেনা একটু ভালো ছিল। এরপর রমজান শুরু পর এখন বেচাকেনা একটু কম। তবে ধীরে ধীরে বাড়ছে। আশা করছি, চলতি মাসের বেতন পাওয়ার পর রমজানের শেষ সপ্তাহে ঈদের বেচাকেনা পুরোদমে জমে উঠবে।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন আর নিউমার্কেট এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে সড়কে বামপাশে রিয়াজউদ্দিন বাজারের অবস্থান। সুঁই, সূতা থেকে শুরু করে মানুষের ব্যবহারের কোনো জিনিস নেই, যা পাওয়া যায় না এই রিয়াজউদ্দিন বাজারে। খাবার, পোশাক, কসমেটিক, ইলেকট্রনিক্সসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দেশি-বিদেশি দরকারি সবই পাওয়া যাচ্ছে এখানে। তাই আলো ঝলমলে শপিং কমপ্লেক্স, সুপার মার্কেট, শপিং মলের রমরমার মধ্যেও সাশ্রয়ী মূল্যে কেনাকাটার জন্য চট্টগ্রামের মানুষের ভরসা রিয়াজউদ্দীন বাজার। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতার আনাগোনা বাড়ছে। বড় বড় দোকানগুলোর তুলনায় ছোট ছোট দোকানগুলোইতে ক্রেতার বেশি ভিড় দেখা গেছে। তুলনামূলক কম দামে ভালো পোশাক কিনতে ক্রেতারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুঁটছেন। কেউ যাচ্ছেন, জুতার দোকানে, কেউ শাড়ির দোকানে, আবার কেউ ভিড় করছেন পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্টের দোকানে। এবার রিয়াজউদ্দিন বাজারের বিভিন্ন দোকানে সর্বনিম্ন ২০০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকার গ্রাউন পাওয়া যাচ্ছে। একই দামে অরগেঞ্জা থ্রি পিস, লেহেঙ্গা আফগান কাট এবং আলিয়া কার্টিংয়ের জামাও পাওয়া যাচ্ছে। 

রিয়াজউদ্দিন বাজারের ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক মার্কেটের ১০ হাজারের অধিক দোকান রয়েছে। নিউ সুপার মার্কেট, হাজী আব্দুল লতিফ মার্কেট, হাসিনা শপিং, বিনিময় টাওয়ার, রহমান ম্যানশন, প্যারামাউন্ট সিটি, সালেহ ম্যানশনসহ সবগুলো মার্কেটেই রমজানের ঈদকে ঘিরে বেচাকেনা বেড়েছে। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী বেচাকেনা এখনও হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দোকানদারা। 

তারা জানিয়েছেন, সকাল ১০টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত দোকানগুলো খোলা রাখা হয়। তবে বেচাকেনা শুরু হয় দুপুরের পর থেকে। এরপর রাত ১২টা পর্যন্ত দোকানে ক্রেতার আনাগোনা বাড়তে থাকে। আগের তুলনায় বেচাকেনা কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটি আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় কম। বেচাকেনা কম থাকায় বিক্রেতারাও সীমিত লাভে পোশাক বিক্রি করছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত রমজানের তুলনায় এবার পোশাকের দাম কিছুটা বেশি। 

ফটিছড়িতে ৮ বছর বয়সি মেয়ের জন্য লেহেঙ্গ কিনতে এসেছেন দিনমজুর বাবা ইসমাইল। তামাকুমন্ডি লেইনের হাজী আব্দুল লতিফ মার্কেটের আলনুর ফ্যাশনের সামনে কথা হয় তার সঙ্গে। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, মেয়ে আবদার করেছে লেহেঙ্গা কিনে দিতে। তাই কম দামে কিনতে পারব সেই আশায় ফটিকছড়ি থেকে রিয়াজউদ্দিন বাজারে এসেছি। কিন্তু এখানে এসেও দেখছি পোশাকের অনেক দাম। বাজেট ছিল এক হাজার টাকা। এখন ১৫শ’ টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য একটি লেহেঙ্গা কিনেছি।’

পোশাকের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুমন্ডি লেইনের হাজী আব্দুল লতিফ মার্কেটের রং মার্ট দোকানের বিক্রয় প্রতিনিধি রায়হান উদ্দিন জিসান বলেন, ‘পোশাকের দাম খুব একটা বাড়েনি। কাপড় আমদানিতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় কাপড়ের মান ভেদে একটি পোশাকে ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। কারণ এখন সবকিছুর দাম বেশি। পোশাকের দাম বাড়ায় এখন আমাদের বেচাকেনাও কমেছে। আগে এমন সময় পার্টিরা এসে আমাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা পোশাক নিয়ে যেতেন। কিন্তু এবার সেটি কম।’

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন দারুল ফজল মার্কেটের অনিক পাঞ্জাবির বিক্রয় প্রতিনিধি সোলায়মান। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে পাঞ্জাবির দাম গত বছরের মতোই আছে। ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০০ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরও আমরা একই দামে পাঞ্জাবি বিক্রি করেছিলাম। দাম স্বাভাবিক থাকার পরও এবার দোকানে বেচাকেনা কম হচ্ছে। গত রমজানের এমন সময়ে যা বিক্রি হয়েছিল, এবার তার অর্ধেকও বেচাকেনা নেই।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা