প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:১০ পিএম
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৪৭ পিএম
কারওয়ান বাজারে অবস্থিত টিসিবি ভবনে ৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্বোধন করা হয়। প্রবা ফটো
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পরও অনেক ঝুঁকি নিয়ে দেশটি থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছি। এমনকি অন্য দেশে যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার চেয়েও কম দামে আমদানি করা হয়েছে। এসব পেঁয়াজের মান ভালো। এগুলো ১৫ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।’
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে কারওয়ান বাজারে অবস্থিত টিসিবি ভবনের সামনে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, ‘আমি কথা দিয়েছিলাম, পুলিশ দিয়ে নয়, সরবরাহ তৈরি করে পণ্যের দাম কমাব। এটা এখন প্রমাণিত। আমরা যদি বিকল্প সরবরাহ রাখতে পারি, তাহলে চাইলেও দুই-চারজন বাজার ব্যবস্থাকে নষ্ট করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘এই একই পেঁয়াজ ভারত সরকার আবুধাবিতে ১ হাজার ২০০ ডলারে বিক্রি করছে। আমরা ৪০০ ডলার কমে ৮০০ ডলারে নিয়ে এসেছি। সিনিয়র বাণিজ্য সচিব টিসিবির টিমকে সঙ্গে নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পেঁয়াজ রপ্তানি করায় ভারতকে ধন্যবাদ জানাই। ভারতে একটি নির্বাচন চলছে, কৃষক আন্দোলন হচ্ছে, তাদেরও ভোক্তা আছে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তারা তাদের কমিটমেন্ট রেখেছে। আমাদের কাউন্টার পার্ট হচ্ছে পীযুষ গোয়েল। উনি বলেছেন, রমজানের মধ্যেই আমরা পেঁয়াজ পাব। উনি ওনার কথা রেখেছেন। এজন্য ওনাকে ধন্যবাদ।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক সেই সম্পর্কের কারণেই আমরা পেঁয়াজ পেয়েছি। আমরা এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্টক তৈরি করব। বাজার ব্যবস্থাপনা একটি বিজ্ঞান-অঙ্ক। এটি ছক মতো সাজাতে পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অনেক সময় আমরা চাইলেই পণ্য সরবরাহ করতে পারি না, পাই না।’
তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ একটি পচনশীল পণ্য। এটা আনার ক্ষেত্রে অনেক ঝুঁকি ছিল। ফাইনালি যখন আমরা পেলাম, তখনও আমরা একটু দ্বিধায় ছিলাম। এ পেঁয়াজ এনে রোজা শেষ হওয়ার আগে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে পারব কি না। এই পেঁয়াজ দিল্লি থেকে লোডিং হয়ে দর্শনা হয়ে ট্রাকে আজকে এখানে এসেছে। এটা আনার জন্য অস্বাভাবিক লজিস্টিক প্রয়োজন। টিসিবি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি পেঁয়াজও নষ্ট না হয়ে দেশে এসেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিতে হয়েছে। পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে কমে যাওয়ারও সম্ভাবনা ছিল। আমি পেঁয়াজের মান নিয়ে সন্তুষ্ট। অন্তত এ পেঁয়াজ ১৫ দিন সংরক্ষণ করে বাজারে বিক্রি করা যায়। আমরা এ পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছি। এটি সাধারণ মানুষের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান প্রমুখ।
এদিকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
টিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে, সচিবালয়ের সামনে এবং প্রেস ক্লাবের সামনেসহ ঢাকার ১০৩টি স্থানে, চট্টগ্রামের ৫০টি স্থানে এবং গাজীপুরের ১৫-২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। প্রতিটি ট্রাকে ১০ টন করে পেঁয়াজ থাকবে এবং প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীসহ যে কেউ এ ট্রাক থেকে সর্বোচ্চ আড়াই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।