মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৪১ পিএম
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৫ পিএম
কিশোরগঞ্জে গরিব ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে দুই টাকায় ঈদ বাজার দেওয়া হয়েছে। প্রবা ফটো
বছর ঘুরে আসা ঈদের আনন্দকে ভাগ করে নিতে প্রতি বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জে গরিব ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে দুই টাকার ঈদ বাজারের আয়োজন করা হয়। মাত্র দুই টাকায় ঈদের বাজার করতে পেরে খুশি অসহায় দরিদ্র মানুষরা। ব্যতিক্রমী এই ঈদ বাজারের আয়োজন করেছে কিশোরগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক ফোরাম নামে সামাজিক সংগঠন।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের বিন্নগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী নিরালা হোটেল মালিকের বাসভবনের উঠানে আয়োজিত ওই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য টেবিলে সারি সারি সাজানো আছে পণ্য। মাত্র দুই টাকায় কেনা যাচ্ছে শাড়ি, লুঙ্গি, তেল, সাবান, চিনি, চাল, পোলাও চাল, শ্যাম্পু, লবণ, দুধ ও সেমাই। বাজার থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের অসহায় মানুষ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী নিরালা হোটেল লিমিটেডের অন্যতম পরিচালক জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী এনায়েত করিম অমি তিন বছর ধরে এ ঈদ আনন্দ বাজার পরিচালনা করছেন। এ আয়োজনের সহযোগিতায় রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আব্দুল করিম ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট।
শহরের বত্রিশ এলাকার মেরাজ নাসিম মিয়া বলেন, ঘরে ঈদ আয়োজনের কিছুই ছিল না। ছেলে মেয়ে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। দুই টাকায় ঈদ আনন্দ বাজার থেকে পণ্য কিনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ উদযাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন অমি সাহেব।
গৃহকর্মী জেবিন আক্তার বলেন, দুদিন পরই ঈদ। ঘরে ঈদ করার মতো কিছুই নাই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অমি সাহেব আমাদের ঘরে দুই টাকায় ঈদ আনন্দ উৎসব করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
ভ্যানচালক কামাল মিয়া বলেন, চারটি ছেলে মেয়ে আছে সংসারে। ভ্যান চালিয়ে খাই। সবকয়টি বাচ্চাকে প্রতি ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে পারি না। সেখানে স্ত্রী এবং নিজের জন্য কিছু কেনা তো একদমই অসম্ভব। বাজারে ভ্যান চালাচ্ছিলাম। শুনলাম এখানে দুই টাকায় বিভিন্ন পোশাক পাওয়া যায়। পড়ার মত ভালো একটা লুঙ্গি আছে। ভ্যান তালা মেরে আসলাম, দুই টাকায় ঈদ আনন্দ উৎসব করার জন্য । এতে আমি খুব উপকৃত হলাম।
মানবিক ঈদ আনন্দ বাজারের আয়োজক এনায়েত করিম অমি বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সহযোগিতায় পঞ্চমবারের মতো এবারও দরিদ্র ও শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর লোকজনের মুখে হাসি ফোটাতে এ আয়োজন। সমাজের বিত্তশালী ও হৃদয়বান লোকজনের সামর্থ্যনুযায়ী বেকার ও অসহায় লোকজনের পাশে দাঁড়ানো উচিত।