× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে অনীহা বেড়েছে ব্যাংকের

রেদওয়ানুল হক

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১০:২৪ এএম

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১১:১০ এএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সামাজিক দায়বদ্ধতা বা করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) খাতে ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ৫টি ব্যাংক এ খাতে একটি টাকাও খরচ করেনি। আর অন্য ব্যাংকগুলোর খরচ এই ৬ মাসে কমেছে ৩৮ শতাংশের ওপরে। ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা থেকে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করার যে নির্দেশনা রয়েছে তাতে ব্যাংক মালিকদের অনীহা প্রকাশ পাচ্ছে এর মধ্য দিয়ে। ক্ষেত্র বিশেষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কিছু অর্থ জমা দিয়ে দায়মুক্ত হচ্ছে অনেক ব্যাংক। আবার বিভিন্ন খাতে তহবিল বণ্টনে অনেকের অনিয়মের কথাও জানা গেছে।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সিএসআরসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে আরও দেখা যায়, নির্ধারিত সব খাতে ব্যয় কমেছে। আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে স্বাস্থ্য, এরপর শিক্ষা এবং পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকসমূহের সিএসআর ব্যয় হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৫৭১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সিএসআর ব্যয় কমেছে ২১৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা; যা শতকরা হিসাবে ৩৮ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। অপরদিকে বার্ষিক হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ১৮ শতাংশ বা ২০৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা কম ব্যয় হয়েছে। এ খাতে ২০২৩ সাল জুড়ে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করেছে ব্যাংকগুলো। ২০২২ সালে এ খাতে ব্যয় ছিল ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট সিএসআর ব্যয়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষা খাতে, স্বাস্থ্য খাতে ৩০ শতাংশ, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রশমন এবং অভিযোজন খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ আয়-উৎসারী কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং অন্যান্য খাতের আওতায় ব্যয় করার নির্দেশনা রয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৬১টি তফসিলি ব্যাংক ২০২৩ সালে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে মোট খরচের ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ২৮৯ কোটি টাকা। শিক্ষা খাতে ব্যয় ১৬৩ কোটি ১০ লাখ বা ১৭.৬৫ শতাংশ, পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে ব্যয় ৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২০২৩ সালে ৫টি ব্যাংক এক টাকাও সিএসআর খাতে ব্যয় করেনি। এগুলো হলোÑ বেসিক ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক।

অন্যদিকে, ২০২২ সালে ৯টি ব্যাংক নিট মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। সেগুলো হলোÑ বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। তবে এ ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৫টি নিট মুনাফা অর্জন না করা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে সিএসআরে ব্যয় করেছে। 

২০১৩ সালের পর লাইসেন্স পাওয়া ১৩টি ব্যাংকের ক্ষেত্রে আগের বছরের নিট মুনাফার অন্তত ১০ শতাংশ পরবর্তী বছরে সিএসআর খাতে ব্যয়ের শর্ত রয়েছে। কোনো ব্যাংক নিট মুনাফা করতে না পারলে তারা সিএসআরে ব্যয় করতে পারবে না। নতুন ব্যাংকের বাইরে অন্য ব্যাংক সিএসআরে খরচ করবে কি না, সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের ৬টি ব্যাংক (সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতী ব্যাংক লিমিটেড, সীমান্ত ব্যাংক পিএলসি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি) আলোচিত সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে এবারও সবচেয়ে বেশি সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ইসলামী ব্যাংক। ২০২৩ সালে তারা এ খাতে ব্যয় করেছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। যমুনা ব্যাংক ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে মার্কেন্টাইল ৫৫ কোটি ৯২ লাখ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৫৩ কোটি ৬২ লাখ, আল-আরাফাহ ৫১ কোটি ৩২ লাখ, এক্সিম ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ, সাউথইস্ট ৩৯ কোটি ৬৯ লাখ, ইউসিবি ৩৮ কোটি ৪০ লাখ এবং ব্যাংক এশিয়া ৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো নিট মুনাফার একটি অংশ ছাড়াও সন্দেহজনক আয়, জাকাতসহ অন্যান্য তহবিল সিএসআর খাতে ব্যয় করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচ্য সময়ে নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএসআর খাতে ব্যয়ে করেছে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ৩৮ শতাংশ, শিক্ষায় ৩০ শতাংশ এবং পরিবেশ ও জলবায়ুতে ২১ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা